সাংস্কৃতি ও শিক্ষা সহযোগিতা
১৯৭৯ সালের নভেম্বর মাসে, চীন ও বাংলাদেশ সরকারি সাংস্কৃতিক সহযোগিতা চুক্তি স্বাক্ষর করে। এর পর প্রতি তিন বছরে একবার চীন সফর যোগাযোগ সংক্রান্ত কার্যকর চুক্তি স্বাক্ষর করে। চুক্তি স্বাক্ষর করার পর, দু'দেশ সংস্কৃতি ও ক্রীড়াসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে যোগাযোগ ও সহযোগিতা অব্যাহতভাবে জোরদার করেছে এবং দু'দেশের দল ও সংস্থা অনেক বার সফরবিনিময় করেছে। ১৯৯৫ সালের প্রথম দিকে, চীন সরকারের সাংস্কৃতিক প্রতিনিধিদল বাংলাদেশ সফর করেছে এবং দু'দেশের ১৯৯৫—১৯৯৭ সালের সাংস্কৃতিক যোগাযোগ সংক্রান্ত কার্যকর চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। ১৯৯৮ সালে, চীনের হাংচৌ কিশোর-কিশোরী অ্যাক্রোব্যাটিকদল বাংলাদেশে গিয়ে শো' পরিবেশন করে। সারা বছর দু'দেশ সাংস্কৃতি শিল্প, বেসরকারী সংস্থার সাংস্কৃতিক যোগাযোগ মোট ৭ বার এবং ৪৭জন এতে অংশ নিয়েছেন। ১৯৯৯ সালে বাংলাদেশ সরকারের সংস্কৃতি প্রতিনিধিদল চীন সফর করেছে। দু'দেশ ১৯৯৮—২০০০ সালে সাংস্কৃতিক যোগাযোগ সংক্রান্ত কার্যকর চুক্তি স্বাক্ষর করে। বাংলাদেশের শিল্প দল ও চীনের অ্যাক্রোব্যাটিকদল সফরবিনিময় করেছে। চীনের জাতীয় পুরাকীর্তি নিদর্শন ব্যুরো বাংলাদেশকে এক লাখেরও বেশী ইউয়ানের পুরাকীর্তি নিদর্শনের পুনরুত্পাদন দিয়েছে। দু'দেশের সাংস্কৃতিক যোগাযোগ তত্পরতা মোট ১০ বার এবং এতে ৬৩জন অংশ নিয়েছেন। ২০০১ ও ২০০২ সালে, বাংলাদেশের শিল্পীদল চীনে এসে আলাদা আলাদাভাবে 'পেইচিং-এ নিয়োগ' ও পঞ্চম এশীয় শিল্প দিবসে অংশ নেন। ২০০২ সালের জানুয়ারী মাসে, প্রধানমন্ত্রী চু রোংচি বাংলাদেশ সফরকালে দু'দেশের মধ্যে ২০০১—২০০৩ সালের সাংস্কৃতিক যোগাযোগ সংক্রান্ত কার্যকর চুক্তি স্বাক্ষর করেন। একই মাসে ছোংছিং-এর শিশু অ্যাক্রোব্যাটিকদল বাংলাদেশে গিয়ে শোপরিবেশন করেছে। ২০০৩ সালে চীনের জাতীয় গণ-কংগ্রেসের স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান চিয়া ছিংলিন বাংলাদেশ আনুষ্ঠানিক সফর করেন। দু'দেশ 'চীন-বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক সহযোগিতা চুক্তি ২০০৪—২০০৬ সালের কার্যকর চুক্তি' স্বাক্ষর করে। ২০০৪ সালের জানুয়ারী মাসে, চীন সরকারের সাংস্কৃতিক প্রতিনিধিদল বাংলাদেশ সফর করে। আগস্ট মাসে, বাংলাদেশের শিল্পীদল চীনে 'ষষ্ঠ এশীয় শিল্প দিবসে' অংশ নেয়। ২০০৫ সালের এপ্রিল মাসে, চীন-বাংলাদেশ কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার ৩০ তম বার্ষিকী উপলক্ষে, চীনের শিল্পীদল বাংলাদেশ সফর করে। মে মাসে, বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক প্রতিনিধদল চীন সফর করে।
শিক্ষাদান ক্ষেত্রে চীন ও বাংলাদেশ এখনও কোনো যোগাযোগ চুক্তি স্বাক্ষর করেনি। বর্তমানে চীন-বাংলাদেশ ২০০৪—২০০৬ সালের সংস্কৃতির চুক্তি কার্যকর করা হচ্ছে। ১৯৭৬ সাল থেকে দু'দেশ ছাত্রছাত্রী বিনিময় করছে। ২০০৪ সাল পর্যন্ত চীন মোট ২শ' ৭০জন বাংলাদেশী ছাত্রছাত্রী গ্রহণ করেছে। ২০০৫ সালের এপ্রিল মাসে, চীন ২০০৬/২০০৭ বছর থেকে প্রতি বছর বাংলাদেশের জন্য ৫০জন ছাত্রছাত্রীকে বৃত্তি প্রদানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। জুন মাসে, চীনের জাতীয় চীনা ভাষা অফিস বাংলাদেশের নর্থ-সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় কনফুসিয়াস ইন্সটিটিউট প্রতিষ্ঠার চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। ২০০৬ সালের ফেব্রুয়ারী মাসে, কনফুসিয়াস ইন্সটিটিউট আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়।
১৯৮৬ সালে, বাংলাদেশ সরকার পেইচিং নম্বর ১ প্রাথমিক স্কুলের অট্রালিকা নির্মাণ করার জন্য চাঁদা দিয়েছে। এর পর, স্কুলের নাম 'চীন-বাংলাদেশ মৈত্রী প্রাথমিক স্কুল' পরিণত হয়।
২০০৫ সালের মে মাসে, পেইচিং-খুনমিং-ঢাকা সরাসরি ফ্লাইট চালু হয়। আগস্ট মাসে, খুনমিং ও বাংলাদেশের চট্টগ্রাম মৈত্রী শহর সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করে।
সামরিক যোগাযোগ ও সহযোগিতা
চীন-বাংলাদেশ কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার পর, দু'দেশের সামরিক সহযোগিতা ঘনিষ্ঠ হয়। দু'দেশের সামরিক নেতৃবৃন্দের সফরবিনিময় মাঝে মাঝে চলে। যাতে দু'দেশের বাহিনীর বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক উন্নয়ন ত্বরান্বিত করা যায়।
|