v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2007-05-14 19:28:02    
ফিলিস্তিনের অভ্যন্তরীণ সংঘর্ষ পুনরায় ঘটেছে

cri
    ১৩ মে হামাস এবং ফাতাহ'র যোদ্ধাদের মধ্যে গাজা অঞ্চলে পুনরায় হিংসাত্মক সংঘর্ষ ঘটে । এতে ৪ জন নিহত হয়েছে । মার্চ মাসে জাতীয় যৌথ সরকার প্রতিষ্ঠার পর এটি হচ্ছে দু'পক্ষের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বর সংঘর্ষ ।

    ফিলিস্তিনের একজন নিরাপত্তা বিষয়ক কর্মকর্তা বলেছেন, ১৩ মে ভোরে হামাসের যোদ্ধারা উত্তর গাজা অঞ্চলের বেইত লাহিয়ায় ফাতাহ'র নেতৃত্বাধীন আল আক্সা মার্টিরস ব্রিগেডের দু'জন সৈন্যের ওপর হামলা চালালে দু'জন সৈন্যই নিহত হয়। এর কয়েক ঘন্টা পর ফাতাহ'র একজন যোদ্ধা গাজার একটি মসজিদের ওপর হামলা চালালে হামাসের দু'জন যোদ্ধা নিহত এবং দশ জনেরও বেশি আহত হয়েছে । তা ছাড়া , দু'পক্ষের যোদ্ধাদের মধ্যে ফাতাহ'র একজন সদস্যের শবসত্কার অনুষ্ঠানে সংঘর্ষ হলে ৩ জন আহত হয় । দু'পক্ষই পারস্পরিকভাবে যোদ্ধাদের অপহরণ করেছে । প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছে , প্রায় ২০ জন অপহৃত হয়েছে বলে তারা ধারণা করছে ।

    ফিলিস্তিনের তথ্য মন্ত্রী মুস্তাফা বার্ঘুতি সতর্ক করে বলেছেন, রক্তাক্ত ঘটনা অব্যাহতভাবে থাকলে , যৌথ সরকার এবং ফিলিস্তিন জাতি বিপদের সম্মুখীন হবে । তিনি দু'পক্ষকে অবিলম্বে নিজেদের যোদ্ধাদের প্রত্যাহার করে নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন । কিন্তু হামাস এবং ফাতাহ'র মধ্যে কোনো সমঝোতার প্রবণতা নেই,দু'পক্ষের কর্মকর্তারাই একে অপরকে দোষারোপও নিন্দা করেছে । আল আক্সা মার্টিরস ব্রিগেডের একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা বলেছেন, বর্তমান পরিস্থিতির কোনো পরিবর্তনের সম্ভাবনা নেই, তারা সন্দেহজনক ব্যক্তিদের সম্পর্কে খোঁজ খবর নেবে । হামাসের একজন মুখপাত্র সকল যোদ্ধাদেরকে সতর্ক থেকে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে অপহৃতদের উদ্ধার করার আহ্বান জানিয়েছে । স্থানীয় অধিবাসীরা বলেছে, সশস্ত্র যোদ্ধারা সড়কে বাধার সৃষ্টি করছে । যার ফলে খুব সম্ভবত পুনরায় সংঘর্ষ ঘটতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে ।

    হিংসাত্মক সংঘর্ষ ফিলিস্তিনের নতুন নিরাপত্তা পরিকল্পনাকে ক্ষতি করেছে । পরিকল্পনার বিষয় হল : অভ্যেন্তরীণ স্থিতিশীলতা পুনরুদ্ধার করা এবং হিসাত্মক সংঘর্ষের অবসান ঘটানোর জন্য ফিলিস্তিনের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় হামাস এবং ফাতাহ'র সশস্ত্র গোষ্ঠীকে ঐক্যবদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে এবং গাজা অঞ্চলে ৩ হাজার নিরপেক্ষ ব্যক্তিকে নিয়োগ করবে । তাদের মধ্যে একই পোষাকে সজ্জিত হামাস এবং ফাতাহ'র সদস্যও রয়েছে । যাতে অভ্যেন্তরীণ সংঘর্ষ প্রতিরোধ করা সম্ভব হয় এবং ইসরাইলের ওপর ফিলিস্তিনী যোদ্ধাদের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা বন্ধ করা যায় । ফিলিস্তিন ও ইসরাইলের শান্তিপূর্ণ বৈঠকের জন্য পরিস্থিতি সৃষ্টি করা হবে । কিন্তু এ পরিকল্পনা চালু না হতেই ঝামেলার সম্মুখীন হচ্ছে । ১৩ মে ফিলিস্তিনের অভ্যন্তরীণ সংঘর্ষ ছাড়া, ফিলিস্তিনের যোদ্ধারা প্রতিদিনই ইসরাইলের ওপর ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে যাচ্ছে।

