ইইউ-মার্কিন শীর্ষ সম্মেলন ৩০ এপ্রিল যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটনে শুরু হয়েছে। ইইউ'র পালাক্রমিক চেয়ারম্যান দেশ জার্মানীর চ্যান্সেলর এ্যাঞ্জেলা মার্কেল এবং ইইউ কমিটির চেয়ারম্যান জোস মানুয়েল বারোসোর নেতৃত্বাধীন ইইউ'র প্রতিনিধি দল মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডাব্লিও বুশের সঙ্গে বাণিজ্য, রাশিয়া ও জ্বালানিসম্পদ নিয়ে আলোচনা করবে। অনুমান করা যায়, দু'পক্ষের সহযোগিতা জোরদার করার সঙ্গে সঙ্গে বিশ্বের উষত্তায়ন, ফিলিস্তিন ও ইসরাইল এবং সন্ত্রাস দমন ইত্যাদি বিষয় মতভেদও থাকবে।
প্রথমত, বাণিজ্যিক সহযোগিতা হলো এবারের শীর্ষ সম্মেলনের প্রধান আলোচ্য বিষয়। জার্মান চ্যান্সেলর এ্যাঞ্জেলা মার্কেল ও ইইউ কমিটির চেয়ারম্যান বারোসোর নেতৃত্বাধিন ইইউ প্রতিনিধি দল আটল্যান্টিক মহাসাগরীয় অঞ্চলে বাণিজ্যিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত করার প্রস্তাব দেবে। মার্কেলের উদ্যোগে এই প্রস্তাবটি তৈরী করা হয়। এর লক্ষ্য হলো মার্কিন-ইইউ'র মধ্যে বাণিজ্য সংক্রান্ত আইনের প্রণয়ন সমন্বয় করা। এর মধ্যে রয়েছে গাড়ি'র নিরাপত্তা মানদন্ড ইত্যাদি।
জানা গেছে, এই প্রস্তাব যদি গৃহিত হয় তাহলে তা দু'পক্ষের বাণিজ্য উন্নয়নে গুরত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। ২৭ এপ্রিল প্রকাশিত এক বিবৃতিতে বারোসো বলেছেন, যদি দুপক্ষের রাজনৈতিক সমর্থন পাওয়া যায় তাহলে দু'পক্ষের ব্যবসার খরচ অনেক কমবে এবং ভোক্তাদের জন্য আরো সস্তায় পণ্যদ্রব্য সরবরাহ করা যাবে। বিশ্লেষকরা মনে করেন, এই পরিকল্পনা সম্ভবত আটল্যান্টিক মহাসাগরীয় অঞ্চলে একটি অবাধ বাণিজ্য অঞ্চল গড়ে তুলবে। তাতে সকল শুল্ক বাতিল হয়ে যাবে এবং অন্যান্য বাধও দূর হবে।
বর্তমান দোহা আলোচনা অচলাবস্থায় রয়েছে। কৃষি ভর্তুকি ক্ষেত্রের মতভেদ এখনো দূর হয়নি। কিন্তু মার্কেলের প্রস্তাব এসব সমস্যা এড়িয়েছে, তাই তা বিভিন্ন পক্ষের কাছে গ্রহণযোগ্য।
মার্কিন সংবাদ মাধ্যমের খবরে প্রকাশ, রাশিয়া সংক্রান্ত কিছু সমস্যাও এবারের শীর্ষ সম্মেলনের প্রধান আলোচ্য বিষয়। এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের পোল্যান্ড ও চেক রিপাবলিকে ক্ষেপনাস্ত্র-বিরোধী ব্যবস্থা মোতায়েনের সিদ্ধান্ত যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যে বিপুল মতভেদ সৃষ্টি করেছে। এই মতভেদ নিয়ে জার্মান সরকারের মতামত অনুযায়ী, এবারের ইইউ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে একমত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ইইউ সম্ভবত যুক্তরাষ্ট্রকে চেকে ক্ষেপনাস্ত্র-বিরোধী ব্যবস্থা স্থাপন করা সমর্থন করবে, পাশাপাশি রাশিয়ার উদ্বেগ দূর করার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের কূটনৈতিক প্রচেষ্টারও সমর্থন করবে।
তাছাড়া, কসোভো ও জ্বালানিসম্পদের নিরাপত্তা সমস্যাও এবারের প্রধান আলোচ্য বিষয়। কিন্তু বিশ্লেষকরা মনে করেন যে, এবারের শীর্ষ সম্মেলনের মাধ্যমে সকল মতভেদ দূর করা সম্ভব হবে না। ওয়াশিংটন বরাবরই আশা করে যে, ফিলিস্তিন-ইসরাইল সমস্যা, পারমাণবিক বিস্তার, সন্ত্রাস দমন, রাশিয়া ও মানবাধিকার সমস্যায় ইইউ আরো সক্রিয় ভূমিকা পালন করবে। কিন্তু ইইউ'র কূটনীতিবিদরা মনে করেন যে, বর্তমানে ইরাক, আফগানিস্তান, ইরান ও মধ্য-প্রাচ্য বিষয় নিয়ে বেশি উত্তেজনাকর তত্পরতা চালানো যাবে না। তাছাড়া, ইইউ গ্রীন গ্যাস সমস্যা নিয়ে ওয়াশিংটনকে যে চাপ দিচ্ছে ওয়াশিংটন তা উপেক্ষা করে যাচ্ছে।
1 2 3
|