২১ মে মিসর সফররত চীনের জাতীয় গণ কংগ্রেসের স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান উ পান কো কায়রোয় অনুষ্ঠিত চীন ও আফ্রিকার শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোর সহযোগিতা সম্মেলনে অংশ নিয়েছেন এবং ' মিলিতভাবে চীন-আফ্রিকা সহযোগিতার নতুন অধ্যায় সংযোজন করুন ' নামে একটি ভাষণ দিয়েছেন । তিনি তার ভাষণে চীন ও আফ্রিকার অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সহযোগিতায় শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোর সহযোগিতাকে প্রাধান্য দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন ।
২০০৬ সালের নভেম্বর মাসে আফ্রিকার ৪৮টি দেশের শীর্ষনেতারা চীন-আফ্রিকা সহযোগিতা ফোরামের পেইচিং শীর্ষ সম্মেলনে অংশ নেন । সম্মেলনে চীনের প্রেসিডেন্ট হু চিন থাও আগামী তিন বছরে আফ্রিকার সঙ্গে সহযোগিতা বাড়ানোর বাস্তব ব্যবস্থা ঘোষণা করেন । চেয়ারম্যান উ পান কুও তাঁর ভাষণে চীনের প্রতিশ্রুত ব্যবস্থাগুলোর কার্যকরী সম্পর্কে ব্যাখ্যা করে বলেছেন , চীন আফ্রিকার১৭টি দেশের সঙ্গে সাহায্য চুক্তি , ৬টি দেশের সঙ্গে সুবিধাজনক ঋণদান চুক্তি এবং ১৪টি দেশের সঙ্গে ঋণ মওকুফ চুক্তি স্বাক্ষর করেছে । চীন অন্য ১৯টি আফ্রিকান দেশের ৮১টি ঋণ মওকুফের কথা বিবেচনা করছে এবং এ বছরের শেষ দিকে মওকুফের কথা ঘোষনা করবে । যে সব অনুন্নত আফ্রিকান দেশ চীনের সঙ্গে কুটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করেছে , চীনে সেসব দেশের রপ্তানি পন্যের শুল্ক মুক্ত সুবিধা পাওয়া পন্যের সংখ্যা ১৯০টি থেকে ৪৪০টিতে বাড়ানো হয়েছে।
উ পান কোও বলেছেন , চীন ও আফ্রিকার অর্থনীতির মধ্যে পরিপূরকতা বেশি । দু পক্ষেরই সহযোগিতার ভিত্তি মজবুত । চীন- আফ্রিকা সহযোগিতা ফোরাম দু পক্ষের সহযোগিতা নিশ্চিত করে তুলবে । চীন ও আফ্রিকার সহযোগিতার ভবিষ্যত উজ্জ্বল । তিনি জোর দিয়ে বলেছেন , শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোর সহযোগিতাকে প্রাধান্য দিতে হবে । শিল্পপ্রতিষ্ঠান বাজার , পুঁজি বিনিয়োগ ও অর্থনৈতিক সহযোগিতার প্রধান শক্তি । শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোর সক্রিয় অংশগ্রহণের ভিত্তিতেই চীন-আফ্রিকা সহযোগিতা বাস্তবায়িত হবে এবং সহযোগিতার প্রাণশক্তি বাড়বে । আমি আশা করি চীন ও আফ্রিকার শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলো সমতা ও পারস্পরিক কল্যানের নীতি অনুসারে সহযোগিতা করে চীন-আফ্রিকা সহযোগিতা ফোরামের পেইচিং শীর্ষ সম্মেলনের ফলাফল বাস্তবায়নের প্রচেষ্টা চালাবে এবং চীন ও আফ্রিকার সহযোগিতার নতুন অধ্যায় সংযোজন করবে ।
আফ্রিকার শিল্প ও বাণিজ্য ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ এল মাসরী চীন আফ্রিকা সহযোগিতা ফোরামের পেইচিং শীর্ষ সম্মেলনের উচ্চ মূল্যায়ন করেন এবং চীন সরকারের ঘোষিত সহযোগিতা বাড়ানোর আটটি ব্যবস্থার প্রশংসা করেছেন । তিনি চীন ও আফ্রিকার শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোর সহযোগিতা সম্মেলনে বলেছেন, শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোর সহযোগিতা সম্মেলন চীন ও আফ্রিকার কৌশলগত সম্পর্ক উন্নয়ন তরান্বিত করবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য বাড়াবে। আমি মনে করি দক্ষিণ- দক্ষিণ সহযোগিতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ । চীন ও আফ্রিকার মিলিত প্রচেষ্টায় বিশ্বের এক তৃতীয়াংশ লোকসংখ্যা বিশিষ্ট চীন ও আফ্রিকায় অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও সমৃদ্ধি বাস্তবায়িত হবে।
চীন ও আফ্রিকার শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোর সহযোগিতা সম্মেলন উ পান কোর মিসর সফরের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কর্মসূচী । মিসরের প্রতিনিধি পরিষদের স্পীকার আহমেদ ফাথী সোরোর বলেছেন , আমরা চীন ও মিসরের সহযোগিতার ভবিষ্যত নিয়ে আশাবাদী । ২০১২ সালে চীন মিসরের বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশিদার হবে । তখন দুদেশের বাণিজ্যের পরিমান পাঁচ বিলিয়ন মার্কিন ডলার হবে। আমরা মিসরের শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোকে চীনে বিনিয়োগ করতে উত্সাহ দেবো । বর্তমানে চীনে মিসর ৪০টি প্রকল্পে বিনিয়োগ করেছে , বিনিয়োগের পরিমান পাঁচ কোটি মার্কিন ডলার ছাড়িয়েছে ।
মিসর সরকারের পদস্থ কর্মকর্তাগণ, মিসরে আফ্রিকার দেশগুলোর কুটনীতিকরা এবং আফ্রিকা ও চীনের প্রায় পাঁচশজন শিল্পপতি এই সহযোগিতা সম্মেলনে অংশ নিয়েছেন ।
|