v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2007-05-24 11:48:06    
বিস্ময়কর হুয়াংশান পাহাড়(ছবি)

cri

  হুয়াংশান পাহাড় হচ্ছে চীনের বিখ্যাত পর্যটন স্থানগুলোর মধ্যে অন্যতম এবং বিশ্বের সাংস্কৃতিক ও প্রাকৃতিক উত্তরাধিকার। হুয়াংশান পাহাড় পর্যটন অঞ্চলে নামকরা পাহাড় রয়েছে ৭২টি। চীনে একটি কথা আছে, "হুয়াংশান পাহাড় থেকে ফিরে এসে আর পাহাড় দেখতে চাই না।" তা শুনে বুঝা যায় যে, হুয়াংশান পাহাড়ের দৃশ্যের বৈশিষ্ট্য।

 চীনের অন্যান্য নামকরা পাহাড়গুলোর তুলনায় হুয়াংশান পাহাড়ের সর্বাধিক বৈশিষ্ট্য হচ্ছে পাহাড়ের উপরে দাঁড়ানো পাইন গাছগুলো। কয়েক শত মাইল দীর্ঘ পাহাড় সারির পাইন গাছগুলো বিশাল পাথরের মধ্যে মূল দিয়ে বড় হয়েছে। সবচেয়ে অবাক কান্ড হচ্ছে হুয়াংশান পাহাড়ের পাইন গাছগুলোর সূচি সবই উপর দিকে থাকে। তা দেখে প্রবল প্রাণশক্তি অনুভব করা যায়। হুয়াংশান পর্যটন অঞ্চলের প্রশাসনিক কমিটির দায়িত্বশীল কর্মকর্তা ওয়াং হাং লাই বলেছেন, "হুয়াংশান পাহাড়ের পাইন গাছগুলো সবই সমুদ্রসমতল থেকে ৮০০ মিটার উচু জায়গায় বাস করে। পাইন গাছগুলোর সূচি ওপর দিকে থাকার কারন হচ্ছে সহজে বায়ুমন্ডলের পানি ও পুষ্টিকারক দ্রব্য আকর্ষণ করা যায়। "

 হুয়াংশান পাহাড়ে পাইন গাছ দেখার শ্রেষ্ঠ জায়গা হচ্ছে ইউপিং ভবন। এই ভবনের সামনে তিনটি বিখ্যাত পাইন গাছ আছে। "অতিথিদের অভ্যর্থনা " নামে পাইন গাছের বয়স কমপক্ষে ৮০০ বছর। তার সবুজ শাখা হাত দেয়ার মতো অতিথিদের আন্তরিকতা দেখাচ্ছে। এখন এই পাইন গাছ হুয়াংশান পাহাড়ের পাইন গাছগুলোর প্রতিনিধিতে পরিণত হয়েছে।

 ইউপিং ভবনের সামনে "অতিথিদের সঙ্গী" নামে একটি পাইন গাছ দাঁড়িয়ে আছে। মনে হয় একটি বিশাল সবুজ ব্যক্তি সেখানে দাঁড়িয়ে পর্যটকদের সঙ্গে হুয়াংশান পাহাড়ের সুন্দর দৃশ্য উপভোগ করছে।

 "অতিথিদের বিদায়" নামক পাইন গাছ পাহাড়ের নিচের দিকে তার লম্বা হাত দিয়েছে। মনে হয়, পর্যটকদের সঙ্গে বিদায় জানাচ্ছে।

 হুয়াংশান পাহাড় পর্যটন অঞ্চলের প্রশাসনিক কমিটির দায়িত্বশীল কর্মকর্তা ওয়াং হাংলাই বলেছেন, হুয়াংশান পাহাড়ের বিশেষ গাছ হিসেবে এখানের ৫৪টি পাইন গাছ হুয়াংশান পাহাড়ের সঙ্গে বিশ্বের প্রাকৃতিক উত্তরাধিকার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। এই পাইনগাছগুলো সংরক্ষণের কাজ হচ্ছে হুয়াংশান পাহাড় পর্যটন অঞ্চলের কর্তৃপক্ষের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব।

