v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2007-06-15 20:00:55    
ইরানের পারমাণবিক সমস্যা কোন দিকে যাবে(ছবি)

cri

    আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থার মহাপরিচালক মোহাম্মদ আল-বারাদেই ১৪ জুন ইরানের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ তত্পরতার সম্প্রসারণ বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছেন , যাতে ইরানের পারমাণবিক অস্ত্র উন্নয়নের দরুণ সৃষ্ট সংকট প্রশমিত করা যায়। কিন্তু আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থায় ইরানের স্থায়ী প্রতিনিধি আলি আসঘার সোল্তানিয়া বলেছেন, ইরান ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ প্রযুক্তির অধিকারী দেশ। এখন তার ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ তত্পরতা বন্ধ করার দাবি জানালেও তা অনেক দেরি হয়ে গেছে। এর পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্র জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের মাধ্যমে ইরানের ওপর আরো বেশি শাস্তি আরোপ করার প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। ইরানের পারমাণবিক সমস্যা কোন দিকে যাবে? আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় আবার এর ওপর মনোযোগ দিচ্ছে ও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।

    বারাদেই বলেছেন, এখন ইরান নাতান্জ পারমাণবিক ঘাঁটিতে ১৭০০ থেকে ২০০০টি সেন্ট্রিফিউগ্যাল মেশিন স্থাপন করেছে। অনুমান অনুযায়ী, জুলাই মাসের শেষ দিক পর্যন্ত ৩০০০টি সেন্ট্রিফিউগ্যাল মেশিন স্থাপন করা হবে। নিঃসন্দেহে এটা একটি বিপুল সংখ্যা। কারণ, যদি ইরান পারমাণবিক অস্ত্র উত্পাদনের জন্য প্রস্তুতি না নেয় তাহলে এমন জরুরীভাবে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ তত্পরতার আকার সম্প্রসারণ করার প্রয়োজন হয় না। বারাদেই বলেছেন, যদি ইরান আজ থেকে নতুন সেন্ট্রিফিউগ্যাল মেশিন উত্পাদন ও স্থাপনের কাজ বন্ধ করে, তাহলে বুঝা যাবে, এ সংকট সমাধানের দিকে তারা প্রথম ধাপ এগিয়েছে।

    কিন্তু এর প্রতি ইরানের প্রতিক্রিয়া শীতল। আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থায় ইরানের স্থায়ী প্রতিনিধি সোল্তানিয়া এ দিন তথ্য মাধ্যমকে বলেছেন, ইরান ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ প্রযুক্তির অধিকারী দেশে পরিণত হয়েছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের এ সত্যতাকে স্বীকার করতে হবে। ইরানের পারমাণবিক সমস্যা পুরোপুরি আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থার কাঠামোতেই সমাধান করা উচিত। নিরাপত্তা পরিষদের হস্তক্ষেপ পরিস্থিতিকে আরো জটিল করবে। যদি নিরাপত্তা পরিষদের নতুন শাস্তি আরোপের সিদ্ধান্ত হয়, তাহলে ইরান আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থার সঙ্গে সহযোগিতা কমিয়ে দেবে।

    আসলে, ইরান যথাক্রমে আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থার সঙ্গে সহযোগিতা কমিয়েছে। সম্প্রতি ইরান সিদ্ধান্ত নিয়েছে, ইরান আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থার পরীক্ষক তার হেভি ওয়াটার রি-অ্যাক্টরের ওপর নিয়মিত পরীক্ষা করার বিষয়টি প্রত্যাখ্যান করবে এবং বহির বিশ্বের কাছে তার সর্বশেষ পারমাণবিক সাজসরঞ্জামের সংশ্লিষ্ট তথ্য জানানোর বিষয়টিকেও প্রত্যাখ্যান করবে।

    ইরানের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আহমেদিনেজাদ ১৩ জুন ইরানের উত্তরাংশের শহর সেমনানে বক্তৃতা দেয়ার সময় পুনরায় ঘোষণা করেছেন, শান্তিপুর্ণ উপায়ে পারমাণবিক শক্তি প্রয়োগ করা হচ্ছে সকল ইরানী জনগণের উপযুক্ত অধিকার। তিনি বলেছেন, ইতিহাস থেকে প্রমাণিত হয়েছে যে, জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের সংশ্লিষ্ট সিদ্ধান্ত ইরানের ওপর কোন ভূমিকা রাখবে না। কিছু কিছু পাশ্চাত্য দেশ নিরাপত্তা পরিষদের মাধ্যমে ইরানের ওপর নতুন ভাবে শাস্তি আরোপ করলেও তাঁদের লক্ষ্যবস্তু বাস্তবায়িত হবে না। কারণ ইরানী জনগণ মনে করেন, এ ধরনের শাস্তিমূলক সিদ্ধান্ত মূল্যহীন।

    খবরে জানা গেছে, বারাদেই মনে করেন, বর্তমান অবস্থা খুবই জটিল। আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থা ইরানের পারমাণবিক তত্পরতার বাস্তব অবস্থা সম্পর্কে খুব কম জানে। এর প্রথম কারণ হচ্ছে ইরানের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের প্রযুক্তির উন্নয়ন অতি দ্রুত হয়েছে। দ্বিতীয় হচ্ছে ইরান ও আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থার সহযোগিতা দিনে দিনে কমে যাচ্ছে। তবু তিনি বলেছেন, এখনো কূটনৈতিক আলোচনার মাধ্যমে ইরানের পারমাণবিক সমস্যা সমাধানের সময় আছে। কারণ ইরানের একটি পারমাণবিক বোমা নির্মাণ করতে কমপক্ষে ৩ থেকে ৮ বছর সময় লাগবে।

    এর পাশাপাশি বারাদেই বলেছেন, যদি যুক্তরাষ্ট্র ও ইস্রাইল ইরানের ওপর সশস্ত্র আক্রমণ চালায়, তা "পাগলামি আচরণ" হবে এবং সমস্যার সমাধানের জন্য প্রতিকুল। তিনি আশা করেন, সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন পক্ষ যত তাড়াতাড়ি সম্ভব মতৈক্যে পৌঁছবে । কারণ, সমস্যাটি যত বেশি দিন স্থগিত থাকবে , শান্তিপূর্ণ উপায়ে তা সমাধানের সুযোগ তত কম হবে।

    জনমত মনে করে, কূটনৈতিক আলোচনার মাধ্যমে ইরানের পারমাণবিক সমস্যা সমাধান করা হচ্ছে উভয় পক্ষের সুবিবেচিত বাছাই। কারণ এটা আন্তর্জাতিক পারমাণবিক অস্ত্রের বিস্তার নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার ফলপ্রসূতা এবং মধ্য প্রাচ্য অঞ্চলের শান্তি ও স্থিতিশীলতা রক্ষার জন্য সহায়ক হবে।