v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2007-05-16 21:06:09    
বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতের চীনে কর্মকালীন জীবন(ছবি)

cri

    বন্ধুরা, যারা নিয়মিত আমাদের অনুষ্ঠান শোনেন, তাদের কাছে আশফাকুর রহমানের নাম অবশ্যই অপরিচিত নয়। তিন বছর আগে তিনি পেইচিংয়ে এসে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব পালন শুরু করেন। গত কয়েক বছরে তিনি চীন ও বাংলাদেশের সম্পর্ক সার্বিকভাবে উন্নয়নের জন্য আপ্রাণ প্রচেষ্টা চালিয়েছেন এবং নানা ক্ষেত্রে প্রভূত সাফল্যও অর্জন করেছেন।

     এর আগে নানা সুযোগে আমাদের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে আপনারাও রাষ্ট্রদূত আশফাকুর রহমানের কণ্ঠ শুনেছেন। কারণ তিনি  চীনে থাকাকালীন আমাদের অনেক সাহায্য করেছেন এবং অনুষ্ঠানের মান উন্নয়নে পরামর্শীসহ সুযোগ-সুবিধাও দিয়েছেন।

    তার অবদানের কথা মনে করেই আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে, রাষ্ট্রদূত আশফাকুর রহমানের চীনে কর্মকালীন জীবন সম্পর্কে একটি বিশেষ অনুষ্ঠান প্রচার করবো।

    কারণ আমরা মনে করি, চীনের ওপর তাঁর অনেক ধারণা অনেক সমৃদ্ধ ও আন্তরিক প্রচেষ্টা নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয় । তাঁর অভিজ্ঞতার কথা শুনলে বাঙলা ভাষাভাষী বন্ধুদের ভালো লাগবে ও নিজেদের জ্ঞানকে আরো গভীরতর করতে পারবেন।

    পেইচিংয়ের বসন্তকালের একটি সুন্দর সকালে আমি ও ছালাউদ্দিন পেইচিং-এ বাংলাদেশ দূতাবাসে গিয়ে রাষ্ট্রদূতের সাক্ষাত্কার নিয়েছি। সাক্ষাত্কারে তাঁর একটি কথা আমার মনে গভীর ছাপ ফেলেছে। যখন আমি জিজ্ঞেস করি , রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব পালনকালে আপনার উদ্যোগে চীন ও বাংলাদেশের নানা ক্ষেত্রের সহযোগিতামূলক সম্পর্কের উন্নয়ন হয়েছে, এতে আপনি সন্তুষ্ট কিনা? তখন তিনি বলেছেন, সন্তুষ্ট বলাটা ঠিক হবে না, আমি খুশি, অত্যন্ত খুশি।

    আমার চোখে , তিনিই হচ্ছেন এমন একজন সফল ব্যক্তি যিনি কাজকর্মের চেয়ে নিজের কথা অনেক কম বলেন। তিনি কাজের মাধ্যমেই চীনের সঙ্গে অনেক বন্ধুত্বপূর্ণ স্থাপন করতে সক্ষম হয়েছেন।

   চীনের মহাপ্রাচীর সমিতির কর্তৃপক্ষের সঙ্গে তাঁর এক বিশেষ সুসম্পর্ক প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এবার তাঁর বিদায়ের জন্য মহাপ্রাচীর সমিতি পেইচিংয়ের সিমাইতাই মহাপ্রাচীরে একটি জাকজমকপূর্ণ বিশেষ বিদায় অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল। আমার মনে হয়, এমন গৌরব অর্জনকারী বিদেশী কূটনীতিবিদের সংখ্যা বেশি হবে না। অনুষ্ঠানের বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূতগণসহ পেইচিং এর সম্মানীয় ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।

    এ সমিতির স্থায়ী ভাইস-চেয়াম্যান মিঃ ডো ইয়াও হুই আবেগপূর্ণ কণ্ঠে আমাদের সংবাদদাতাকে বলেছেন, "বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত হিসেবে আশফাকুর রহমান সাহেব সবসময় গভীর আবেগ নিয়ে কাজ করেন। তিনি উষ্ণ উত্সাহের মধ্য দিয়ে মন ও প্রাণ ঢেলে সকল কাজ করেন। যা সত্যি সত্যিই আমাকে মুগ্ধ করেছে।"

    রাষ্ট্রদূত হচ্ছেন বিদেশে কর্মরত এক দেশের সর্বোচ্চ প্রতিনিধি। তাঁর কাজের সফলতা সরাসরি দু'দেশের সম্পর্কের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে। সেই জন্য রাষ্ট্রদূতের সাক্ষাত্কার নিতে গেলে দু'দেশের সম্পর্কের কথা অবশ্যই এড়ানো যায় না। রাষ্ট্রদুত আশফাকুর রহমানও প্রথম চীন ও বাংলাদেশের সম্পর্কের সার্বিক মূল্যায়ন করেছেন। অবশ্যই প্রথমে আসবে রাজনৈতিক সম্পর্কের কথা। এর মধ্যে তিনি বিশেষ করে তাইওয়ান, তিব্বত ও মানবাধিকার সমস্যায় দু'দেশের পরস্পরকে সমর্থন দেয়ার কথা উল্লেখ করেছেন ।

    দু'দেশের সম্পর্ক বলতে গেলে অর্থনৈতিক সম্পর্কও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় । যেমন দু'দেশের ব্যবসার দিক ও বিনিয়োগের দিক ইত্যাদি। সাক্ষাত্কারে রাষ্ট্রদূত চীনের বাংলাদেশের রপ্তানীর পরিমান বাড়ানোর ক্ষেত্রে তাঁদের সম্মুখীন সমস্যাগুলো ও বাংলাদেশের প্রাধান্য নিয়ে নিজের মন্তব্য করেছেন। এর মধ্যে তিনি কিছু প্রস্তাবও করেছেন। আমার মনে হয় , যারা চীনের সঙ্গে ব্যবসা করতে চানা, তাঁদের জন্য রাষ্ট্রদূতের কথাগুলো অনুকূল হবে।

    রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশের পণ্য চীনের বাজারে প্রবেশের জন্য অনেক চেষ্টা করেছেন। তিনি বিষেশ করে ঔষুধ ও টি-শার্টের উদাহরণ দিয়েছেন। আমার বিশ্বাস, তাঁর অভিজ্ঞতা শুনে আপনারা মুগ্ধ হবে।

    রাষ্ট্রদূতের উদ্যোগে সার্বিক সফলতার মধ্যে কুনমিংয়ের বিশেষ ভূমিকা রয়েছে। কুনমিং পার হয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে চীনের সরাসরি বিমান চলাচল বাস্তবায়নের পর থেকে কুনমিং ও বাংলাদেশের সম্পর্ক দিনে দিনে ঘনিষ্ঠ হয়েছে। তাই এই শহরের প্রতি রাষ্ট্রদূতের বিশেষ ভালো লাগার কারণ রয়েছে।

    কুনমিংয়ের প্রশংসার পাশাপাশি রাষ্ট্রদূত চীনের অন্যান্য কয়েকটি শহর , যেমন শাংহাই, কুয়াংচৌ, শিআন ও হংকংয়ের সংক্ষিপ্ত পরিচয়ও দিয়েছেন।

    রাষ্ট্রদূত চীনে নিজের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করার পাশাপাশি নিজ দেশের প্রচারের কথাও ভুলে যান নি। তাঁর কথা শুনে ও অভিব্যক্তি দেখে বুঝা যায়, তাঁর হৃদয়ে বাংলাদেশের প্রতি গভীর ভালোবাসা রয়েছে।