v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2007-05-21 10:10:27    
চীনের " কৃত্রিম রোদসম্পদ" সংক্রান্ত গবেষণায় প্রাথমিকভাবে সাফল্য অর্জিত

cri
    রোদ হচ্ছে মানুষের বেঁচে থাকার জন্য জ্বালানীসম্পদের মধ্যে সর্বোচ্চ গুরুত্বপূর্ণ উত্স্য । এ সম্পর্কিত বৈজ্ঞানিক গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে যে, বাইরে ছড়ানো রোদের দ্বারা সৃষ্ট হাইড্রোজেন আইসাটোপ্ ডিউটিরিউম্ ও ট্রিটিউম্ এর দ্বারা অটেমেটিক নিউক্লিয়াস্ ফিউসন্ হওয়ায় সম্পর্কিত জ্বালানীসম্পদ। সুতরাং, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বিজ্ঞানীরা রোদের মতোই প্রচুর জ্বালানীসম্পদ সৃষ্টির উপায় খোঁজার চেষ্টা করছেন । যা মানুষের জীবনযাত্রায় ও উত্পাদনসহ নানা ক্ষেত্রে আরো বেশি জ্বালানীসম্পদ হিসেবে ব্যবহার করা যায়। যাতে মানুষের জ্বালানীসম্পদের অভাব জনিত সমস্যার সমাধান করা সম্ভব হয় । এ জন্য বিজ্ঞানীরা সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে গবেষণা ও পরীক্ষা নিরিক্ষ কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন । তাঁরা এ গবেষণাকে " কৃত্রিম রোদসম্পদ" সৃষ্টির পরীক্ষা বলে মনে করেন । সম্প্রতি চীন নিজস্বভাবে তৈরী একটি নতুন পর্যায়ের ফিউসন্ শক্তি সংক্রান্ত পারমাণবিক পরীক্ষার কাজ শুরু করেছে । এ পরীক্ষা বিশ্বে প্রথম আনুষ্ঠানিকভাবে চালু হওয়া বিভিন্ন দেশের বেসরকারী পারমাণবিক শক্তি সংক্রান্ত প্রযুক্তির উন্নয়ন এবং " কৃত্রিম রোদসম্পদ" এর স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য অনেক সহায়ক হয়েছে।

    গত ১০০ বছরের মধ্যে, মানুষ জ্বালানীসম্পদের গবেষণা ও ব্যবহারের ক্ষেত্রে শুধু-মাত্র তেল ও রসায়নিক জ্বালানী সম্পদের এক পক্ষীয় কাঠামো থেকে উন্নত তেল ও রসায়নিক জ্বালানীসম্পদ সৃষ্টির প্রধান হিসেবে বিবেচনার সঙ্গে সঙ্গে পারমাণবিক পানি শক্তির যৌথ উন্নয়নের বহুবিধ সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। পারমাণবিক শক্তি জ্বালানী সম্পদ পরিবারের একটি অন্যতম মাধ্যম হিসেবে তার অন্তর্ভূক্ত রয়েছে পারমাণবিক ফিসন্ ও ফিউসন্ শক্তি। বর্তমানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের স্থাপিত সব পারমাণবিক বিদ্যুত্ কেন্দ্রেই ফিউসনের মাধ্যমে পারমাণবিক শক্তিকে কাজে লাগানো হয়।

    সাম্প্রতিক বছরগুলোতে, চীন, যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, ফ্রান্স এবং রাশিয়াসহ অন্যান্য দেশগুলো ফিউসন্ শক্তি সংক্রান্ত পারমাণবিক পরীক্ষার উন্নয়নে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। চীনে এ নতুন পর্যায়ের ফিউসন্ শক্তি সংক্রান্ত গবেষণার কাজ ১৯৯৮ সালে শুরু হয় । এর মধ্যে মোট ২০ কোটি ইউয়ান রেন মিন পি'র পুঁজি বিনিয়োগ করা হয়েছে। চীনের বৈজ্ঞানিক বিভাগের অধ্যাপক ওয়ান ইউয়ান সি এ প্রকল্পটির প্রধান হিসেবে ফিশন্ ও ফিউসন্ এ দু'টি গুরুত্বপূর্ণ পারমাণিবক শক্তির পদ্ধতির কথা আমাদের সংবাদদাতাকে অবহিত করেছেন। ফিশন্ প্রযুক্তির চেয়ে ফিউসন্ প্রযুক্তি সম্পর্কিত পারমাণবিক শক্তির ওপর অপরিহার্য্য ভূমিকা রয়েছে । জ্বালানীসম্পদের দিক থেকে দেখা যায় যে, ফিশন্ পারমাণবিক শক্তির মধ্যে ইউরেনিয়ামের মজুদের পরিমাণ ফিউসন্ শক্তির চেয়ে খুবই কম। তিনি বলেন: " এখন পারমাণবিক ফিশন্ বিদ্যুত্ কেন্দ্রগুলোর জন্য সম্মুখীন একটি জটিল সমস্যা হচ্ছে পৃথিবীতে ইউরেনিয়ামের মজুদের মোট পরিমাণও তার ব্যবহার্য্য সময়সীমার মাত্র ৬০ বছর। তবে ফিউসন্ পারমাণবিক শক্তির উপযুক্ত সুযোগও আছে। তারা জ্বালানীসম্পদ সরাসরিভাবে সমুদ্র থেকে নিতে পারে। তাই মজুদের পরিমাণ বেশী থাকে।"

