v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2007-06-01 18:39:39    
ই.ইউ ও ইরানের পারমাণবিক আলোচনা ফলহীন(ছবি)

cri

    ৩১ মে স্পেনের রাজধানী মাদ্রিদে ইরানের পারমাণবিক আলোচনার শীর্ষ প্রতিনিধি , সর্বোচ্চ জাতীয় নিরাপত্তা কমিটির সচিব আলি লারিজানি ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের কূটনীতি ও নিরাপত্তা নীতি বিষয়ক উর্ধ্বতন প্রতিনিধি জাভিয়ের সোলানার মধ্যে সাড়ে চার ঘন্টা স্থায়ী বৈঠক হয়েছে। কিন্তু দু'পক্ষ ইরানের পারমাণবিক সমস্যার অচলাবস্থা ভেঙ্গে দিতে পারে নি।

    বৈঠকের পর অনুষ্ঠিত যৌথ সংবাদ সম্মেলনে সোলানা অবশ্য বৈঠকের নির্দিষ্ট অবস্থা জানান নি। তিনি কেবল সংক্ষেপে বলেছেন, বৈঠকে কিছু অগ্রগতি অর্জিত হয়েছে। সোলানা বলেছেন, এবারের বৈঠকের পরিবেশ ছিল সুষ্ঠু ও ইতিবাচক। কিন্তু সংবাদদাতা ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ তত্পরতা অস্থায়ীভাবে বন্ধ করা সংক্রান্ত প্রশ্ন করলে সোলানা স্বীকার করেন যে, এই "গুরুত্বপূর্ণ সমস্যায়" দু'পক্ষের আলোচনায় "কোন গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি অর্জিত হয় নি। লারিজানি সরাসরি বলেছেন যে, ইরান ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ তত্পরতা বন্ধ করবে না।

    যদিও বৈঠকে কোন বাস্তব সফলতা অর্জিত হয় নি। তবুও দু'পক্ষ আলোচনা অব্যাহত রাখার দ্বার বন্ধ করে নি। সোলানা বলেছেন, ই.ইউ ইরানকে কিছু নতুন প্রস্তাব দিয়েছে। দু'পক্ষ দু'সপ্তাহের মধ্যে আবার বৈঠক করবে এবং অব্যাহতভাবে আলোচনা করবে।

    বিশ্লেষকরা মনে করেন, গত ২৫ এপ্রিল লারিজানি ও সোলানা তুরস্কের আংকারায় একবার বৈঠক করেছেন, কিন্তু কোন অগ্রগতি অর্জিত হয় নি। এবারের বৈঠকের অবস্থা দেখে বুঝা যায় যে, ইরান পারমাণবিক পরিকল্পনা উন্নয়নের লক্ষ্যে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ও অবিচলিত। এক বা দু'বার আলোচনার মাধ্যমে ইরানের অবস্থান পরিবর্তন করা অসম্ভব। কিন্তু বর্তমানে ইরানের পারমাণবিক সমস্যার আরো অবনতি হওয়ার সম্ভাবনা বিবেচনা করে দু'পক্ষের আলোচনা বন্ধ করা হবে না।

    নিরাপত্তা পরিষদ গত ২৪ মার্চ ১৭৪৭ নং সিদ্ধান্ত অনুমোদন করেছে। সিদ্ধান্তে ইরানের পারমাণবিক পরিকল্পনা ও ক্ষেপণাস্ত্র পরিকল্পনার সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রের শাস্তি জোরদার করা হয়েছে। এবং ৬০ দিনের মধ্যে ইরানের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ তত্পরতা বন্ধ করার অনুরোধ জানানো হয়েছে। তা নাহলে ইরান আরো গুরুতর অবস্থার সম্মুখীন হবে। এখন এই সময়সীমা পার হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র একাধিক বার হুঁশিয়ার করেছে এবং নিরাপত্তা পরিষদ ইরানকে আরো কড়াকড়ি শাস্তি দেয়ার চেষ্টা করছে। এর পাশাপাশি উপসাগরীয় অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্র ইরাক যুদ্ধের পর বৃহত্তম নৌ বাহিনীর সমাবেশ ও মহড়া করেছে। অনুষ্ঠিতব্য জি-৮ শীর্ষ সম্মেলনে ইরানের পারমাণবিক সমস্যা নিয়ে আলোচনা হবে। তবে ইরান এ সকল অবস্থা দেখে আগের মতো শক্ত অবস্থান অবলম্বন করছে।

    এমন পরিপ্রেক্ষিতে ইরানের পারমাণবিক সমস্যা সমাধানের ক্ষেত্রে ই.ইউর ভূমিকা আরো লক্ষণীয় হয়েছে। ই.ইউ সর্বদাই আলোচনার মাধ্যমে শান্তিপূর্ণরুপে ইরানের পারমাণবিক সমস্যা সমাধানের পক্ষপাতী। ই.ইউ ইরানের বিরোধে সামরিক আক্রমণের বিরোধীতা করে। ই.ইউ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ও ইরানের মধ্যে যোগাযোগের একটি গুরুত্বপূর্ণ পথে পরিণত হয়েছে। ই.ইউ হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের শক্ত নীতির বিরুদ্ধে এক ধরণের বাস্তব সম্মত ভারসাম্যপূর্ণ শক্তি। এখন অব্যাহতভাবে আলোচনার বিষয়টি ই.ইউ ও ইরানের অভিন্ন বাছাই হওয়া উচিত। ইরানের ই.ইউর সঙ্গে আলোচনা করা এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে বিবাদ না করাই ভালো। ই.ইউর ইরানের সঙ্গে বৈঠক করার তাত্পর্য ইরানের পারমাণবিক সমস্যার চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। এটা আন্তর্জাতিক বিষয়ে ই.ইউর প্রভাব ফেলা ও নিজের বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন ভূমিকা পালনের একটি গুরুত্বপূর্ণ সুযোগে পরিণত হয়েছে।

    তবে বিশ্লেষকরা বলেছেন, আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের ভিত্তিতে ইরান সমস্যা আলোচনার গুরুত্বপূর্ণ দিকের সামান্য পরিবর্তিত হয়েছে। ২৭ বছর কূটনৈতিক সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন থাকার পর গত মাসের শেষ দিকে ইরাকের রাজধানী বাগদাদে যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের আনুষ্ঠানিক বৈঠক হয়েছে। যদিও বৈঠকে কেবল ইরাক সমস্যা নিয়েই আলোচনা হয়েছে। কিন্তু অনেক কূটনীতিবিদ মনে করেন, এবারের বৈঠক যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের প্রত্যক্ষ সংলাপের জন্য সূচনা করেছে। ইরানের পারমাণবিক সমস্যার দু'টি মূল পক্ষ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে সরাসরি সংলাপ করার পর ইরান যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনা করার ওপর বেশি গুরুত্ব দেবে। এ বিষয়টি ই.ইউ ও ইরানের আলোচনা ক্ষেত্রে যথাশীঘ্রই বাস্তব অগ্রগতি অর্জনের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলার সম্ভাবনা রয়েছে।