আন্তর্জাতিক তাও ত্য চিন ফোরাম ২২ এপ্রিল পশ্চিম চীনের সেনসি প্রদেশের রাজধানী সি আন শহরে শুরু হয়েছে । গত বছর বিশ্ব বৌদ্ধধর্ম ফোরামের পর এটা চীন সরকারের উদ্যোগে আয়োজিত আর একটি আন্তর্জাতিক ধার্মিক সম্মেলন। এবারের ফোরামে বিশ্বের ১৭টি দেশ ও অঞ্চলের তাও ধর্মের৩০০ ব্যক্তি , বিশেষজ্ঞ ও পন্ডিতগণঅংশ নিচ্ছেন । সম্মেলনের শিরোনাম " সুষম বিশ্ব, তাও ধর্মের মাধ্যমে যোগাযোগ" । তারা "তাও ত্য চিনের" মর্মবস্তুর ভিত্তিতে সুষম বিশ্ব গড়ে তোলার বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন ।
যারা "তাও ত্য চিনের" চিন্তাধারা ভালবাসেন , গবেষণা করেন এবং মেনে চলেন, সেই সব দেশী-বিদেশীরা ফোরামের নির্ধারিত "তাও ত্যচিন" ও সুষম সংস্কৃতি, প্রাকৃতিক পরিবেশ, আধুনিক ব্যবস্থাপনা ও স্বাস্থ্য রক্ষা সহ নানা বিষয় নিয়ে আলোচনা করবেন । চীনে রাজনৈতিক পরার্মশ সম্মেলনের জাতীয় পরিষদের চেয়ারম্যান চিয়া ছিংলিন ফোরামেএকটি শুভেচ্ছা বাণী পাঠিয়েছেন ।
ফোরামের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে চীনের রাজনৈতিক পরামর্শ সম্মেলনের ভাইস চেয়ারম্যান লিউ ইয়েনতুঙ বলেছেন ,আন্তর্জাতিক "তাও ত্যচিন" ফোরাম আয়োজন করার উদ্দেশ্য হল তাও ত্যচিনের বৈচিত্রময় মর্মবস্তুকে আরও গভীরভাবে গবেষণা করা । তাও ত্যচিনের যুগান্তকারী তাত্পর্যকেসম্প্রচার করা । বাস্তব নিয়ম অনুযায়ী সুষম সহযোগিতা ও বন্ধুত্বের ব্যাপারে নিজেদের নৈতিকতাকে উন্নত করা । যাতে নতুন যুগে ইতিহাস , ধর্ম ও সীমান্তরেখা ছাড়িয়ে যাওয়ার এই মূল্যবান সংস্কৃতির নতুন প্রাণশক্তি দেখা দেয় ।
এবারের ফোরাম তাও ধর্মের সুদীর্ঘইতিহাস ও বৈচিত্র্যময় তাও সংস্কৃতি সম্পন্ন সি আন শহর এবং হংকংয়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে । এটা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ব্যাপক মনোযোগ ও সমর্থন পেয়েছে । জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মনসহ বেশ কয়েকটি দেশের রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের বিখ্যাত ব্যক্তি এবারের ফোরামে শুভেচ্ছা বাণী পাঠিয়েছেন । চীনের জাতীয় ধর্ম বিষয়ক ব্যুরোর উপপ্রধান ছি সিয়াওফিই ফোরামের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছাবাণী পড়ে শুনিয়েছেন । বিশ্বের বিভিন্ন প্রধান ধর্মের মৌলিক আদর্শ ত্বরান্বিত করার জন্য আমাদের যৌথভাবে প্রচেষ্টা চালাতে হবে । আমাদের ব্যক্তিগত ধর্ম বিশ্বাস ও চলমান সমাজের প্রতিসম্মানপ্রদর্শনকরতে হবে এবং সকল সংস্কৃতি ও জাতির শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের সমাজ গড়ে তুলতে হবে ।
মহাসচিব বান কি মুনের প্রস্তাবিত" শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান" " সুষম বিশ্ব, তাও ধর্মের মাধ্যমে যোগাযোগ" শিরোনামে ফোরামের সঙ্গে খাপখায় । তাও ত্যচিনের " সুষম" চিন্তাধারাচীনের ঐতিহ্যিক সংস্কৃতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ । চীন দীর্ঘস্থায়ী শান্তিপূর্ণ ও অভিন্ন সমৃদ্ধশালীসুষম বিশ্ব প্রতিষ্ঠারযে প্রস্তাব করেছে তা তাও ত্যচিনের চিন্তাধারাকে সম্প্রসারিত করেছে । এ সম্পর্কে রাজনৈতিক পরামর্শ সম্মেলনের ভাইস চেযারম্যান লিউ ইয়েনতুঙ বলেছেন , বিশ্বে বৃহত্তম উন্নয়নশীল দেশ এবং " সুষম" সংস্কৃতির লালনপালনপ্রাপ্ত একটি দেশ হিসেবে চীনের উন্নয়ন বিশ্বের জন্য আরও বেশী সুযোগ এনে দেবে । চীন চিরকালই বিশ্বশান্তি রক্ষা এবং অভিন্ন উন্নয়নের একটি সবচেয়ে দৃঢ় শক্তি হবে ।
চীনে ধর্ম বিশ্বাস ও না বিশ্বাসেরস্বাধীনতা নীতি চালু রয়েছে । তাও ধর্মের বিশ্বাস ও সম্মানপুরোপুরি রক্ষা পেয়েছে । এখন মূল চীনে তাও ধর্মের মোট ৫০ হাজার যাজক আছেন । তাও ধর্মেরমোট ৫ হাজার মন্দিরআনুষ্ঠানিকভাবে খোলা রয়েছে । এর মধ্যে ২১টিকে দেশের গুরুত্বপূর্ণ মন্দিরের নামের তালিকায় অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে । চীনের তাও ধর্ম সমিতির ভাইস চেয়ারম্যান চাং চিইয়ু বলেছেন , এবারের ফোরাম থেকে চীন সরকারের ধর্ম বিশ্বাসের স্বাধীনতারনীতি পুরোপুরিভাবেই প্রমাণিত হয়েছে ।
|