রকেট হামলা প্রতিরোধ করার জন্য ১৩ মে ইসরাইলের নিরাপত্তা মন্ত্রীসভা ফিলিস্তিনের ক্ষেপণাস্ত্রের হামলার বিরুদ্ধে বিশেষ সম্মেলন আয়োজন করেছে । মন্ত্রীসভার সদস্যরা ইসরাইলের উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তাদের গাজা অঞ্চলে ব্যাপক সামরিক অভিযান চালানোর অনুরোধ জানাতে রাজী হন নি । কিন্তু মন্ত্রীসভার কয়েক জন মন্ত্রী বলেছেন, ইসরাইলী বাহিনী গাজা অঞ্চলের পূর্বনির্ধারিত স্থানে ফিলিস্তিনের ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপকারীদের ওপর নির্মূল অভিযান চালাবে । ফলে গত বছরের নভেম্বর মাসে দু'পক্ষের মধ্যে স্বাক্ষরিত গাজা অঞ্চলে যুদ্ধবিরতি সংক্রান্ত চুক্তি কোনো তাত্পর্য থাকবে না ।

ফিলিস্তিনী যোদ্ধাদের অভ্যন্তরীণ সংঘর্ষ এবং ইসরাইলের ওপর চালানো ক্ষেপণাস্ত্র হামলা ফিলিস্তিন ও ইসরাইলের শান্তিপূর্ণ বৈঠক পুনরায় শুরুর ক্ষেত্রে মধ্য প্রাচ্যের বিভিন্ন পক্ষের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে । বর্তমানে ফিলিস্তিন, ইসরাইল এবং আরব লীগসহ বিভিন্ন পক্ষের কূটনৈতিক প্রচেষ্টাকে জোরদার করা হয়েছে । ইসরাইলী পররাষ্ট্রমন্ত্রী জিপি লিভনি গত সপ্তাহে মিশর সফর করেছেন । জর্দানের রাজা আবুদুল্লাহ্ ১৩ মে জর্দান নদীর পশ্চিমাঞ্চল সফর করার কথা । কিন্তু আবহাওয়ার কারণে তাঁর সফর স্থগিত হয়েছে । ইসরাইলী প্রধানমন্ত্রী এহুদ ওলমার্ট জর্দানও সফর করবেন । তা ছাড়া, আরব লীগের একটি প্রতিনিধি দলও প্রথমবারের মতো ইসরাইল সফর করবে । ওলমার্ট সরকার ইসরাইলে বিরাট চাপের সম্মুখীণ হওয়ার কারণে কুটনৈতিক ক্ষেত্রে তার সাফল্য খুবই দরকার । যাতে ইসরাইলীদের সমর্থন পাওয়া যায় । এ ব্যাপারে সবাই আশা করছে যে, নতুন দফার কূটনৈতিক প্রচেষ্টা আরব দেশগুলো এবং ইসরাইলের মধ্যে সম্পর্কের ক্ষেত্রে ইতিবাচক ফলাফল নিয়ে আসবে । কিন্তু ফিলিস্তিনের অভ্যন্তরীণ সংঘর্ষ গুরুতর হলে এবং ফিলিস্তিন ও ইসরাইলের সংঘর্ষ অব্যাহতভাবে থাকলে , এসব কূটনৈতিক কার্যক্রমে খুব সম্ভবত তেমন একটা লাভ হবে না ।