v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2007-06-07 16:05:30    
ছাংতাও পর্যটন শিল্পের প্রাণচঞ্চলকর উন্নয়ন

cri
   আপনারা জানেন, পর্যটন স্থানগুলোয় বেড়ানোর সময় সুন্দর সুন্দর দৃশ্য দেখার পাশাপাশি তা খুব সম্ভবত পুঁজি বিনিয়োগের নতুন লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হবে । আজকের অনুষ্ঠানে আমাদের সংবাদদাতা আপনাদের ছাংতাও পর্যটন শিল্পের প্রাণচঞ্চলকর উন্নয়নের কথা জানাবেন ।

    ছাংতাও হচ্ছে চীনের পূর্বাঞ্চলের শানতুং প্রদেশের ইয়ানথাই শহরের একটি জেলা, তা হুয়াংহাই সমুদ্র এবং বোহাই সমুদ্রের মিলন অঞ্চলে অবস্থিত এবং থিয়েনচিন , তা লিয়ান ও ইয়ান থাই তিনটি শহরকে যুক্ত করেছে সীরুটের মাধ্যমে । এর পাশাপাশি সেখানে ৩২টি ছোট দ্বীপও রয়েছে, পানীয় আকার আয়তন ৮৭০০ বর্গকিলোমিটার, বেলাভূমি লাইনের দৈর্ঘ্য ১৪৬ কিলোমিটার । সেখানকার আবহাওয়া আরামদায়ক, দৃশ্য অতি সুন্দর এবং দ্বীপাঞ্চলেরবৈশিষ্ট্যসম্পন্ন সংস্কৃতি রয়েছে । তা হচ্ছে গ্রীষ্মকালে পর্যটকদের ছুটি কাটানো একটি শ্রেষ্ঠ পর্যটন স্থান।

     ১৯৮৬ সালে ছাংতাও আনুষ্ঠানিকভাবে উন্মুক্ত হয়েছে এবং তার পর্যটন শিল্পও শুরু হয়েছে । পর্যটকদের সংখ্যা বার্ষিক ২০ শতাংশ গতিতে বৃদ্ধি পাচ্ছে । অসম্পূর্ণ এক পরিসংখ্যান অনুযায়ী প্রত্যেক বছর পর্যটকদের সংখ্যা ১০ লাখ পার্সন টাইমস । এর পাশাপাশি ছাংতাও হল চীনের শ্রেষ্ঠ সামুদ্রিক খাবারের উত্পাদন কেন্দ্র, নানা ধরনের সামুদ্রিক খাবার প্রধানত চীনের দক্ষিণাঞ্চল ও শানতুং প্রদেশের বিভিন্ন শহরে বিক্রি হয় ।

    ছাংতাও দ্বীপের পর্যটন শিল্পের অব্যাহত উন্নয়নের পাশাপাশি সেখানের উচ্চ পর্যায়ের হোটেল নির্মিত হয়েছে । ২০০৬ সালের ২০ মে বর্তমানে ছাংতাওয়ের বৃহত্তম তিন তারা পর্যায়ের হোটেল সেন্টি হোলিডেই হোটেল আনুষ্ঠানিকভাবে খোলা হয়েছে । ছাংতাওয়ের হোটেল পরিসেবার মান আরো উন্নত হয়েছে । হোটেলের সহকারী ম্যানাজার সুন পেং ফেই সংবাদদাতার সাক্ষাত্ দেয়ার সময় হোটেলের তথ্য জানিয়েছেন । তিনি বলেছেন, ২০০৬ সালের ২০ মে আমাদের হোটেল খোলা হয়েছে । এর আয়তন ৩ হেক্টর, পুঁজি বিনিয়োগ করা হয়েছে ৩ কোটি ইউয়ান, স্থাপত্যবস্তুর আয়তন ১৫ হাজার বর্গমিটার, রুমের সংখ্যা ২২৩টি এবং ৩০০জন পর্যটক এখানে একসাথে বসবাস করতে এবং খেতে সক্ষম ।

    হোটেলগুলোর খাবার পরিবেশনসহ থাকার ব্যাপারে পরিসেবার পাশাপাশি বিনোজনমূলক অনেক বিষয় এবং সভা আয়োজনের ব্যবস্থাও রয়েছে । যেমন কেটিভি, শরীর চর্চা কেন্দ্র দাবা খেলার ব্যবস্থা এবং সভা কক্ষ । প্রতি বছরের পয়লা মে শ্রমিক দিবস ও পয়লা অক্টোবর চীনের জাতীয় দিবসে সোনালী সপ্তাহ এবং জুলাই ও আগস্ট মাসের গ্রীষ্মকালের ছুটির সময় হলো এখানকার পর্যটনের ব্যস্ত সময়পর্ব ।

    পর্যটন ব্যস্ত সময়পর্বে পরিসেবা প্রদান সম্পর্কে হোটেলের রেঁস্তোরা বিভাগের পরিচারিকা মিস হুয়াং ওয়েই লিন বলেছেন, প্রতি বছরের পয়লা মে শ্রমিক দিবসে সোনালী সপ্তাহে আমাদের কাজ সবচেয়ে বেশি থাকে । অনেক লোকজন এখানে ভ্রমণে আসেন ,তখন আমাদের হোটেলের কোন কক্ষই খালি থাকে না ।

