v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2007-06-21 15:20:33    
চীনে এক বিলিয়ন টনেরও বেশি মজুদের তেল ফিল্ড আবিশ্কারিত হয়

cri

    বন্ধুরা, চীনের তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাস গোষ্ঠী সম্প্রতি ঘোষণা করেছে যে, উত্তর চীনের হোবেই প্রদেশের বোহাই উপসাগরের থানহাই অঞ্চলে ১ বিলিয়ন ২কোটি টনেরও বেশি মজুদ একটি তেল ফিল্ড চিতংনানফু তেলক্ষেত্র আবিশ্কারিত হয়। নতুন তেল ফিল্ড চীন ও বিশ্বের ফোকার পরিণত হয়। এবারের অনুষ্ঠানে আমি আপনাদের কাছে এ সম্বন্ধে কিছু বলবো।

    বোহাই উপসাগর হল চীনের তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাস সবচেয়ে সমৃদ্ধ এক অঞ্চল। নতুন আবিশ্কারিত নানফু তেলক্ষেত্রে তেলের মজুত বেশি এবং তেলের গুনমান ভাল। এটি হল একটি উত্কৃষ্ট গুনমান এবং সমৃদ্ধ মুজতের এক তেলক্ষেত্র। এটি হল ৩০ বছর ধরে চীনে আবিশ্কারিত বৃহত্তম তেলক্ষেত্র। তেলক্ষেত্রটি আবিশ্কারের সময়ের পরিদর্শন চীনের তেল গোষ্ঠীর চিতং তেলক্ষেত্রের সহকারি প্রধান ভূবিদ্যাবিদ তং ইউয়েসিয়ার মনে থাকে। তিনি বলেছেন, 'আমরা এ তথ্য শুনে আনন্দে আত্মহারা হই। আমরা অফিসে আনন্দে চিত্কার করি।'

     কিন্তু এ আনন্দ খুবই কঠিন পাওয়া হয়। চিতং তেলক্ষেত্র কোম্পানি নানফু তেলক্ষেত্র পরিচালনা করে। চিতং তেলক্ষেত্র কোম্পানি ১৯৮৮ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। বোহাই উপসাগরের তীরের সাত তেলক্ষেত্রের মধ্যে চিতং তেলক্ষেত্রের আয়তন এবং উত্পাদিত পরিমাণ সবচেয়ে কম। আগে চিতং তেলক্ষেত্র প্রধানত স্থলে তেল আবিষ্কার করে, প্রতি বছরের উত্পাদিত পরিমান শুধু ৩.৫লাখ টন। পুঁজি ও প্রযুক্তিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রের কারণে নানফুতে তেল আবিষ্কারিত কাজ ১৯৯৩ সাল থেকে শুরু হল। চিতং তেলক্ষেত্র কোম্পানি দু'টি বিদেশী তেল কোম্পানির সঙ্গে সহযোগিতা করে, কিন্তু সাত ও আট বছর ধরে কোনো সন্তুষ্ট সাফল্য অর্জিত হয় নি।

    এরপরে, চিতং তেলক্ষেত্র কোম্পানি নতুন প্রযুক্তি ব্যবস্থা নিয়ে সঠিক ও বিস্তারিত ভূগর্ভস্থ গঠন কাঠামোর তথ্য লাভ করেছে। এ ফরে আবিষ্কারিত কাজ উন্নত হচ্ছে। চীনের তেল গোষ্ঠীর চিতং তেলক্ষেত্রের মহাপরিচালক চৌ হাইমিন বরেছেন, দৃড় প্রত্যয় হল তাঁরা নতুন তেলক্ষেত্র আবিষ্কারের একটি কারণ। তিনি বলেছেন, 'আমরা বরাবরি মনে করি, এ অঞ্চলে বড় তেলক্ষেত্র রয়েছে এবং বিশ্বাস করি এ বড় তেলক্ষেত্র আমরা খোঁজতে পারবো। আমরা চার বছরের মাধ্যমে দু'বছরে প্রস্তুত দেই এবং দু'বছরে বাস্তবায়ন করি, শেষে আমরা ১ বিলিয়ন টন মজুতের তেলক্ষেত্র খোঁজেছি।'

 

    চীনের বিজ্ঞান গবেষণা একাডেমি ও চীনের তেল কোম্পানির উপপরিচালক চিয়া ছেংচাও বলেছেন, নতুন তেলক্ষেত্রের খোঁজা চীনের তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাসের নিরাপত্তা সুরক্ষার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ তাত্পর্য রয়েছে। কিন্তু আবিষ্কারিত কাজ উন্নয়নের পাশাপাশি আরো নতুন সাফল্য অর্জিত হবে। তিনি বরেছেন, 'পূর্ব চীনের অর্থনীতি উন্নয়ন অঞ্চলে ও রাজধানী অর্থনৈতিক অঞ্চলের কাছে এ বড় তেলক্ষেত্র আবিষ্কার করে জাতীয় তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাসের নিরাপত্তা সুরক্ষার জন্য গুরুত্বপূর্ণ রারজনৈতিক ও অর্থনৈতিক তাত্পর্য রয়েছে। সকল বোহাই উপসাগর অববাহিকায় জ্বালানী শক্তির আবিষ্কারের সুপ্ত শক্তি বিরাট, আগের প্রযুক্তি দিয়ে আবিষ্কারিত হবে না। এতে প্রতীয়মান হচ্ছে যে, পূর্ব চীনে নতুন প্রযুক্তি দিয়ে তেলক্ষেত্রের সুপ্ত শক্তি আবিষ্কার করা উচিত।'