 হুয়াংশান পাহাড়ের বিস্ময়কর পাইন গাছ দেখার পর , এবার আমি আপনাদেরকে সেখানকার আশ্চর্য পাথর দেখাবো। হুয়াংশান পাহাড়ের পাথরগুলো অধিকাংশই ১০ লাখ বছর আগের চতুর্থ তুষার যুগে সৃষ্ট হয়েছে। হুয়াংশান পাহাড়ের পাথরকে আশ্চর্য বলার কারণ হচ্ছে বিভিন্ন কোণ থেকে দেখে বিভিন্ন আকার মনে হয়।

 যেমন একটি জায়গার নাম "বানর সাগর দেখে"। দূর থেকে দেখে একটি বিশাল পাথরকে মনে হয়, ঠিক যেন একটি বানর পর্বতে বসে আছে। মনে হয়, সে সুদূরের মেঘ সাগর দেখছে।

 প্রতি বছর বিশ্বের বিভিন্ন জায়গা থেকে অনেক পর্যটক হুয়াংশান পাহাড়ে আসেন। যেমন মিঃ ওয়াং লি চাং শাংহাইয়ে জন্মগ্রহণ করেছেন , পরে ক্যানাডায় বসবাস করেন। হুয়াংশান পাহাড় হচ্ছে তাঁর স্বপ্নের জায়গা। তিনি বলেছেন, " ছোট বেলা থেকে আমার হুয়াংশান পাহাড়ে যাওয়ার ইচ্ছা ছিল। কিন্তু সুযোগ পাই নি। এবার সুযোগ পেয়েছি। আমি মনে করি, এটা হচ্ছে চীনা জাতির সংরক্ষিত শ্রেষ্ঠ সাংস্কৃতিক উত্তরাধিকার । আমি মনে করি, হুয়াংশান পাহাড় আর অন্যান্য জায়গার মধ্যে একটা ভিন্নতা রয়েছে। তা হচ্ছে হুয়াংশান পাহাড় খুব খাড়া। পাথরের মধ্যে পাইন গাছ জন্ম হয়।"

 জাপানী পর্যটক ইউকি সুয়নাগা সংবাদদাতাকে বলেছেন, জাপানী পর্যটকদের চীনের বিখ্যাত নদনদী ও পাহাড়ের প্রতি গভীর আগ্রহ আছে। এর মধ্যে হুয়াংশান ও পশ্চিম-দক্ষিণ চীনের সিছুয়ান প্রদেশের এমেই পাহাড় জাপানী পর্যটকদের সবচেয়ে পছন্দ । তিনি বলেছেন, "হুয়াংশান পাহাড় হচ্ছে একটি বিশেষ মনোরম জায়গা। জাপানীদের কাছে এর আকর্ষণ বেশি। জাপানীরা এ ধরনের ছবির মতো পাহাড় খুব পছন্দ করেন। আজ হুয়াংশানে এসে এখানকার পাথর, পাইন গাছ দেখে মুগ্ধ হয়েছি।"

 বলা যায়, বিস্ময়কর পাইন গাছ ও আশ্চর্য পাথর হচ্ছে হুয়াংশান পাহাড়ের হাজার বছরের অপরিবর্তনশীল দৃশ্য। কিন্তু হুয়াংশানের মেঘ-সাগরের দৃশ্য দেখা পুরোপুরি পর্যটকদের কপালের ব্যাপার। প্রতি বছর হুয়াংশানে প্রায় ২৫৬ দিন কুয়াশা থাকে। নভেম্বর থেকে দ্বিতীয় বছরের মে মাস পর্যন্ত হচ্ছে হুয়াংশানের মেঘ-সাগর উপভোগ করার শ্রেষ্ঠ সময়। বিশেষ করে বৃষ্টি বা তুষার পাতের পর এবং সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের আগে মেঘ সাগর সবচেয়ে সুন্দর। বৃটেনের লন্ডন থেকে আসা মিঃ জন পাসডেন এবারে মেঘ সাগর দেখতে পান নি। সত্যি পরিতাপের ব্যাপার। তবু তিনি বলেছেন, ভবিষ্যতে সুযোগ পেলে তিনি আবার হুয়াংশান পাহাড়ে আসবেন।

 তিনি বলেছেন, "হুয়াংশানে সুন্দর দৃশ্য ও টাটকা বাতাস আছে। এখানটি চীনের শ্রেষ্ঠ পর্যটন স্থানের মধ্যে অন্যতম। আমি মনে করি, আমি আরেকটি ঋতুতে আবার হুয়াংশানে আসবো। "