    পরিসংখ্যান থেকে জানা গেছে, এক কিলোগ্রামের সামুদ্রিক পানির মধ্যে ড্যিউটিরিউম্ পারমাণবিক শক্তির ব্যবহার্য্য পরিমাণ , তা পুরোপুরি ফিউসন্ পারমাণবিক প্রক্রিয়ায় মোট ৩০০ লিটার পেট্রোলের পরিমাণের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ । এ থেকে বুঝা যায় যে, ফিউসন্ পারমাণবিক শক্তিকে মোট ১০ বিলিয়ন বছরেরও বেশি সময় ব্যবহার করা সম্ভব হবে। কারণ, পৃথিবীতে শুধু সামুদ্রিক পানির মধ্যে মোট ৪৫ ট্রিলিয়ন টন ড্যিউটিরিউম্ আছে।

    নতুন পর্যায়ের ফিউসন্ সংক্রান্ত পারমাণবিক পরীক্ষার মধ্যে চীনে বেশ কিছু অগ্রগতিও অর্জিত হয়েছে। তবে এর ভিত্তিতে ফিউসন্ সংক্রান্ত রিএকটর স্থাপন করা হলে তার মাধ্যমে ধারাবাহিকভাবে বৈজ্ঞানিক ও পারমাণবিক প্রকল্প ক্ষেত্রের সমস্যার সমাধান করা যাবে। এসব সমস্যার সমাধান, তা যেমন , বিপুল বৈজ্ঞানিক শক্তির ওপর নির্ভর করে তেমনি এ ক্ষেত্রে প্রচুর আর্থিক সাহায্যও দরকার। এ ব্যাপারে শুধু-মাত্র একটি দেশ এককভাবে তা শেষ করতে পারবে না। এর ফলে বহু দেশের সহযোগিতা ও আলোচনায় একটি যৌথ মতৈক্যে পৌঁছানোর সম্ভাবনা রয়েছে। গতবছর , চীন, ভারত, রাশিয়া, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, যুক্তরাষ্ট্র এবং ই ইউ আনুষ্ঠানিকভাবে ১৯৮৫ সালে উপস্থাপিত " ইন্টারন্যাশনাল থামৌনিউক্লিয়্যার এক্সপেরিমেন্টাল রিএকটর " সংক্রান্ত পরিকল্পনা বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। চীনের বৈজ্ঞানিক বিভাগের উপপ্রধান বাই ছুন লি বলেছেন" এ ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক অন্যান্য প্রকল্প পদ্ধতির চেয়ে ভিন্নভর আমাদের এ প্রকল্পটি প্রথমবারের মতো চালু হলো। এটি " ইন্টারন্যাশনাল থামৌনিউক্লিয়্যার এক্সপেরিমেন্টল রিএকটর " সংক্রান্ত পরিকল্পনা ত্বরান্বিত করার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষামূলক প্লাটফর্ম তৈরী করেছে।"

    জানা গেছে, এখন চীনের এই প্রকল্পটি আন্তর্জাতিক বৈজ্ঞানিক সহযোগিতা পরিকল্পনায় অন্তর্ভূক্ত রয়েছে। এ পরিকল্পনার সংশ্লিষ্ট চুক্তি অনুযায়ী, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বিজ্ঞানীরা ইন্টারনেটের বিশেষ ভাটা-বেসের মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানতে পেরেছে । এ প্রকল্পটির সংশ্লিষ্ট প্রধান উ সুং থাও বলেছেন:" ৫০ বছর পর, এ প্রকল্পটি আমাদের সাধারণ পরিবারে ব্যবহার করা সম্ভব হবে। এখন, সারা বিশ্বে জ্বালানীসম্পদ ব্যবহারের ক্ষেত্রে তা একটু কম ব্যবহৃত হয়। তবে ভবিষ্যতে সব পারমাণবিক বিদ্যুত্ কেন্দ্র ফিউসন্ শক্তির মাধ্যমে কাজ করবে বলে অনুমাণ করা হচ্ছে।"