ইসরাইলের একজন সামরিক মুখপাত্র জানিয়েছেন, ২৪ মে ভোরে পশ্চিম তীরে অভিযান চালিয়ে হামাসের একজন মন্ত্রী সহ ৩৩ সিনিয়র নেতাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বতর্মানে গাজা অঞ্চলে ইসরাইলী বাহিনী ও ফিলিস্তিনী মুজাহিদদের মধ্যে সংঘর্ষ অব্যাহত রয়েছে। দু'পক্ষ যুদ্ধবিরতি বাস্তবায়ন প্রত্যাখ্যান করেছে। যার ফলে ফিলিস্তিন-ইসরাইল সহিংসতা তীব্রতর হয়ে উঠেছে।
ইসরাইলী বাহিনীর গ্রেফতারকৃত হামাসের কর্মকর্তা, শিক্ষা মন্ত্রী নাসেরদাইন আল-শেরের স্ত্রী বলেছেন, ইসরাইলী সৈনিকেরা তাদের বাস ভবনে সকালে থাক্কা মেরে কিছু বুঝে উঠার আগেই তারা তাঁর স্বামীকে আটক করে। তারা তাঁর স্বামীর কমপিউটারও ছিনিয়ে নিয়ে গেছে। এর সঙ্গে সঙ্গে নাব্রুস শহরের মেয়র ও উপ মেয়র সহ হামাসের ৩২ উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তাকে গ্রেফতার করা হয়।
এর পর এক বিবৃতিতে ইসরাইলী বাহিনী হামাসকে ' সন্ত্রাসী তত্পরতায়' সমর্থন ও উত্সাহ দেওয়ার নিন্দা করেছেন। ইসরাইলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী সিমন পেরেস ইসরাইলী বাহিনীর এই অভিযানের জন্য যৌক্তিকতা দিয়ে করে বলেছেন, গুলি ছুটার চাইতে গ্রেফতার করা অনেকটা ভাল। হামাসের এ সব সদস্যদের গ্রেফতার করার মাধ্যমে সশস্ত্র সংস্থার কাছে একটি সংকেত পাঠানো হয়েছে যে, ইসরাইলের উপর তাদের রকেট উতক্ষেপন অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে।
ফিলিস্তিন সরকার ও হামাসের কর্মকর্তারা ইসরাইলী বাহিনীর অভিযানের তীব্র নিন্দা করেছেন। ফিলিস্তিন সরকারের প্রধান মন্ত্রী ইসমাইল হানিয়েহের মুখপাত্র ২৪ মে ইসরাইলী সৈন্যবাহিনীর প্রতি হামাসের সদস্যাদেরকে মুক্তি দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ইসরাইলী সেনাবাহিনীর এই অভিযানের ফলে মধ্য-প্রাচ্য অঞ্চলে একটানা সহিংসতা দেখা দেবে। এর পরিণতি ইসরাইলকে স্বীকার করতে হবে। এর সঙ্গে সঙ্গে হামাসের মুজাহিদ বাহিনী এক বিবৃতিতে ইসরাইলের উপর অব্যাহতভাবে রকেট হামলা চালানোর হুকুম দিয়েছে।
ফিলিস্তিন-ইসরাইল সহিংসতার অবনতি ঘটার পরিপ্রেক্ষিতে ইসরাইলের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি বাস্তবায়নের ব্যাপারে ফিলিস্তিনের অভ্যন্তরে মতভেদ দেখা দিয়েছে। গত ২৩ মে গাজা অঞ্চলে ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট আব্বাস এবং হামাসের নেতা, প্রধান মন্ত্রী হানিয়ার মধ্যে বৈঠক
হয়েছে। দু'জনের মধ্যে যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। কিন্তু বৈঠকে কোন ফলাফল অর্জিত হয়নি। ২৪ মে ইইউর পররাষ্ট্র ও নিরাপত্তা বিষয়ক উচ্চ পদস্ত প্রতিনিধি সোলানার সঙ্গে সাক্ষাতের পর আব্বাস বলেছেন, ফিলিস্তিনের সশস্ত্র সংস্থাকে অবিলম্বে তাদের হামলা বন্ধ করতে হবে। যাতে ইসরাইল ও ফিলিস্তিনের মধ্যে যুদ্ধবিরতি বাস্তবায়িত হয় এবং যুদ্ধ-বিরতি জর্দান নদীর পশ্চিম তীর অঞ্চলে সম্প্রসারিত হয়।অন্য দিকে , হামাস দাবি জানিয়েছে যে, ইসরাইলকে জর্দান নদীর পশ্চিম তীর ও গাজা অঞ্চলে একই সময় যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করতে হবে। । হামাসের উচ্চ পদস্ত কর্মকর্তা বলেছেন, জর্দান নদীর পশ্চিম তীরে ইসরাইলী সেনাবাহিনীর গ্রেফতার থেকে বুঝা যায় যে, যুদ্ধবিরতি সর্ম্পকে আব্বাসের দাবির কোন মূল্য নেই। তিনি জানিয়েছেন, যত দিন ইসরাইলের দখল শেষ না হয় , তত দিন ইসরাইলের উপর ফিলিস্তিনের সশস্ত্র সংস্থার রকেট হামলা অব্যাহত থাকবে।
ব তর্মানে যুদ্ধবিরিতিতে ইসরাইলের সদিচ্ছা দেখা দিচ্ছে না। ইসরাইলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মার্ক রেগেভ বলেছেন, যদি গাজায় যুদ্ধবিরতি বজায় রাখা যায়, তাহলে ইসরাইল তার যুদ্ধবিরতি জর্দান নদীর পশ্চিম তীরে সম্প্রসারনের বিবেচনা করবে। এর আগে ইসরাইলের পররাষ্ট্র মন্ত্রী বলেছেন, ইসরাইল যুদ্ধবিরিতিতে রাজি হবে না।
এখন পযর্ন্ত ,ইসরাইল-ফিলিস্তিন নতুন দফা সহিংসতায় ৫০জন ফিলিস্তিনী মারা গেছে।
|