    বর্তমানে চীন হল যুক্তরাষ্ট্রের পর বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত তেল ভোক্তা দেশ এবং যুক্তরাষ্ট্র ও জাপানের পর বিশ্বের তৃতীয় তেল আমদানিকারক দেশ। ২০০৬ সালে চীন ১৬কোটি টন আমিরাতের তেল আমদানি করে। এটি আমিরাতের তেল ভোজনের শতকরা ৫০ ভাগ। সেজন্য বেশির ভাগ মানুষ মনে করে, নানফু তেলক্ষেত্রের আবিষ্কার ব্যাপকভাবে চীনের জ্বালানী শক্তি অভাব অবস্থা পরিবর্তন করা এবং চীনের জ্বালানী শক্তি সাশ্রের ক্ষেত্রে চাপ কমানো যায়।

    এ সম্বন্ধে চীনের সমাজ বিজ্ঞান একাডেমির চাং চংহুয়া বলেছেন, এ মনোভাব বেশি আশাবাদী হয়। তিনি বলেছেন, 'আমি মনে করি, নানফু তেলক্ষেত্রের আবিষ্কার চীনের বর্তমান জ্বালানী অভাব অবস্থা পরিবর্তন করবে না। কারণ অর্থনীতি ও জীবনযাত্রা উন্নয়নের পাশাপাশি চীন ব্যাপাক গাড়ী ভোগের শীর্ষ পর্যায়ে উঠেছে। এটি তেলের চাহিদা ক্রমান্বয়ে বেশি হচ্ছে।'

    চীনের জাতীয় উন্নয়ন ও সংস্কার কমিশনের জ্বালানী গবেষণালয়ের পরিচালক চৌ তাডি মনে করেন, এক বিলিয়ন টন মজুত এক বিলিয়ন টন আবিষ্কারিত পরিমাণ হবে না। নতুন তেলক্ষেত্রের আবিষ্কার মূলকভাবে চীনের প্রচুর তেল আমদানির অবস্থা পরিবর্তন করবে না। তিনি বলেছেন, 'বর্তমানে বিশ্বের তেলের মোট পরিমাণ একশো বিলিয়ন টন। সেজন্য এ বিলিয়ন টন তেল মজুত বিশ্বের তেল মজুতের ভারসাম্যে বেশি গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলবে না। আন্তর্জাতিক তেলের মূল্যের পরিবর্তন সৃষ্টি হবে না। চীনের বর্তমানে তেল ভোগের পরিমাণ হল প্রতি বছরে ৩০কোটিরও বেশি। এক এক বিলিয়ন টন মজুতের তেলক্ষেত্রের আবিষ্কারিত পরিমান প্রায় ৫ থেকে ৬ পর্যন্ত টন। কিন্তু প্রতি বছরে এ তেলক্ষেত্রে সুধু কয়েক মিলিয়ন টন আবিষ্কারিত হবে। সেজন্য এটি আমাদের ভবিষ্যতে তেলের ভোগ পরিবর্তন করা হবে না।'

     বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, নতুন তেলক্ষেত্র আবিষ্কারের আনন্দে চিত্কার করার পাশাপাশি আমাদের উচিত সংযম বজায় রাখা। তেল একবারব্যবহৃত জ্বালানী শক্তি হিসেবে অবশ্যই কম থেকে কমতর হচ্ছে। বিশেষ করে চীনের উচিত জ্বালানী শক্তির আবিষ্কার ও সাশ্রের কাজ একই গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে রাখা। যাতে মূল্যবান তেল জ্বালানী শক্তির যোগ্যতা বাস্তবায়ন করা যায়। চীনের সমাজ বিজ্ঞান একাডেমির চাং চংহুয়া বলেছেন, জ্বালানীর সাশ্র বরাবরি চীনের অর্থনীতি উন্নয়নের পাশাপাশি বজায় রাখা লক্ষ্য। তিনি বলেছেন, 'আমাদের উচিত অব্যাহতভাবে জ্বালানী সাশ্র করতে, ক্ষতি কমাতে, পরিবেশের সুরক্ষা করতে, দুষণের কমাতে ও মূলকভাবে আমাদের বর্তমান অর্থনীতি উন্নয়নের পদ্ধতি পরিবর্তন করতে থাকা। বর্তমান ,মানব ও সরজ্ঞান শক্তি নিয়োগ এবং প্রচুর জ্বালানী শক্তির ভোগের পদ্ধতিতে সূদূরপ্রসারী দৃষ্টিতে দেখতে গেলে অর্থনীতির অবিরাম উন্নয়ন বাস্তবায়িত হবে না। সেজন্য, নানফু তেলক্ষেত্রের আবিষ্কারের ফলে আমাদের সম্পদ সদ্ব্যবহারী সমাজ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য বাস্তবায়িত হবে না।

    পরিকল্পনা অনুয়ারী, চিতং তেলক্ষেত্র আগামী বছরে এককোটি টন আমিরাতের তেল উত্পাদনের লক্ষ্য বাস্তবায়ন করবেন। চিতং তেলক্ষেত্রের দায়িত্ববান ব্যক্তি সম্প্রতি প্রতিশ্রুতি দিয়েছে যে, চিতং তেলক্ষেত্র ভবিষ্যতে আন্তর্জাতিক শিল্প-প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে উন্নত প্রযুক্তি দিয়ে তেলক্ষেত্রের দুষিত পানি নিঃসরণ না করার লক্ষ্য বাস্তবায়ন করবেন।