১৮৯৪ সালের ৫ অক্টোবর চীনের হুনান প্রদেশের ই চান জেলার তেনচিয়াওয়ান গ্রামে তেন চুন সিয়া জন্ম গ্রহনণ করেন । তিনি চীনের কমিউনিস্ট পার্টির একজন প্রবীণ নেতা ও শ্রমিক আন্দোলনের একজন বিখ্যাত নেতা ছিলেন। তেন চুন সিয়া চীনের কমিউনিস্ট পার্টির একজন তত্ত্ববিদ ও পন্ডিতও ছিলেন ।
১৯৩৩ সালের ১৫ মে তেন চুন সিয়া সাংহাইয়ে গ্রেপ্তার হন । একজন বিশ্বাসঘাতক শত্রুর কাছে তেন চুন সিয়ার আসল পরিচয় বলে দেয়। জেলখানায় তেন চুন সিয়া শত্রুর নিষ্ঠুর অত্যাচারে নতি স্বীকার করেন নি। জেলখানায় আটক পার্টি সদস্যদের সংগঠনের একজন প্রতিনিধি তেন চুন সিয়াকে জিজ্ঞেস করেন , জেলখানা ও বাইরের কমরেডরা আপনার জন্য চিন্তিত , আপনার কি কোনো পরিকল্পনা আছে ? তেন চুন সিয়া এই কথা শুনে আবেগের সঙ্গে বলেছেন , দয়া করে আপনি কমরেডদের জানাবেন , শত্রু আমার হাড় আগুনে পুড়িয়ে দিলেও আমি কমিউনিস্ট পার্টির প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা করবো না ।
জেলখানায় তেন চুন সিয়া জেলে আটক কমরেডদের পার্টি ও শ্রমিক আন্দোলনের ইতিহাস বর্ণনা করেন এবং মাকর্সবাদ-লেনিনবাদ আর পার্টি সদস্যের আদর্শ ব্যাখ্যা করেন । তেন চুন সিয়া তার জীবনের শেষ দিনে পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে একটি চিঠি লিখেছেন । তিনি তার শেষ চিঠিতে আবেগের সঙ্গে লিখেছেনঃ কমরেডরা ,আমি শীগ্রই ইউ হুয়া থাই সমাধিস্থলে যাচ্ছি । আপনারা অব্যাহতভাবে সংগ্রাম চালিয়ে যান , চূড়ান্ত বিজয় আমাদেরই !
১৯৩৩ সালের ২১ সেপ্টেম্বর ভোরবেলা তেন চুন সিয়া জেলখানায় শেষ বারের মতো কাপড় পরে ' কোমিনটাং নিপাত যাক ' ' চীনা কমিউনিস্ট পার্টি দীর্ঘজীবী হোক ' ' সমগ্র দেশের সর্বহারা এক হও ' প্রভৃতি শ্লোগান দিতে দিতে ফাঁসির মাঠে যান । মৃত্যুর আগে শত্রুরা তেন চুন সিয়াকে জিজ্ঞাসা করেন , আপনার কি কিছু বলার আছে ? তেন চুন সিয়া বললেনঃ তোমাদেরকে আমি একটা কথা বলতে চাই , আমরা কমিউনিস্টরা শ্রমিক কৃষকদের কল্যানের জন্য কাজ করি , তোমরা আমাকে হত্যা করছো , তাতে তোমাদের কি উপকার হবে ? কথাটি তোমরা রাতে ঘুমানোর সময় ভালো করে চিন্তা করে দেখো !
তেন চুন সিয়া আরো বেশি কথা বলবেন--এই ভয়ে শত্রুরা দ্রুততাকে হত্যা করার আদেশ দিলো । এইভাবে তেন চুন সিয়া নানচিংয়ের ইউ হুয়া থাইয়ে শত্রুর গুলিতে মৃত্যুবরণ করেন , মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল মাত্র ৩৯ বছর ।
|