v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2007-05-04 18:54:41    
যুক্তরাষ্ট্র ও সিরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠক থেকে দু'দেশের সম্পর্কের ভবিষ্যত নিয়ে কিছু চিন্তাভাবনা

cri

    ৩ মে মিশরের শার্ম আল-শেইখে "ইরাকের আন্তর্জাতিক চুক্তি" এর মন্ত্রী পর্যায়ের অধিবেশন চলাকালে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী কনডোলিত্জা রাইস আর সিরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়ালিদ আল-মৌয়ালিমের মধ্যে বৈঠক হয়েছে। এটা হচ্ছে গত দু'বছরে যুক্তরাষ্ট্র ও সিরিয়ার কোন পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের প্রথম দ্বিপক্ষীয় বৈঠক। মৌয়ালিম মনে করেন, এবারের বৈঠকটি ছিল আন্তরিক এবং গঠনমূলক। ভবিষ্যতে দু'পক্ষ অব্যাহতভাবে ইরাকের নিরাপত্তা সমস্যা নিয়ে মত বিনিময় করবে। এতে বুঝা যায় যে, যুক্তরাষ্ট্র ও সিরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের এবারের বৈঠক দু'দেশের অচলাবস্থা ভেঙ্গে দেয়ার জন্য নতুন সুযোগ সৃষ্টি করেছে।

 সিরিয়া ইস্রাইলের ওপর শক্ত অবস্থান নিয়েছে এবং ২০০৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রের সৃষ্ট ইরাক যুদ্ধের বিরোধীতা করেছে। এর ফলে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে যুক্তরাষ্ট্র ও সিরিয়ার সম্পর্ক সবসময়ই উত্তেজনাময় অবস্থায় ছিল। সিরিয়া গোপনে লেবাননের হিজবুল্লাহ সংগঠনকে ইস্রাইলেআক্রমণ চালানোর বিষয়টিকে সমর্থন করেছে বলে যুক্তরাষ্ট্র অভিযোগ করেছে। ২০০৫ সালের ফেব্রুয়ারী মাসে লেবাননের সাবেক প্রধানমন্ত্রী রফিক হারিরি আততায়ীর গুলিতে নিহত হন। এর পর যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি অভিযোগ করেছে যে, সিরিয়া এ হত্যাকান্ডের ঘটনায় জড়িত। যুক্তরাষ্ট্র লেবাননের সিরিয়া-বিরোধী দলের বিরাট আকারের বিক্ষোভ মিছিল কর্মসূচীকে সমর্থন করেছে এবং লেবানন থেকে সিরিয়ার সকল বাহিনী প্রত্যাহার করতে বাধ্য করেছে। এতে লেবাননে সিরিয়ার প্রভাব হ্রাস পেয়েছে এবং সিরিয়ার ঐতিহ্যিক ক্ষমতাসীনদের ক্ষেত্রকে সীমিত করে দিয়েছে। ইরাকের নিরাপত্তা পরিস্থিতি দিনে দিনে অবনতিশীল হওয়ার সাথে সাথে যুক্তরাষ্ট্র নিন্দা করেছে যে, সিরিয়া যুক্তরাষ্ট্র বিরোধী সশস্ত্র ব্যক্তিদের সিরিয়া থেকে ইরাকে যাওয়ার সুবিধা দিয়েছে , যাতে তারা আত্মঘাতী হামলা চালাতে পারে। এর ফলে ইরাকের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা নষ্ট হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র সিরিয়ার ওপর অর্থনৈতিক শাস্তি আরোপ করার পাশাপাশি ২০০৫ সালের ফেব্রুয়ারী মাসে লেবাননের সাবেক প্রধানমন্ত্রী রফিক হারিরির গুপ্তহত্যার পর সিরিয়ায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূতকে স্বদেশে ফিরিয়ে নিয়ে গেছে। সিরিয়া দৃঢ়ভাবে যুক্তরাষ্ট্রের এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে। সিরিয়া মনে করে, মধ্য প্রাচ্যের পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের নিজের কর্মসূচীর ফলাফল। সিরিয়া মনে করে, যুক্তরাষ্ট্রের সিরিয়ার সঙ্গে প্রত্যক্ষ সংলাপ না করার মনোভাব ইরাকের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা পুনরুদ্ধারের জন্য কোনো সহায়ক ভূমিকা রাখবে না।

 ইরাকের অভ্যন্তরীণ সহিংস সংঘর্ষ দিনে দিনে তীব্রতর হয়েছে। গত বছরের নভেম্বর মাস থেকে মার্কিন ডেমোক্র্যাটিক পার্টি বুশ সরকার ও ইরাকের দুটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেশী দেশ সিরিয়া ও ইরানের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ আর সংলাপ করার প্রচেষ্টা চালিয়ে আসছে। কিন্তু বুশ সরকার তা প্রত্যাখ্যান করেছে। গত মাসে মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের স্পীকার সিরিয়া সফর করেছেন বলে বুশ সরকারের তীব্র নিন্দার সম্মুখীন হয়েছেন। বুশ সরকার মনে করে, প্রতিনিধি পরিষদের স্পীকার সিরিয়া সফর করে যুক্তরাষ্ট্রের সিরিয়াকে বয়কট করার পররাষ্ট্র নীতি লঙ্ঘন করেছেন। কিন্তু দেশ-বিদেশের প্রবল চাপ মোকাবেলায় বুশ সরকার সিরিয়ার ওপর নিজের মনোভাবের সামান্য কিছু পরিবর্তন করেছে। বিশেষ করে এবারের মন্ত্রী পর্যায়ের অধিবেশনের আগে রাইস বহু বার ব্যক্ত করেছেন যে, সিরিয়া ও ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সঙ্গে তাঁর সাক্ষাত্ করার সম্ভাবনা রয়েছে।

 বিশ্লেষকরা মনে করেন, রাইস ও মৌয়ালিমের বৈঠকের ফলাফল থেকে বুঝা যায় যে, প্রথমতঃ ইরাকের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা পুনরুদ্ধার করতে চাইলে সিরিয়া ও ইরানের সাহায্য দরকার। যুক্তরাষ্ট্র ইরাক যুদ্ধ বাঁধিয়ে সাদ্দাম সরকারকে উত্খাত করার পর ইরাকে মার্কিন বিরোধী সশস্ত্র দলের সংখ্যা বেড়েছে এবং সহিংস সংঘর্ষও দিনে দিনে তীব্রতর হয়ে উঠছে। সিরিয়া ও ইরান হচ্ছে ইরাকের দুটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেশী দেশ। দেশ দুটি ইরাকের সীমান্ত নিরাপত্তা রক্ষার ক্ষেত্রে নিঃসন্দেহে সক্রিয় ভুমিকা পালন করতে পারে।

 দ্বিতীয়তঃ ইরাকের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা পুনরুদ্ধার করতে চাইলে যুক্তরাষ্ট্রের সিরিয়া ও ইরানের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়ন করতে হবে। বৈঠকের পর রাইস প্রথমবার বলেছেন যে, যুক্তরাষ্ট্র সিরিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক অচলাবস্থায় রাখতে চায় না।