v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2007-05-22 17:46:15    
ভারত এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে পরমাণু চুক্তি সম্পর্কিত আলোচনার অচলাবস্থায় সম্মুখীন হচ্ছে

cri
    ভারত এবং যুক্তরাষ্ট্রের পরমাণু চুক্তি সম্পর্কিত আলোচনার মার্কিন পক্ষের প্রধান প্রতিনিধি, উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিকোলাস বার্নস এর এ সপ্তাহের মধ্যে ভারত সফরের কথা। পরিকল্পনা অনুসারে তিনি দু'দেশের আন্তঃসরকার বেসামরিক পরমাণু সহযোগিতার চুক্তি নিয়ে আলোচনা করবেন। কিন্তু এ পর্যন্ত তাঁর ভারত সফর অনির্দিষ্টকালের জন্যে পিছিয়ে দেয়া হয়েছে। এর কারণ হচ্ছে চুক্তি প্রসঙ্গে ভারত এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে গুরুতর মতভেদ থাকা। আলোচনায় অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।

    ২০০৫ সালের জুলাই মাসে ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং-এর যুক্তরাষ্ট্র সফরকালে দু'দেশের মধ্যে পরমাণু সহযোগিতা শুরু হয়েছিলো। তখন দু'দেশ "বেসামরিক পরমাণু সহযোগিতার যৌথ বিবৃতি" প্রকাশ করেছিল। এর প্রধান বিষয় ছিল: যুক্তরাষ্ট্র ভারতকে বেসামরিক পরমাণু জ্বালানীসম্পদ ও প্রযুক্তি দেয়া এবং ভারত বেসামরিক ও সামরিক পরমাণু স্থাপনা আলাদা করা এবং বেসামরিক পরমাণু স্থাপনাকে আন্তর্জাতিক তত্ত্বাবধানে রাখার প্রতিশ্রুতি দেয়া। ২০০৬ সালের মার্চ মাসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বুশ ভারত সফর করেছিলেন। দু'দেশের কর্মকর্তারা ভারতের সামরিক ও বেসামরিক পরমাণু স্থাপনা আলাদা করার পরিকল্পনা প্রণয়ন করেছিলেন। ডিসেম্বর মাসে মার্কিন কংগ্রেসে ভারতের সঙ্গে পরমাণু সহযোগিতা চালানোর অনুমতি দেয়ার বিল গৃহীত হয়েছিল। এরপর দু'দেশ আন্তঃসরকার বেসামরিক পরমাণু জ্বালানীসম্পদ সহযোগিতার চুক্তি নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে আলোচনা শুরু করে। কয়েক দফার যোগাযোগের পর এখন হচ্ছে আগেকার প্রতিশ্রুতি সুনির্দিষ্টকরণের সময়। কিন্তু এখন দু'দেশের মধ্যে কিছু গুরুত্বপূর্ণ সমস্যায় মতভেদ দেখা দিয়েছে।

    দু'দেশের প্রধান মতভেদ পরমাণু পরীক্ষা ও বর্জ্যের বিরুদ্ধে আবার ব্যবস্থা নেয়া ও অন্যান্য প্রযুক্তির স্থানান্তর এবং পরমাণু উপকরণের স্থিতিশীল সরবরাহসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে রয়েছে। এদের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা হচ্ছে পরমাণু পরীক্ষা। যুক্তরাষ্ট্রের দাবি অনুসারে ভারত এককভাবে পরমাণু পরীক্ষা চালালে দু'দেশের পরমাণু সহযোগিতা বন্ধ হবে। এতে ভারত রাজী হয়েছে। কিন্তু ভারত দৃঢ়ভাবে বেসামরিক পরমাণু শক্তির সহযোগিতার সঙ্গে পরমাণু পরীক্ষাকে সংযুক্ত করার বিরোধিতা করে। ভারত মনে করে, পরমাণু পরীক্ষা চলানো হবে কিনা তা হচ্ছে তার সার্বভৌমত্বের ব্যাপার। এটি দু'দেশের আন্তঃসরকার চুক্তির বিষয় নয়। ভারতের আলোচনা কর্মকর্তা বলেছেন, ভবিষ্যতে আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি পরিবর্তন হলে ভারতকে পরমাণু পরীক্ষার মাধ্যমে প্রতিক্রিয়া জানাতে বাধ্য হতে হবে। যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, এভাবে করার কারণ হচ্ছে মার্কিন আইন-বিধি মেনে চলা। যুক্তরাষ্ট্রের ভারতের জন্যে তার গৃহীত আইন সংশোধন করা অসম্ভব। পরমাণু বর্জ্যের বিরুদ্ধে আবার ব্যবস্থা নিতে এবং সংশ্লিষ্ট প্রযুক্তির হস্তান্তর করতে যুক্তরাষ্ট্র স্পষ্টভাবেই অস্বীকার করে।

    ভারত এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে মতভেদ থাকার মূল কারণ হচ্ছে দু'দেশের কৌশলগত অণ্বেষা ভিন্ন। যুক্তরাষ্ট্র ভারতের সঙ্গে পরমাণু সহযোগিতা চালানোর ইচ্ছা হলো ভারতকে হাত করা। ভারতের জন্যে বড় দেশের মর্যাদা অন্বেষণ করা হচ্ছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দেশীয় কৌশল। তাই ভারত সামরিক ও বেসামরিক পরমাণু উন্নয়নের ক্ষেত্রে উচ্চাভিলাশী পরিকল্পনা প্রণয়ন করে বাস্তবায়ন করছে। ভারত আশা করে, যুক্তরাষ্ট্র এবং পরমাণু অস্ত্রধারী দেশগুলোর সঙ্গে পরমাণু চুক্তি স্বাক্ষরের মাধ্যমে বহিরাগত পরমাণু প্রযুক্তি ও জ্বালানীসম্পদ ব্যবহার করে নিজের পরমাণু পরিকল্পনা দ্রুততর করবে। পরমাণু পরিকল্পনার সুষ্ঠু সম্পন্ন সুনিশ্চিত করার জন্যে ভারত কোন বহিরগত নিষেধাজ্ঞার ব্যবস্থা গ্রহণ করবে না।

    বর্তমানে ভারত এবং যুক্তরাষ্ট্র যত তাড়াতাড়ি সম্ভব চুক্তির আলোচনা শেষ করার কথা বলছে। কিন্তু কখন মতৈক্যে পৌঁছাতে এ দু'দেশ সতর্কতার সঙ্গে ব্যবস্থা নিচ্ছে। ভারতের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলেছেন, ভারত তাড়াহুড়া করে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর করবে না।