বসন্তকালে আবহাওয়া খুবই ভালো,চোখ জুড়ানো অনেক ফুল এখন সারা পেইচিং জুড়ে। কি যে সুন্দর কিন্তু হলে হবে কি ? এর পাশাপাশি আবার রয়েছে বিভিন্ন ধরনের নিঃশ্বাসতাড়িত রোগের প্রকোপ । বাতাসের ধলোবালি ও অন্যান্য উপাদানের কারণে আপনারা সহজভাবেই রোগে আক্রান্ত হতে পারেন । শিশুদের শরীর দুর্বল থাকার জন্য খুব সহজেই এ সময় তারা রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকে । আজকের অনুষ্ঠানে আমি আপনাদেরকে শিশুর নিঃশ্বাসতাড়িত রোগে আক্রান্ত হওয়ার প্রতিরোধক পদ্ধতিগুলো জানিয়ে দেবো ।
আমাদের সাধারণ জীবনে গলায় অনেক ধরনের ভাইরাস ও জীবাণু সচল রয়েছে । যদি শিশুদের ঠাণ্ডা লাগে বা মন খারাপ হয় ,তাহলে তাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধক সামর্থ্য কমে যায় এবং সহজভাবেই নিঃশ্বাসতাড়িত রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকে । শীতকালে শিশুরা বেশি সময় ঘরে থাকার জন্য হঠাত্ করে বসন্তকালে তারা বাইরের আবহাওয়ায় তাপমাত্রার সঙ্গে খাপ খাওয়াতে পারে না । এবং তাদের সহ্য করার ক্ষমতাও অবশ্যই কমে যায় । এ জন্য বসন্তকালে তারা সহজেই প্যারোটিটিস,হাম, মস্তিষ্কেপ্রদাহ এবং যক্ষ্মারোগসহ বিভিন্ন ধরনের নিঃশ্বাসতাড়িত রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকে । এ ছাড়াও আরো যেসব রোগে আক্রান্ত হয় সেগুলো হলো: শিশুদের মাথা ব্যথা, জ্বর, সর্দি কাঁশি, বমি এবং চর্মজাতীয় রোগ ।
তাহলে কিভাবে এসব রোগ প্রতিরোধ করা যাবে ? বন্ধুরা, প্রথমেই আপনার বাড়ির পরিবেশ পরিস্কার পরিচ্ছন্ন করতে হবে । সবসময় জানালা খুলে দিয়ে ঘরের ভেতর বাইরের বিশুদ্ধ বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা করুন এবং বাড়ির লেপ তোষক যা শিশুর কাথা ছাদে বা উঠোনে যেখানে পর্যাপ্ত সুর্যের আলো রয়েছে সেখানে উষ্ণ করে নিন ।
দ্বিতীয় : শিশুকে আদের করা বা অন্যের সঙ্গে আপনার করমর্দন ইত্যাদি ক্ষেত্রেও সতর্কতা বজায় রাখা । সাধারণ জীবনে নানা ধরনের ভাইরাস সবসময় শ্বাস -প্রশ্বাস বা হাতের মাধ্যমেই সংক্রমিত হয়ে থাকে । এ কারণে আপনারা বাড়িতে ফিরে আসার পর, শিশুদের কোলে নেয়া বা কোণ প্রকার স্পর্ষ করার আগে অবশ্যই হাত মুখ পরিস্কার করুন , কাপড় পরিবর্তন করুন এবং কাঁশি বা হাঁচি দেওয়ার সময় অবশ্যই অন্যান্য লোকদের থেকে একটু দুরে চলে যান । বিশেষ করে শিশুদের কাছে কোন ক্রমেই থাকবেন না । তাহলে শিশুদের ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা অনেক কমে যাবে ।
এ ছাড়াও , শিশুদেরকে বেশি করে বিশুদ্ধ পানি খাওয়াবেন, ফলে প্রস্রাব বা ঘামের মাধ্যমে তাদের শরীরের ভাইরাস অনেকটাই বেড়িয়ে যাবে । বসন্তকালের তামপাত্রা স্থির নয় । ভোরে এবং সন্ধ্যায় ঠাণ্ডা, দুপুরে খুবই গরম । এ জন্য আপনারা সবসময় তাপমাত্রা অনুযায়ী শিশুদের কাপড় পরাবেন ।যদি আকস্মিকভাবে শিশুদের অনেক কাপড় কম বা বেশী হয় তাহলে শিশুদের নিঃশ্বাসিতাড়িত ভাইরাস প্রতিরোধক ক্ষমতা কমে যাবে । এ জন্য আপনারা অবশ্যই আবহাওয়ার পরিবর্তন অনুযায়ী শিশুদের কাপড় চোপড় পরাবেন ।
শিশুদের চামড়া সবসময় পরিস্কার রাখা তাদের স্বাস্থ্যের জন্য সহায়ক । নিয়ম মতো তাদের কাপড় চোপড় পরিবর্তন করা এবং তাদের গোসল করানো খুবই গুরুত্বপূর্ণ ।
সুশৃঙ্খল বিশ্রাম এবং গভীর ঘুম শিশুদের স্বাস্থ্যের জন্যও সহায়ক । তা ছাড়া , যুক্তিযুক্তভাবে পুষ্টিকর খাবার খাওয়াও খুবই গুরুত্বপূর্ণ । যেমন শরীরের জন্য সহায়ক ও সহজে হজম যোগ্য সবজি সুপ, নরম ভাত, ডিমের সুপ এবং দূধ । ভিটামিন সি যুক্ত খাবার শিশুদের চামড়ার প্রতিরোধক ক্ষমতা বাড়ায় এবং চামড়া মৃশৃণ ও সুন্দর রাখে । এ জন্য সবসময় তাদেরকে কমলার রস, তরমুজের রস এবং টম্যাটো, আপেল, আঙ্গুর এবং স্ট্রোবেরিসহ বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন সি যুক্ত খাবার খাওয়ালে, তাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতা অবশ্যই বেড়ে যাবে ।
তা ছাড়াও পরিকল্পিতভাবে শিশুদের জন্য নানা ধরনের রোগ প্রতিরোধক টিকা ইনজেকশন দেয়া দরকার ।
|