v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2007-05-01 20:02:31    
চীনের নাট্য শিল্পের শততম বার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে নানা কর্মসূচী নেয়া হয়েছে

cri
    এবছর হলো চীনের নাটক শিল্পের শততম জন্মবার্ষিকী । এ উপলক্ষে চীনের সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় ও নাটক মহল দেশের বিভিন্ন স্থানে নাট্যানুষ্ঠান ও আলোচনা সভার আয়োজন করেছে এবং শ্রেষ্ঠ নাটক শিল্পীদের পুরষ্কার প্রদানের কর্মসূচী গ্রহণ করছে ।

    নাটক ' চা হাউস ' নাটকটি চীনের সবচেয়ে বিখ্যাত নাটকগুলোর অন্যতম । চীনের প্রয়াত লেখক লাও সে এই নাটক লিখেছিলেন । নাটকটিতে একটি ছোট চা হাউসের পরিবতর্ন বর্ণনার মাধ্যমে গত শতাব্দীর চল্লিশের দশকের আগে চীনের ৫০ বছরের ইতিহাস প্রতিফলিত হয়েছে ।

    নাটকে প্রধানতঃ চরিত্রের কথাবার্তা ও আচার -আচরণের মাধ্যমে কাহিনীর মর্ম প্রকাশিত হয় । এক শ' বছর আগে এ ধরনের শিল্প রুপ সাধারণ চীনাদের কাছে পরিচিত ছিল না । তারা পিকিং অপেরার মতো ঐতিহ্যিক অপেরাকে বেশি পছন্দ করতেন । পিকিং অপেরায় প্রাচীন চীনের বিভিন্ন রাজবংশের কাহিনী বর্ণনা করা হয় । পরে ইউরোপের নাটক ধীরে ধীরে চীনে প্রবেশ করে । ১৯০৭ সালে জাপানে অধ্যয়নরত কিছু ছাত্রছাত্রী ছুনলিউ নামে একটি নাট্য দল গঠন করেন । তারা টোকিওতে ফ্রান্সের লেখকের লেখা নাটক ' দ্য লেডি অব দ্য কেমেলিয়াস ' -এ অভিনয় করেন । একই বছর অন্য একটি নাট্য দল ' ছুন ইয়ান ' সাংহাইয়ে প্রতিষ্ঠিত হয় । এই নাট্য দল যুক্তরাষ্ট্রের লেখকের রচিত নাটক ' আনকাল টোমের কেবিন ' -এ অভিনয় করে । কাজেই ১৯০৭ সালকে চীনের নাটক শিল্পের সূচনা হিসেবে গণ্য করা হয় ।

    নাটক এক নতুন শিল্প রুপ হলেও চীনে প্রবেশের পর শীঘ্রই বিকশিত হতে শুরু করে । এ বছরের এপ্রিল মাস থেকে ত্রিশাধিক নাটক দেশের বিভিন্ন স্থানে মঞ্চায়ন শুরু হয় । চীনের সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের শিল্পকলা বিভাগের প্রধান ইং সিয়াও তুং সি আর আইয়ের সাংবাদিকদের দেয়া এক সাক্ষাত্কারে বলেছেন , এ বছর চীনের নাটকের শততম জন্মবার্ষিকী । এ উপলক্ষে আমরা শত বছরের প্রতিনিধিত্বকারী নাটক ও নাগরিকদের প্রিয় নাটকগুলো বেছে মন্চস্থ করার ব্যবস্থা করবো । যেমন পেইচিং গণ থিয়েটারের শিল্পীদের অভিনয় করা 'সপরিবার মিলন ' নামক এক নাটকে এক পুরনো বাড়ীতে থাকা এক স্থাপত্যডিজাইনারের পরিবারের ৫০ বছরের জীবনের পরিবর্তন বর্ণনা করা হয়েছে । ২০০৫ সাল থেকে এ নাটক মঞ্চস্থ হওয়ার পর এই নাটক হাজার হাজার দর্শকের দৃষ্টি আকর্ষন করেছে এবং তাদের সাধুবাদ পেয়েছে ।

    ওয়াং সিয়াও ইং চীনের জাতীয় নাটক থিয়েটারের পরিচালক । তিনি মনে করেন সমাজের বাস্তব অবস্থার প্রতিফলন এবং বিদেশের শ্রেষ্ঠ নাটকগুলোর কাছ থেকে শেখা চীনের নাটক শিল্প প্রসারের দুটি বৈশিষ্ট্য । তিনি বলেছেন , চীনের বাস্তব অবস্থা প্রতিফলন ও বিদেশের শ্রেষ্ঠ নাটকগুলো থেকে নাটক শিল্পের নৈপুন্য শিক্ষা চীনের নাটক শিল্প প্রসারের দুটি কক্ষপথ বা চাকা । চীনের নাটকগুলো বিভিন্ন সামাজিক অবস্থা প্রতিফলনের প্রচেষ্টা চালায় ।

    চীনের নাটক শিল্পের শততম বার্ষিকী উপলক্ষে তিন বছর আগে ব্রিটেনের বিখ্যাত লেখক মাইকেল ফ্রিয়ানের রচিত 'কোপেনহাগেন' নামক একটি নাটক মঞ্চস্থ হয়েছে । এই নাটকে দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের সময় এটম বোমা তৈরীর কাজে অংশগ্রহণকারী জার্মানীর বৈজ্ঞানিকের মনের দ্বন্দ্ব ও বেদনা প্রতিফলিত হয়েছে । চীনে এ নাটকটি প্রায় এক শ' বার মঞ্চস্থ হয়েছে । প্রতিটি শো'তে দর্শকদের ভীড় জমে । অনেক দর্শক দাড়িয়ে দাড়িয়ে দু ঘন্টা স্থায়ী এই নাটক উপভোগ করেন ।

    এক শ' বছরের প্রসারের পর চীনের নাটক ইতিমধ্যে ঐতিহ্যিক অপেরার মতো সমান গুরুত্বসম্পন্ন এক শিল্পরুপে পরিণত হয়েছে । ২০০৬ সালে পেইচিংয়ে ৪০টি নাটক মঞ্চস্থ হয়েছে । এই সব নাটকে বর্তমান যুগের নাগরিকদের সুখদুঃখ ও নতুন সমস্যা প্রতিফলিত হয়েছে ।

    সম্প্রতি চীনের নাটক শিল্পের প্রসার সম্পর্কিত একটি আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয় । ৮৮ বছর বয়সী চাও সুন চীনের একজন প্রবীন নাট্য শিল্পী । তিনি বলেছেন , আমি আশা করি শততম বার্ষিকীর পর চীনের নাটক শিল্পের আরো দ্রুত প্রসার হবে । এ জন্য যুব নাট্যকার ও অভিনেতা-অভিনেত্রী গড়ে তুলতে হবে ।