ফিলিস্তিনের ইসলামি প্রতিরোধ আন্দোলন---হামাস ১২ জুন ফিলিস্তিনের জাতীয় মুক্তি আন্দোলন---ফাতাহের নেতৃত্বাধীন ফিলিস্তিনের নিরাপত্তা বাহিনীকে গাজা থেকে প্রত্যাহারের চরমপত্র দিয়েছে। এরপর পরই তারা উত্তর গাজায় ফিলিস্তিন নিরাপত্তা বাহিনীর সদর দপ্তরসহ বিভিন্ন লক্ষ্যে ব্যাপক হামলা চালিয়েছে। ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস গাজায় হামাসের অর্ভুনখান ঘটানোর অপচেষ্টা চালানোর নিন্দা করেছেন।
এবারের সংঘর্ষ আগের চেয়ে আরো বেশি গুরুতর। ১১ জুন স্বাক্ষরিত যুদ্ধবিরতি চুক্তি বল প্রয়োগমূলক সংঘর্ষের আরো অবনতি রোধ করতে পারে নি। ৫ থেকে ১২ জুন পর্যন্ত শুধু এক সপ্তাহেই সংঘর্ষে প্রায় একশো জন হতাহত হয়েছে। গত দু'দিনে দু'দলের সশস্ত্র ব্যক্তিরা সরকারী সংস্থা ও উচ্চ পর্যায়ের নেতৃবৃন্দের ওপর হামলা চালিয়েছে। মিসর দু'দলের মধ্যে মধ্যস্থতা করেছে। তারা বলেছে, বর্তমানে হামাস ও ফাতাহ গাজায় যুদ্ধবিরতি সংক্রান্ত আলোচনা প্রত্যাখ্যান করেছে।
জনমত মনে করে, এবারের অবস্থা ঘটানোর মূল কারণ হচ্ছে ফিলিস্তিনের সশস্ত্র দলগুলোর নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা সংক্রান্ত মতভেদ। ইস্রাইলী দখল বিরোধী প্রক্রিয়ায় হামাস গাজা এলাকায় নিজের সশস্ত্র শক্তিকে উন্নত করেছে। ফাতাহও জর্ডান নদীর পশ্চিম তীরে নিজেদেরকে প্রভাবশালী হিসেবে গড়ে তুলেছে এবং তাদের হাতে ফিলিস্তিনের নিরাপত্তা বাহিনীর নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা রয়েছে। গত বছর হামাস নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতা লাভের পর তথাকথিত কার্যকর বাহিনী গড়ে তুলেছে এবং নিজের বৈধ অবস্থার অন্বেষণ করছে। তারপরও দু'দলের ফিলিস্তিনের নিরাপত্তা বাহিনীর নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা সমস্যা সম্পর্কিত মত বিরোধ শেষ হয় নি।
ফিলিস্তিনের দু'দলের ব্যাপক সংঘর্ষ ফিলিস্তিনের অভ্যন্তরীণ অবস্থা বা আঞ্চলিক অবস্থার ওপর গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলছে।
প্রথমতঃ ফিলিস্তিনের জাতীয় যৌথ সরকার। এদিন রাতে ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট আব্বাস ফাতাহ'র কেন্দ্রীয় কমিটির জরুরী সম্মেলন সভাপতিত্ব করেছেন। তিনি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন যে, সরকারে ফাতাহর সকল মন্ত্রী জাতীয় যৌথ সরকারে আর অংশ নেবে না। এই সিদ্ধান্তের ফলে ফিলিস্তিনের জাতীয় যৌথ সরকার ভেঙ্গে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে।
এর পাশাপাশি সরকারী সংস্থা চালায় এমন কিছু সাহায্যকারী প্রকল্পের ওপরও নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। যেমন একমাত্র ইউরোপীয় ইউনিয়ন ফিলিস্তিনের অর্থ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে প্রত্যক্ষ সাহায্য সংক্রান্ত সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেছে। বর্তমানে সরকার ভেঙ্গে গেলে সাহায্য গ্রহণকারী কেউ থাকবে না। ফিলিস্তিনের জনগণের দেয় বেতন সমস্যা ও মানবিক সাহায্য সমস্যাসহ বিভিন্ন বিষয়ে তা প্রভাব ফেলবে। এ কারণে ফিলিস্তিনের অর্থনৈতিক অবস্থার আরো অবনতি হওয়ার সম্ভাবনা আছে। তাছাড়া মানবিক সংকট আরো গুরুতর লাভ করবে।
এ সংকট গাজা এলাকার অবস্থার ওপরও প্রভাব ফেলবে। জানা গেছে, সংকটকালীন সময়ে চরমপন্থীদের গাজা এলাকায় প্রবেশের সম্ভাবনা রয়েছে। জনমত চিন্তা করে যে, গাজা এলাকায় নিয়ন্ত্রণ হারানো মানেই মধ্যপ্রাচ্যের স্থিতিশীলতার ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলা।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি ফিলিস্তিনের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি ফিলিস্তিন ও ইস্রাইলের নেতৃবৃন্দের আলোচনা বারবার পিছিয়ে গেছে। এবারের সংঘর্ষ ভবিষ্যতে দু'পক্ষের শান্তিপূর্ণ আলোচনা এবং আগামী মধ্যপ্রাচ্যের চার পক্ষের বৈঠকে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
|