v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2007-06-11 16:54:51    
ইরান এবং ই.ইউ.'র মধ্যে পুনরায় বৈঠক ইরানের পারমাণবিক সমস্যার আচলাবস্থা ভেঙ্গে দেবে কিনা ?

cri
    ১১ জুন ইরানের সর্বোচ্চ জাতীয় নিরাপত্তা কমিটির উপ-সচিব জাভাদ ভাইদি এবং ই.ইউ.'র কূটনৈতিক ও নিরাপত্তা নীতি বিষয়ক উচ্চপদস্থ প্রতিনিধি জ্যাভিয়ের সোলানার সহকারীর মধ্যে বৈঠক হয়েছে । এবারের বৈঠক হচ্ছে মাদ্রিদ বৈঠকের পর দু'সপ্তাহের মধ্যে দু'পক্ষের আরেকবার উচ্চপর্যায়ের যোগাযোগ ।

    এবারের বৈঠকের আগে বিভিন্ন পক্ষের মতামত কোনো পরিবর্তনের লক্ষণ ছিল না । সম্প্রতি জাতিসংঘের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন যে, বর্তমানে ইরান তার পারমাণবিক ব্যবস্থাপনায় ২০০০ সেট্রিফিউজ স্থাপন করেছে । অনুমাণ করা হচ্ছে যে আগামী মাসে মোট ৩০০০টি সেন্টিফিউজ বসানোর লক্ষ্য বাস্তবায়ন করা হবে । যাতে শিল্প পর্যায়ের পারমাণবিক জ্বালানী সম্পদ উত্পাদন করা যায় । যদি এ কর্মকর্তার কথা সত্যি হয় ,তাহলে এক বছরের মধ্যে ইরান একটি পারমাণবিক বোমা তৈরী করার জন্যে প্রয়োজনীয় গুণগতমান সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম উত্পাদন করতে সক্ষম হবে ।

    এ প্রসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র এবং তার মিত্রশক্তি দেশগুলো সন্দেহ করছে যে, ইরান বেসামরিক পারমাণবিক জ্বালানী সম্পদ উন্নয়ন করার অজুহাতে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরী করার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে । তারা নিরাপত্তা পরিষদের ইরানের বিরুদ্ধে আর্থিক শাস্তিসহ আরো কঠোর শাস্তি আরোপের আহ্বান জানিয়েছে ।

    ৮ জুন জি-৮ শীর্ষ সম্মেলনে ইরানের পারমাণবিক সমস্যা সংক্রান্ত প্রকাশিত এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে , যদি ইরান পারমাণবিক সমস্যার ব্যাপারে কোনো আপোস না করে তাহলে জি-৮ তার বিরুদ্ধে আরো কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেবে । বিবৃতিতে আরো বলা হয়েছে, ইরান আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে তার পারমাণবিক পরিকল্পনা শান্তির জন্য ব্যবহার করার কথা বিশ্বাস করাতে সক্ষম হলে, জি-৮ এবং ইরানের বিভিন্ন ক্ষেত্রের সম্পর্কের ক্ষেত্রে নতুন পৃষ্ঠা খুলবে । এর মধ্যে পারমাণবিক জ্বালানী সম্পদসহ রাজনীতি, অর্থনীতিসহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ক্ষেত্রও রয়েছে ।

    ৯ জুন ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সৈয়দ মোহাম্মাদ আলি হোসেইনি এক বিবৃতিতে বলেছেন, জি-৮ শীর্ষ সম্মেলনের ইরান সমস্যা সম্পর্কিত বিবৃতির জন্য তারা অসন্তোষ প্রকাশ করছে । তিনি বলেছেন, এ পর্যন্ত ইরান আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থাসহ বিভিন্ন আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক সংস্থার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সহযোগিতামূলক সম্পর্ক বজায় রেখেছে এবং শুরু থেকেই পরমাণু অবিস্তার চুক্তি মেনে চলছে এবং শান্তিপূর্ণভাবে পারমাণবিক জ্বালানী সম্পদ প্রযুক্তি উন্নত করছে । আমাদের জি-৮ শীর্ষ সম্মেলনে প্রকাশিত বিবৃতির প্রতি আমরা অসন্তুষ্ট । এর পাশাপাশি তিনি উল্লেখ করেছেন যে ইরান আগের মতোই কূটনৈতিক পদ্ধতিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ইরানের পারমাণবিক তত্পরতা সম্পর্কে চিন্তা বা সন্দেহের নিরসণ করবে । ইরান কোনো পূর্বশর্ত ছাড়া বৈঠকে অংশ নেয়ার প্রস্তুতি নিয়েছে ।

    একইদিন ইরানের জাতীয় স্বার্থ কমিটির চেয়ারম্যান, সাবেক প্রেসিডেন্ট আকবর হাশেমি রাফসানজানি বলেছেন, ইরান জি-৮'র বিবৃতির পরোয়া করে না । তিনি বলেছেন, এসব শিল্পোন্নত দেশগুলো বহুবারই ইরানকে পারমাণবিক তত্পরতা পরিত্যাগ করার কথা বলেছে । কিন্তু বর্তমানে ইরান যথেষ্ট বুদ্ধি ও সতর্কতা অর্জন করেছে এবং তারা এ কঠিন সময় পার করতে সক্ষম হবে ।

    ১১ জুন আন্তর্জাতিক আণবিক সংস্থা পরিষদ একটি সম্মেলন আয়োজন করে ইরানের দ্রুত সম্প্রসারিত ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ তত্পরতা এবং আন্তর্জাতিক আণবিক সংস্থার সঙ্গে অনেক দুরত্ব সৃষ্টির কারণে সহযোগিতা মোকাবিলার ওপর আলোচনা করবে । অনুমাণ করা হচ্ছে যে , তখন ইরানের সম্মুখীন সমালোচনা ও নিন্দা আরো তীব্রতর হবে ।

    তা ছাড়া যুক্তরাষ্ট্র এবং ইরানের সম্পর্কও উত্তেজনাময় রয়েছে । যুক্তরাষ্ট্রের ৯ টি যুদ্ধ জাহাজ ২৩ মে পার্সীয়ান উপসাগরে প্রবেশ করেছে এবং মার্কিন বাহিনীর ডুইয়টি ডি আইসেন হাওয়ার নামক বিমানবাহী যুদ্ধ জাহাজের সঙ্গে বিমান যুদ্ধসহ বিভিন্ন ধরনের প্রশিক্ষণ করেছে । এটা হচ্ছে ২০০৩ সালে ইরাক যুদ্ধ ঘটার পর উপসাগরীয় অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের বৃহত্তম সামরিক মহড়া । ১০ জুন ইরানের নিরাপত্তা মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা সতর্ক করে বলেছেন, মধ্য-প্রাচ্য অঞ্চলে মার্কিন বাহিনীর সকল সামরিক ঘাঁটি ইরানের ক্ষেপণাস্ত্রের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে ।

    সংবাদমাধ্যম মনে করে এ পরিস্থিতিতে ইরান এবং ই.ইউ.'র মধ্যে পুনরায় বৈঠক করার অর্থ হচ্ছে দু'পক্ষের আলোচনার মাধ্যমে মতভেদ সমাধান করার ইচ্ছা পরিত্যাগ করা হয় নি । কিন্তু সত্যিকারভাবে এ সমস্যা সমাধান করলে বিভিন্ন পক্ষের যথেষ্ট আন্তরিকতা ও ধৈর্য্যের প্রয়োজন হবে ।