v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2007-06-14 15:18:33    
দক্ষিণ এশিয়ার শিশুদের দাস হিসেবে বেচা-কেনা হয়

cri

    ২০০৭ সালের ৩ এপ্রিল সকালে, ১৪তম সার্ক শীর্ষ সম্মেলন দায়াদিল্লীতে শুরু হয়। সম্মেলনটি শুরু হওয়ার প্রাক্কালে ২শ'রও বেশী ভারতীয় শিশু সভাকক্ষের বাইরে দক্ষিণ এশীয় অঞ্চলের শিশুদের বেচা-কেনার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে। এবারের প্রতিবাদ তত্পরতার আয়োজক 'শিশু উদ্ধার সংস্থা'-র দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বলেছেন, ভারতের বাজারে, একটি শিশুর দাম ভারতীয় একটি মোষের চেয়ে অনেক কম। একটি ভারতীয় মোষ কিনলে কমপক্ষে ১৫ হাজার রুপি, কিন্তু একটা শিশু কিনলে শুধুমাত্র ৫শ' লাগে।

    'শিশু উদ্ধার সংস্থা'-র দায়িত্বশীল কর্মকর্তা আরো বলেছেন, সম্প্রতি তিনি দক্ষিণ এশীয় অঞ্চলের শিশুদের বেচা-কেনার অবস্থার ওপর বিশেষ গবেষণা ও তদন্ত করেছেন। ফলে তিনি জানতে পেরেছেন যে, এই অঞ্চলের অনেক শিশুকেই দাস হিসেবে বিক্রি করা হয়। প্রতি বছর কমপক্ষে ৫০ হাজার নেপালী শিশু ও ৪০ হাজার বাঙ্গালী শিশু ভারতে বিক্রি হয়। এর পাশাপাশি ভারতের নিজের শিশু বেচা-কেনার অবস্থা আরো গুরুতর।

    তীব্র দারিদ্র্য হচ্ছে দক্ষিণ এশীয় অঞ্চলের শিশু বেচা-কেনার প্রধান কারণ। অনেক পরিবার খুবই দরিদ্র, ২শ' রুপি দিয়ে তারা নিজেদের শিশুকে বিক্রি করে দেয়। 'দি হিন্দুস্তান' পত্রিকার খবরে প্রকাশ, ভারতের অর্থনীতির দ্রুত উন্নয়নে বিরাট সস্তা শ্রমিক দরকার। এতে শিশু শ্রমিকের মূল্য সবচেয়ে কম। এটা হচ্ছে শিশু ব্যবসার উন্নয়নের একটা বড় কারণ। আদম ব্যবসায়ীরা পুলিশকে ঘুষ দেয়ায় শিশু বেচা-কেনা সংক্রান্ত অপরাধের জন্য কার্যকর দণ্ড না পাওয়ার অন্য একটি কারণ। সম্প্রতি বিহার প্রদেশের দুটো ভাই তাদের বাবামা আড়াইশ' রুপি দিয়ে বিক্রি করে দেয়। আদম ব্যবসায়ীরা পুলিশের চোখের সামনে দিয়ে শিশুদের এই প্রদেশ থেকে নিয়ে যায়।

    সম্প্রতি আন্তর্জাতিক শ্রমিক সংস্থার প্রকাশিত একটি রিপোর্টে বলা হয়েছে, বর্তমান ভারতে ৫ থেকে ১৪ বছর বয়সের ১.২৬ কোটি শিশু শ্রমিক রয়েছে। পাথরখনি শ্রমিকদের মধ্যে ৫ ভাগের ১ ভাগ হচ্ছে শিশু শ্রমিক। ভারতের যৌন শ্রমিকদের মধ্যে ৩ ভাগের ১ ভাগ হচ্ছে শিশু। এ সব শিশু হচ্ছে ক্রয় করা হয়েছে।

    সম্প্রতি ভারত সরকার শিশু বেচাকেনার গুরুতর অপরাধের ব্যাপারে সচেতন। তারা যথাযথ ব্যবস্থা নিয়ে অপরাধ দমনের চেষ্টা করছে। গত অক্টোবর মাসে, ভারতীয় সংসদে একটা আইন গৃহীত হয়েছে। এতে ১৪ বছর বয়সের নিচের শিশুদের কাজে নিয়োগ করা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। আইনভঙ্গকারীকে ২ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হবে। এর ফলে আইন শিশু বেচা কেনা দমন করার জন্য কিছু ভুমিকা পালন করবে। কিন্তু আইনে শিশু বেচা-কেনার বিষয়টি নিষিদ্ধ করা হয়নি। যার ফলে আদম ব্যবসায়ীদের সুযোগ রয়ে গেছে।

    বিশেষজ্ঞগণরা মনে করে, তৃণমূল পর্যায়ে শিশু বেচা কেনা বন্ধের জন্য, প্রথমেই দারিদ্র্যতা নির্মূল করতে হবে। এই বিষয়ে চীনের অভিজ্ঞতা থেকে শেখা যায়। 'ওয়াল্ড টাইমস' পত্রিকার সাংবাদদাতারা এবারের সার্কের শীর্ষ সম্মেলনে শুনেছেন যে, সার্কের প্রায় সকল সদস্যদেশের নেতৃবৃন্দ দারিদ্র্য নির্মূল প্রধান কাজ হিসেবে গ্রহণ করবেন এবং তারা পারস্পরিক সহযোগিতা জোরদার করার প্রস্তাব দিয়েছেন। যাতে সারা দক্ষিণ এশিয়া যত তাড়াতাড়ি সম্ভব দারিদ্র্যতা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।