বোয়াও এশিয়া ফোরামের ২০০৭ সালের বার্ষিক সম্মেলন ২১ এপ্রিল দক্ষিণ চীনের হাইনান প্রদেশের বোয়াও শহরে উদ্বোধন হয়েছে । এবারের সম্মেলনের শিরোনাম হল " এশিয়া পৃথিবীজুড়ে অর্থনীতি জয় করবেঃ উদ্ভাবন ও টেকসই উন্নয়ন । ৩৬টি দেশ ও অঞ্চলের এক হাজার চারশজন রাজনীতিক , শিল্পপতি ও পন্ডিত এতে উপস্থিত ছিলেন । চীনের জাতীয় গণ কংগ্রেসের স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান উ পাংকো উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভাষণ দিয়েছেন । ভাষণে তিনি উল্লেখ করেছেন , চীনের উন্নয়ন এশিয়া ও বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে নিবিড়ভাবে জড়িত । চীন অব্যাহত ও সক্রিয়ভাবে এশিয়ার বিভিন্ন দেশ ও অঞ্চলের সঙ্গে বন্ধুত্ব ও সহযোগিতামূলক সম্পর্ককে জোরদার করে এশিয়ার উন্নয়ন ও সমৃদ্ধিকেত্বরান্বিত করতে থাকব ।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে চীনের জাতীয় গণ কংগ্রেসের স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান উ পাংকো " এশিয়ার শান্তি ও সহযোগিতার সুষম নতুন পরিস্থিতি সৃষ্টি করুন" শিরোনামে ভাষণ দিয়েছেন । তিনি বলেছেন , এশিয়া বিশ্বের শান্তি ও উন্নয়নে অধিক থেকে অধিকতর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে ।তিনি বলেন , আমরা আনন্দের সঙ্গে উপলব্ধি করছি যে, এশিয়ার টেকসই উন্নয়নের ভিত্তিতে আঞ্চলিক অর্থনেতিক যোগাযোগ দিনদিন নিবিড় হচ্ছে । সংলাপ ও সহযোগিতা জোরদার হচ্ছে । অভিন্ন স্বার্থ অনবরতভাবে সম্প্রসারিত হচ্ছে । চেতনার বিকাশ দ্রুত বেড়ে যাচ্ছে । উন্নয়ন ও সহযোগিতায় সু প্রবনতা দেখা দিয়েছে । এশিয়া ইতোমধ্যে গোটা পৃথিবীর অর্থনীতিতে সবচেয়ে তেজিয়ান ও প্রচ্ছন্ন শক্তিসম্পন্নঅন্যতম অঞ্চলে পরিণত হয়েছে । এশিয়া বিশ্বের অর্থনীতির উন্নয়নে এক গুরুত্বপূর্ণ চালিকা শক্তিতে পরিণত হয়েছে ।
তিনি বলেছেন , ২০০০ সাল থেকে এ পর্যন্ত এশিয়ার অভ্যন্তরীণ মোট উত্পাদন মূল্যের বার্ষিক বৃদ্ধি হার ৬ শতাংশ ছাড়িয়েছে । বিশ্ব অর্থনীতির উন্নয়নে এর গড়পরতা অবদান ২০ শতাং শে দাঁড়িয়েছে । এখন এশিয়ার অর্থনীতিরমোট পরিমাণ গোটা বিশ্বের এক চতুর্থাংশ এবং এর মোট বাণিজ্য মূল্য গোটা বিশ্বের এক তৃতীয়াংশে দাঁড়িয়েছে । উ পাংকো আরও উল্লেখ করেছেন , শান্তি ও উন্নয়নের প্রক্রিয়ায় এশিয়ার বিভিন্ন দেশ ও অঞ্চলের সহযোগিতাকে আরও জোরদার করতে হবে , বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির উদ্ভাবন দ্রুততর করতে হবে , প্রাকৃতিক সম্পদের পরিবেশ রক্ষা করতে হবে এবং যৌথভাবে এশিয়ার সুষমতাকে তরান্বিত করতে হবে ।
ভাষণে উ পাংকো চীনের অর্থনীতির উন্নয়ন সম্পর্কে বর্ণনা করেছেন । তিনি বলেছেন , গত ৩০ বছরে চীনের অর্থনীতিরবৃদ্ধির দ্রুত অবস্থাবজায় রেখেছে । ২০০১ সাল থেকে এ পর্যন্ত প্রতি বছর গড়ে চীন ৫০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের পণ্যদ্রব্য আমদানি করে । সংশ্লিষ্ট দেশ ও অঞ্চলের জন্য প্রায় এক কোটি কর্মসংস্থানের সুযোগও সৃষ্টি করেছে । ২০০৬ সালে চীনের মোট আমদানিমূল্য প্রায় ৮০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে দাঁড়িয়েছে । এর মধ্যে এশিয়ার দেশ ও অঞ্চল থেকে ৬০ শতাংশ আমদানি করেছে ।
উ পাংকো জোর দিয়ে বলেন , আগের মতো চীন এখন এবং ভবিষ্যতেও সক্রিয়ভাবে এশিয়া ও বিশ্বের শান্তি ও উন্নয়নে অংশ নেবে । চীন দৃঢ়তার সঙ্গে শান্তিপূর্ণ উন্নয়নের পথ অনুসরণ করবে । তিনি বলেন , আমরা সবসময় সুপ্রতিবেশীসুলভ নীতি ও প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে বন্ধুত্ব স্থাপনের পররাষ্ট্রনীতিএবং প্রতিবেশীদেশগুলোর সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক স্থাপন এবং স্থিতিশীলতা বজায় রাখা এবং সমৃদ্ধশালী করার পররাষ্ট্রনীতি পালন করে এশিয়ার বিভিন্ন দেশ ও অঞ্চলের বন্ধুত্ব ও সহযোগিতামূলক সম্পর্ককেজোরদার করব । শান্তি পূর্ণ ও স্থিতিশীল আঞ্চলিক পরিবেশ সৃষ্টি করার প্রচেষ্টাও চালিয়ে যাব । সক্রিয়ভাবে এশিয়ার আঞ্চলিক সহযোগিতাএবং যৌথভাবে এশিয়ার উন্নয়ন ও সমৃদ্ধিকেত্বরান্বিত করব ।
ফিলিপাইনের প্রেসিডেন্ট গ্লোরিয়া আরয়োও উদ্বোধনীঅনুষ্ঠানেভাষণ দিয়েছেন । তিনি বলেন, আমি এশিয়ার জন্য গর্বিত । বিশ্ব অর্থনীতিতে এশিয়া যে পরস্পরের জন্য জয় এনে দেবে এই কারণটির জন্যও আমি গর্বিত । বোয়াও ফরাম বিশ্ব অর্থনীতির উন্নয়ন এবং এশিয়ার চরিত্র নিয়ে আলোচনা করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ । তিনি এশিয় দেশগুলোর মধ্যে কার্যকর অর্থনৈতিক সহযোগিতা সম্পর্কে অত্যন্ত আশাবাদী ।
মাইক্রোসফ্টের প্রেসিডেন্ট বিল গেইটস এশিয়ার অর্থনীতির উন্নয়নের ইতিবাচক মুল্যায়ন করেছেন ।
|