v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2007-06-06 18:40:22    
আবহাওয়ার পরিবর্তন থেকে সৃষ্ট ক্ষয়ক্ষতি কমানোর প্রচেষ্টা চালাতে হবে--জাতিসংঘ

cri
    ৫ জুন বিশ্ব পরিবেশ দিবস । এই দিন জাতি সংঘের উদ্যোগে জেনেভায় প্রাকৃতিক দুর্যোগেরক্ষয়ক্ষতি কমানো সংক্রান্ত একটি আন্তর্জাতিক অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয় । অধিবেশনে গোটা বিশ্বের আবহাওয়া পরিবর্তনের পরিপ্রেক্ষিতে দুর্যোগ প্রতিরোধ ও ক্ষয়ক্ষতি কমানোর নতুন পরিস্থিতি মোকাবেলা ও কার্যকর ব্যবস্থা নেয়ার বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে ।

    জাতিসংঘের সংস্থাগুলোর কর্মকর্তারা , এন জি ও সংস্থাগুলোর প্রতিনিধিরা , প্রযুক্তিবিদরা এবং শতাধিক দেশের সরকারী প্রতিনিধিরা এ অধিবেশনে অংশ নিয়েছেন । জাতিসংঘ মানবিক ত্রাণ বিষয়ক সহকারী মহাসচিব জন হোমেস অধিবেশনে বলেছেন , এ বছর জাতিসংঘ সংস্থার প্রকাশিত বায়ুমন্ডলে তাপমাত্রা বৃদ্ধি সম্পর্কিতগবেষণা রির্পোটে বলা হয়েছে , গোটা পৃথিবীর আবহাওয়া পরিবর্তন হচ্ছে , বায়ুমন্ডলের তাপমাত্রা আগের চেয়ে বাড়ছে । এটা একটা বাস্তব সত্য , এতে সংশয়ের কিছু নেই । এ অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে প্রাকৃতিক দুর্যোগ প্রতিরোধ ও ক্ষয়ক্ষতি কমানো আরো জরুরী হয়ে পড়েছে । মানব জাতির উচিত সময় নষ্ট না করে প্রাকৃতিক দুর্যোগের ক্ষয়ক্ষতি নিম্নতম মাত্রায় কমানোর জন্য বাস্তব ব্যবস্থা নেয়া এবং আবহাওয়ার পরিবর্তন জনিত ক্ষতিকর প্রভাব দূর করার প্রচেষ্টা চালানো ।

    জাতিসংঘের প্রস্তাবে বলা হয়েছে দুই দিক থেকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের দুর্যোগ প্রতিরোধ ও ক্ষয়ক্ষতি কমানোর প্রচেষ্টা চালানো উচিত ।

    প্রথম দিক হলো মানব জাতির আবাসিক পরিবেশ আরো নিরাপদ করে তোলা এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগ প্রতিরোধ করা । একটি পরিসংখ্যান থেকে জানা গেছে , গত বছর সারা বিশ্বে খরা , ঝড়বৃষ্টি , বন্যা , সুনামি ও ভূমিকম্পসহ নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত লোকের সংখ্যা দাড়িয়েছিল ১৩.৪ কোটি । সাম্প্রতিক বছরগুলোতে প্রাকৃতিক দুর্যোগ ঘন ঘন ঘটছে । ত্রিশ বছর আগের তুলনায় সাম্প্রতিক বছরগুলোর প্রাকৃতিক দুর্যোগ তিন গুন বেশি , দুর্গতের সংখ্যা ত্রিশ বছরের আগের চেয়ে পাঁচগুন বেশি । বিশ্বে যে দশটি শহরের লোকসংখ্যা সবচেয়ে বেশি , তাদের মধ্যে ছয়টি সমুদ্রের পাশে অবস্থিত । এ দশটি শহর হলো মুম্বাই , ইস্তামবুল, সাংহাই , মেক্সিকো শহর , পোগোটা , জাকার্তা ও ম্যানিলা । এ সব শহরের লোকসংখ্যা এখনও বৃদ্ধি পাচ্ছে । ২০২০ সালে এ সব শহরের লোকসংখ্যা দ্বিগুন হবে । বায়ুমন্ডলে তাপমাত্রা ও সমুদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে এ সব শহর ভূমিকম্প , ভূমিধস ও সমুদ্রে ডুবে যাওয়ার আশংকাও বৃদ্ধি পাচ্ছে । কাজেই এ সব শহরের নির্মানকাজে আবহাওয়া পরিবর্তনের উপাদান বিবেচনা করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান , বসতবাড়ি ও শহরের কেন্দ্রস্থলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার ব্যবস্থা নিতে হবে ।

    দ্বিতীয় দিক হলো মানব জাতির অর্থনৈতিক গঠনকাজের সুফল রক্ষা করা এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগের ক্ষয়ক্ষতি কমানো । একটি পরিসংখ্যান থেকে জানা গেছে , সারা বিশ্বে প্রতি বছর প্রাকৃতিক দুর্যোগের প্রত্যক্ষ ক্ষতি ৩৫ বিলিয়ন ডলার । এক আকস্মিক প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে সৃষ্ট ক্ষয়ক্ষতি অত্যন্ত গুরুতর । ১৯৯৮ সালে হন্ডুরাসে ঘটিত ঘুর্নিঝড় থেকে সৃষ্ট ক্ষয়ক্ষতি এ দেশের মোট জিডিপির ৪১ শতাংশ । ২০০৪ সালে ভারত মহাসাগরে ঘটিত সুনামি থেকে সৃষ্ট ক্ষয়ক্ষতি সেই বছর মালদ্বীপের জিডিপির দুই তৃতীয়াংশ ছিল । জাতিসংঘ বিভিন্ন দেশের প্রতি প্রাকৃতিক দুর্যোগ পূবার্ভাস ব্যবস্থা নেয়া এবং সমুদ্র উপকূলীয় অঞ্চলের অবকাঠামো নির্মান জোরদার করার নির্দেশ দিয়েছে।

    প্রাকৃতিক দুর্যোগের ক্ষয়ক্ষতি কমানোর ক্ষেত্রে জাতিসংঘ বিভিন্ন দেশের প্রতি হিওগো ফ্রেমওয়ার্কসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দলিল কার্যকরী করার দাবী জানিয়েছে । ২০০৫ সালে বিশ্ব প্রাকৃতিক দুর্যোগের ক্ষয়ক্ষতি কমানো সম্মেলন জাপানের হিওগো শহরে অনুষ্ঠিত হয় । সম্মেলনে পরবর্তী দশ বছরে সারা বিশ্বে প্রাকৃতিক দুর্যোগের ক্ষতি কমানোর নীল নক্সা প্রণয়ন করা হয় এবং ২০০৫ সাল থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত এ কাজের কৌশলগত লক্ষ্য ও পাঁচটি প্রধান কর্তব্য স্থির করা হয় । বিশ্বের ১৬৮টি দেশ ইতিমধ্যে জাতিসংঘের এই দলিল অনুমোদন করেছে এবং এই দলিল বাস্তবায়নের ব্যবস্থা নিচ্ছে ।