v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2007-06-12 13:57:28    
খুর্শিদ আলম সেলিমের চীনে একক চিত্রপ্রদর্শনী

cri
    ৪ জুন বাংলাদেশের বিখ্যাত চিত্রশিল্পী খুর্শিদ আলম সেলিম চীনে বাংলাদেশ দূতাবাসে তাঁর প্রথম একক চিত্রপ্রদর্শনী করেছেন। অনুষ্ঠানে চীনের চারুকলা মহলের বিভিন্ন ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত।

      বাংলাদেশের বৈশিষ্টময় সংগীতের সুরের সঙ্গে সঙ্গে প্রদর্শনীটি শুরু হয়। এবারের প্রদর্শনীর প্রসঙ্গ হলো "ইমেজ অব নেচার", অর্থাত প্রকৃতির প্রতিচ্ছার ছবি। এ ধারাবাহিক ছবিগুলো সম্পর্কে শিল্পী সেলিম বলেছেন:

      "প্রাকৃতিতে আমরা যেভাবে দেখি যেমন পাখির গায়ে, ফুলে , মাছের গায়ে , নানা ধরনের সুন্দর জিনিস। অর্থাত যা আমরা দেখি সেগুলোর প্রতিফলন হলো এই ছবি। প্রকৃতি যেভাবে সাজানো থাকে, যেভাবে সৃষ্টি করেছে ঠিক সে রকমই একটি জিনিস। প্রতিটি গাছ তার হার্মোনি আছে, কনট্যাক্টও আছে। আমি প্রকৃতি থেকে শিখছি।"

    ময়মনসিং হলো বাংলাদেশের চারুকলার উন্নয়নের উত্স কেন্দ্র। শিল্পী সেলীম ১৯৫১ সালে ময়মনসিংহে জন্ম নিয়েছেন। ১৯৭৬ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফাইন আর্ট ইনস্টিটিউটের চিত্রকলা বিভাগ থেকে ডিগ্রী নিয়েছেন। পরে তিনি নিউ ইয়র্কে তাঁর দৃষ্টিকে ও চিন্তাকে পরিশিলিত করার মধ্য দিয়ে নিজকে আরো অভিজ্ঞ করে তুলতে যুক্তরাষ্ট্র গেছেন। সেখানে তাঁর শিল্পীর স্বপ্ন বাস্তবায়িত হয়েছে। ১৯৮২ সাল থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত তিনি যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, চীন ও বাংলাদেশে মোট ১৩টি একক চিত্রপ্রদর্শনীর আয়োজন করেছেন। এছাড়ও তিনি পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে বহু গ্রুপ প্রদর্শনীতে অংশ নিয়েছেন।

   কেন ছবি আঁকা তার নিজের সারা জীবনের লক্ষ্য হিসেবে নির্দারণ করেছেন এ প্রশ্নে তিনি বলেছেন:

    "আমি ছোট বেলা থেকেই ছবি আঁকতাম। আমার মনে এ ধারণা ছিল যে ছবি আঁকা ছাড়া আমার আর কিছু হবে না। প্রথমে আমার বাবা মা একটু চিন্তা করতো যে ভবিষ্যতে আমি কি করব? যাই হোক আমি "আর্ট" বিষয় নিয়ে পড়াশোনা করেছি এবং ছবির সঙ্গে আছি এবং ছবির সাথেই থাকতে চাই।"

    শিল্পী সব সময় বিশেষ দৃষ্টিকোণ থেকে জীবনযাত্রার সাধারণ অসাধারণ সব কিছুর উপর দৃষ্টি রাখেন। এই সব রং ও জিনিসের প্রতি তার দৃষ্টি আকৃষ্ট হলে তিনি সৃষ্টির অভিজ্ঞতা ও অনুভবকে তাঁর কর্মের মাধ্যমে প্রকাশের চেষ্টা করেন। শিল্পী তাঁর ধারণা ব্যাখ্যা করার সময় যেন নিজের স্বপ্নের মধ্যেই ডুবে গেছেন অবচেতনভাবে।

    "ইমেজ অব নেচার" প্রদর্শনীতে দেখা যায় শিল্পী রং ব্যবহারের বিষয়ে কত সাহসী ও সাবলীল। প্রকৃতির বিভিন্ন রং এক রকম বিশেষ পদ্ধতিতে তৈরী করা হয়। তা দেখে মানুষের হৃদয় ও মনে তীব্র অনুভূতির সৃষ্টি করে। চীনের শিল্প ও বাণিজ্য প্রত্রিকার সংবাদদাতা না ইউয়েন, তিনি নিজেই একজন তৈল চিত্র শিল্পী। সেলীমের ছবিগুলো দেখে তিনি তাত্ক্ষণিকভাবে একটি ছবি কেনার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেছেন:

    "আমি একটি ছবি দেখেছি। এই ছবিটি দেখে আমি অবাক হয়েছি। শিল্পী সাহস নিয়ে এই ছবিতে রং ব্যবহার করেছেন। এই সব রং আলাদা আলাদা দেখে সবই চমত্কার লাগছে। কিন্তু এক সঙ্গে মিলে আবার সমন্বিত একটি গোটা ছবি দেখায়। যেমন সবুজ ও বেগুনি রং এমনভাবে মেশানো যায় তা আমি কখোনো চিন্তা করতে পারি নি।"

    শিল্পী তাঁর মত করে বাংলাদেশে ফাইন আর্ট নিয়ে পড়াশোনাকারী ছাত্রছাত্রীদের কাছে তার অভিজ্ঞতা ভাগাভাগি করতে চান। তিনি বলেছেন:

     একজন শিল্পী সেহেতু আমি আমার শিল্পকর্মে অনেক সফলতা অর্জন করেছি বলে মনে করি। প্রকৃতিকে দেখার বিষয়টি বিশ্বের শিল্পী, সাহিত্যক ও বিজ্ঞানীদের মধ্যে আছে এবং আমার মধ্যেও আছে। কাজেই আমি শিল্পকর্ম সৃষ্টিতে উত্সাহ বোধ করি। প্রকৃতিই আমার অনুপ্রেরণার উত্স।"

    শিল্পী সব সময় প্রাকৃতির উপর দৃষ্টি রাখেন। তাছাড়া তিনি মানবজাতি ও প্রকৃতির সঙ্গে সম্পর্ক নিয়েও অনেক চিন্তাভাবনা করেন। তা এই প্রদর্শনী যেন চীনে একরকম সুখের আমেজ মেশানো বসন্তের বাতাস নিয়ে এসেছে। চীনের চারুকলা একাডেমির উপ-পরিচালক ডঃওয়াং নেং সিয়েন এবারের প্রদর্শনী দেখে বলেছেন:

    "বাংলাদেশেরও চীনের মতো সুদীর্ঘকালীন ইতিহাস ও সংস্কৃতি রয়েছে। এই শিল্পী বাংলাদেশের সংস্কৃতিতে জন্ম নিয়েছেন তারপর যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে সেখানকার সমৃদ্ধ শিল্প থেকে শক্তি পেয়েছেন। তাই তার ছবিতে প্রবর্তয়িতার মর্ম আমরা উপলব্ধি করতে পারি। এবারের প্রদর্শনী চীনের শিল্পীদের জন্য বাংলাদেশের শিল্পকর্ম উপভোগ করা এবং দু'দেশের মধ্যে শিল্প ক্ষেত্রের মতবিনিময়ের জন্য একটি সুযোগ সৃষ্টি করেছে।"