v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2007-06-19 19:07:47    
চীন ও ফ্রান্সের বিনিময়ের মহাসম্মেলনী

cri
    এপ্রিল মাসের প্রথম দিক থেকে জুন মাসের শেষ পর্যন্ত চীনের ১৪টি শহরে ফ্রান্সের সংগীত , কবিতা , চলচ্চিত্র ও আলোকচিত্র প্রদর্শীর আয়োজন করা হয়েছে । যারা ফ্রান্সের সংস্কৃতি পছন্দ করেন , তারা ২০০৭ সালের বসন্তকালে আরেকবার ফরাসী সংস্কৃতি উপভোগের সুযোগ পেয়েছেন ।

    চীনা সংগীত সেহুও চীনের এক ঐতিহ্যিক সুর। চীন ও ফ্রান্সের শিল্পীরা সহযোগিতা করে সাফল্যের সঙ্গে চীনের ঐতিহ্যিক বাদযন্ত্রের সুরে পাশ্চাত্যের সংগীত মেশানোর চেষ্টা করেছেন । পেইচিংয়ের চুসান পার্কের কনসার্ট হলে অনুষ্ঠিত এই সংগীতানুষ্ঠান শেষে লাল রংয়ের ঐতিহ্যিক ছিফাও পরা চীনা শিল্পী ফান ও ছিং ও কালো রংয়ের পোশাক পরা ফরাসী শিল্পীরা যদিও তিন বার নীচের শ্রোতাদের ধন্যবাদ জানালেন , তবুও শ্রোতারা তাদেরকে ছাড়তে চান না । শেষে শিল্পীরা শ্রোতাদের জন্য আরেকটি সুর বাজালেন । পেইচিংয়ের একজন দশর্ক বলেছেন , চীন ও ফ্রান্সের শিল্পীদের বাজানো এই সুর আমার খুব ভালো লাগে । আমি এই প্রথমবার এই ধরনের সুর শুনেছি । এতে চীনের ঐতিহ্যিক বৈশিষ্ট্য বজায় রাখার পাশাপাশি কিছু আধুনিক উপাদানও মেশানো হয়েছে ।

    চীনের দশর্কদের কাছে ফ্রান্সের সংগীত অপরিচিত নয় । ২০০৪ সালে চীন ও ফ্রান্স পরস্পরের শহরগুলোতে সাংস্কৃতিক বর্ষ আয়োজন করতে শুরু করে । তখন থেকে চীনের বড় বড় শহরে ফ্রান্সের সংগীতের অনুরাগীর সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে । চীনে ফ্রান্সের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান চীনা দশর্কদের দৃষ্টি আকর্ষন করে । এ বছরের মে মাসে পেইচিংয়ে অনুষ্ঠিত সপ্তম শিল্পকলা উত্সবে সংগীতানুষ্ঠান , চিত্রপ্রদশর্নী ও অপেরাসহ মোট দশটিরও বেশি ফরাসী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়। পেইচিং শিল্পকলা উত্সবে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের শিল্পী দল অংশ নেয় । দর্শক সংখ্যা ৩০ লাখেরও বেশি হয়েছে।

    পেইচিং চুং সান পার্কের কনসার্ট হলের সহকারী ম্যানেজার চু চিং ২০০৪ সাল থেকে ফ্রান্সের সংগীতমহলের সঙ্গে সহযোগিতা করতে শুরু করেন। তিনি মনে করেন চীনে ফ্রান্সের সংগীতানুষ্ঠানের আয়োজন ফ্রান্সের সংগীত উপলব্ধি করতে চীনা দশর্ককে সাহায্য করবে । তিনি বলেছেন , ফ্রান্সের সংগীতানুষ্ঠানের আয়োজন আমাদের জন্যও এক ভালো সুযোগ । এতে আমি আনন্দ বোধ করি । ফ্রান্সের অনেক শ্রেষ্ঠ সংগীতবিদ চীনের দশর্করা এখনও পরিচিত নন । আমার কর্তব্য হলো চীনা দর্শকদের কাছে ফ্রান্সের আরো বেশি সুর পরিচয় করিয়ে দেয়া এবং ফ্রান্স তথা ইউরোপের আরো বেশি দেশের সংগীত মহলের সঙ্গে সহযোগিতা বাড়ানো ।

    চীন ও ফ্রান্সের অনুবাদ মহলের সঙ্গে সহযোগিতা সংগীত মহলের চেয়ে অনেক আগেই শুরু হয় । গত শতাব্দীতে চীনের অনুবাদকরা ফ্রান্সের বিখ্যাত লেখকদের অনেক রচনা চীনা ভাষায় অনুবাদ করেছেন । ফ্রান্সের বিখ্যাত লেখক বালজাকের লেখা ' ফাদার গোরিওট ' ও ভিক্টোর হুগোর লেখা ' হুনবেক অব নোট্রে ডেমের ' কিছু অংশ চীনের প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্কুলের পাঠ্যবইতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে । গত শতাব্দীর আশির দশক থেকে ফ্রান্সের লেখক মিলান কুনডেরার উপন্যাস চীনের পাঠকরা খুব পছন্দ করেন ।

    পেইচিংয়ের ফরাসী সাংস্কৃতিক কেন্দ্র ও পূর্ব চীনের সুচৌ শহরের প্রাচীন বাগানে অনুষ্ঠিত কবিতা আবৃত্তি ও গবেষনা সভা দুদেশের কবি , সাহিত্যিক ও অনুবাদকদের জন্য বিনিময়ের সুযোগ সৃস্টি করেছে । আলোচনা সভায় দু দেশের কবিতা আবৃত্তি করা হয়েছে । চীনা কবিতা ফ্রান্সের কবিরা ফরাসী ভাষায় অনুবাদ করেন আর ফরাসী কবিতা চীনের কবিরা চীনা ভাষায় অনুবাদ করেন । চিত্রশিল্পীরা আলোচনা সভায় ছবি আঁকেন । বিনিময়ের এ দৃশ্য দেখে দশর্করা মুগ্ধ হন ।

    পেইচিং চলচ্চিত্র ইনস্টিটিউটে ' পর্যটন ' নামে এক আলোকচিত্র প্রদশর্নী চীনের ছাত্রছাত্রীদের দৃষ্টি কেড়েছে । এ প্রদশর্নী দুদেশের জনগণের সমঝোতা বাড়াতে সাহায্য করেছে । একজন ছাত্র বলেছেন , আমি মনে করি এ ধরনের প্রদশর্নী খুব ভালো । চীন ও ফ্রান্সের মধ্যে ছাত্রবিনিময় দুদেশের রীতিনীতি জানতে সাহায্য করবে এবং সাহিত্য রচনার জন্যও হিতকর হবে । পেইচিং বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর তুং ছিয়ান বলেছেন , আমি আশা করি দুদেশের সংশ্লিষ্ট বিভাগ চীন ও ফ্রান্সের ইতিহাস , ভূগোল , সংস্কৃতি ও রাজনৈতিক ব্যবস্থাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রের মৌলিক তথ্য আরো জনপ্রিয় করার চেষ্টা করবে । এটা দু দেশের বিনিময় ও সহযোগিতা বাড়াবে ।