চলতি বছর চীন ও রাশিয়ার কৌশলগত সহযোগিতামূলক অংশীদারি সম্পর্ক দ্বিতীয় ধাপের ১০ বছরে পা দিল। ১৯৯৬ সালের এপ্রিল মাসে , রাশিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট বোরিস ইয়েলতসিন চীন সফরকালে দু'পক্ষের নেতৃবৃন্দ " চীন ও রাশিয়ার যৌথ প্রস্তাব" সংক্রান্ত চুক্তি স্বাক্ষর করেন। প্রস্তাবে বলা হয়েছে, চীন ও রাশিয়া দু'দেশ পারস্পরিক আস্থার মাধ্যমে নতুন শতাব্দীর কৌশলগত সহযোগিতামূলক অংশীদারি সম্পর্ক স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেয়। ১০ বছর ধরে , দু'দেশের রাজনৈতিক , অর্থনৈতিক এবং সামাজিক ক্ষেত্রের সহযোগিতা ত্বরান্বিত হয়েছে। দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক একটি নতুন পর্যায়ে উন্নীত হয়েছে।
চীন ও রাশিয়ার রাজনৈতিক ক্ষেত্রের বিনিময় দিন দিন বৃদ্ধি পেয়েছে বলে দু'দেশের নেতৃবৃন্দের প্রতিবছর পারস্পরিক সফরের ব্যবস্থাও প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। একই সঙ্গে দু'দেশ নিজের রাষ্ট্রীয় সার্বভৌমত্ব , স্বাধীনতা এবং ভূখন্ডের অখন্ডতার র ক্ষেত্রে পারস্পরিকভাবে সাহায্য করেছে।
২১ শতাব্দীতে প্রবেশ করার পর, চীন ও রাশিয়ার সম্পর্কের আরও সুষ্ঠু উন্নয়ন হয়েছে। ২০০১ সালের জুন মাসে চীনের সাবেক প্রেসিডেন্ট চিয়াং জে মিন রাশিয়া সফর করেন। তিনি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে " চীন ও রাশিয়ার সুপ্রতিবেশীমূলক বন্ধুত্বপূর্ণ সহযোগিতা চুক্তি" স্বাক্ষর করেছিলেন। চুক্তিতে " বংশপরমপরায় মৈত্রী" -এর শান্তিপূর্ণ ধারণা এবং চিরদিন সুপ্রতিবেশী , ভাল বন্ধু এবং অংশীদার সম্পর্কিত দৃঢ় ইচ্ছা আইনবিধির মাধ্যমে নির্ধারিত হয়েছে। এটি দু'দেশের সম্পর্কের সুষ্ঠু উন্নয়নের জন্য একটি আইনগত ভিত্তির সৃষ্টি করেছে।
২০০৫ সালের জু মাসে, চীন ও রাশিয়ার মধ্যে " দু'দেশের সীমান্তরেখা সংক্রান্ত পূর্বাঞ্চলের পূরণো চুক্তি" স্বাক্ষরিত হয়েছে। এটি হলো চীন ও রাশিয়ার ইতিহাসে অমীমাংসিত সীমান্ত সমস্যার পুরোপুরি সমাধানের প্রতীক। জুন মাসে চীনের প্রেসিডেন্ট হু চিন থাও রাশিয়া সফরকালে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে " ২০০৬ সালে চীনে 'রাশিয়ার বর্ষ' এবং ২০০৭ সালে রাশিয়ায় ' চীনা বর্ষ' অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে , চীন ও রাশিয়ার রাজনৈতিক সম্পর্কের সুষ্ঠু উন্নয়ন হয়েছে। দু'পক্ষ বৈজ্ঞানিক, সাংস্কৃতিক এবং অর্থনৈতিক ক্ষেত্রের সহযোগিতা অব্যাহতভাবে সম্প্রাসারণ করেছে। চীন ও রাশিয়ায় পরপর আট বছর ধরে বাণিজ্যের প্রবৃদ্ধির হার দ্রুতভাবে বজায় রয়েছে। ২০০৬ সালে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের পরিমাণ হয়েছিলো মোট ৩৩.৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। দু'দেশের নেতৃবৃন্দ মনে করছেন যে, ২০১০ সালে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের পরিমাণ মোট ৬০ থেকে ৮০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার পর্যন্ত দাঁড়াতে পারে। এ লক্ষ নির্দিষ্ট সময়ের আগে বাস্তবায়নের সম্ভাবনা রয়েছে।
|