    হোটেলের অবসর সময়ের ব্যবসা ও উন্নয়ন সম্পর্কে সহকারী ম্যানাজার সুন আমাদের সেন্টি হোলিডে হোটেলের বিশেষ পর্যটন গৃহায়ন প্রকল্প সম্পর্কে বিস্তারিত বলেছেন । গৃহায়ন প্রকল্পের অর্থ হল হোটেলের ২২৩টি অধিকাংশ রুমই পুঁজি বিনিয়োগকারীদের কাছে বিক্রি করা হয়েছে এবং প্রতি বছর রুম বিক্রির দামের ৫ শতাংশ পুঁজি বিনিয়োগকারীদের মুনাফা হিসেবে তাঁদের দেয়া হয় । তিনি বলেছেন, আমাদের হোটেল ইউয়েইয়াওয়ান অথবা অর্ধচন্দ্রকার উপকূলের কাছে অবস্থিত, জানালা খোলার পরই সমুদ্রের দৃশ্য দেখতে পাবেন । এর পরিবেশ খুবই মনোরম । তা বয়সী লোকজন এবং ব্যবসায়ীদের জন্য ছুটি কাটানোর জন্য মোক্ষম । গ্রীষ্মকালে এখানে এসে দুই এক মাস বথেকে যান , তা হবে খুবই আরামদায়ক । বর্তমানে আপনারা ৭০ হাজার ইউয়ান দিয়ে আমাদের ৩০ বর্গমিটারের একটি রুম কিনতে পারেন । প্রকৃতির পাশাপাশি দেখা সমুদ্র দেখা দুই ধরনের রুমই পাওয়া যায় । তা লোকজনের পুঁজি বিনিয়োগ এবং বৃদ্ধ বয়সী লোকজনের ছুটি কাটানোর জন্য সহায়ক । আপনারা কিশতিতে পরিশোধের মাধ্যমে আমাদের রুম কিনতে পারেন । আমাদের হোটেলের মতো গৃহায়ন এবং পর্যটন শিল্পের সঙ্গে সংযুক্ত করা প্রকল্প এ অঞ্চলে তেমন একটা নেই । বর্তমানে আমাদের হোটেলের অনেক রুমই বিক্রি হয়ে গেছে । আমাদের লক্ষ্যবস্তু বাস্তবায়িত হয়েছে ।

    এর পাশাপাশি আমাদের সংবাদদাতা পেইচিং থেকে আসা পর্যটক মিস্টার লিউ সাক্ষাত্ নিয়েছেন । তিনি বলেছেন, আমি এখানে তিন দিন এসেছি । প্রথমদিন আবহাওয়া ভালো ছিল না, সুর্যও ওঠে নি । দ্বিতীয় দিন সুর্য উঠার পর আমি বাইরে বেড়াতে যাই । এখানকার বেলাভূমি নুড়ি দিয়ে গঠিত ,বায়ুও খুবই পরিস্কার । সন্ধ্যায় বাইরের আকাশে অনেক সুন্দর তারা দেখতে পাই এবং আতশবাজিও করতে পারি ,আমার খুব ভালো লাগে । সুযোগ পেলে আমি অবশ্যই এখানে আবার আসবো ।

    তারা পর্যায়ের হোটেল ছাড়া জেলেদের বাসায় বসবাস করাও ছাংতাও দ্বীপের পর্যটন শিল্পের একটি বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন বিষয় । যদি আপনার দ্বীপের জেলেদের জীবনযাত্রা জানতে চান, তাহলে জেলেদের বাসায় বসবাস করতে পারেন । সাধারণত দ্বীপের জেলেরা নিজেদের বাসার কয়েকটি রুম পরিপাটি করে সাজায়ে পর্যটনের ব্যস্ত সময়ে নানা অঞ্চল থেকে আসা পর্যটকদের পরিসেবা দেন । আপনারা জেলেদের স্ত্রীর রান্না করা সুস্বাদু সামুদ্রিক খাবার খেতে পারেন এবং জেলেদের সঙ্গে সমুদ্রে গিয়ে মাছও ধরতে পারেন । সন্ধ্যায় বন্ধুদের সঙ্গে ক্যাম্পফায়ারের মাধ্যমে জেলেদের মাছ ধরার গল্প শুনতে সামুদ্রিক খাবার খেতে, জেলেদের গান শুনতে এবং বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন জেলে সংস্কৃতিকে উপভোগ করতে পারবেন । বেশির ভাগ পর্যটকই ছাংতাও'র সুন্দর দৃশ্য পছন্দ করেছেন ।

    জানা গেছে, ২০০৬ সালের শেষ নাগাদ ছাংতাও'র বেশির ভাগ পর্যটকই চীনা অধিবাসী । ২০০৭ সালে তা ধীরে ধীরে বিদেশী পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত হয়েছে । সুন্দর দৃশ্য ও বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন জেলে সংস্কৃতি ভবিষ্যতে আরো বেশি পর্যটকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করবে ।