কুষ্টিয়া জেলার শ্রোতা আবু ছিদ্দিক তাঁর চিঠিতে জিজ্ঞেস করেছেন, চীনের জাতীয় ফুল আর পাখি কি? শ্রোতা বন্ধু, এর আগে আরও কয়েক জন শ্রোতা একই প্রশ্ন করেছেন। দু:খের ব্যাপার হল, এখন পযন্র্ত চীনের জাতীয় ফুল আর পাখি নিবার্চিত হয়নি। হয়তো সঙ্গে সঙ্গে শ্রোতাদের প্রশ্ন উঠবে কেন চীনে জাতীয় ফুল আর পাখি নেই। উত্তরে বলছি, চীন একটি বিশাল দেশ। চীনের স্থলভাগের মোট আয়তন ৯৬ লক্ষ বর্গ কিলোমিটার। চীনে ২৩টি প্রদেশ , ৫টি স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল এবং ৫টি কেনদ্রীয় শাসিত শহর আছে। সুতরাং চীনে জাতীয় ফুল ও পাখি নিবার্চন করা সত্যিই একটি কঠিন ব্যাপার। কয়েক বছর আগে জনসাধারণের মধ্যে জাতীয় ফুল ও পাখি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। কিন্তু কোন মতৈক্য অর্জিত হয়নি বলে পরে এ ব্যাপার নিয়ে আর আলোচনা হয়নি। উল্লেখ্য যে , এ ব্যাপারে চীনের মানুষের বেশী কৌতুহল নেই।
নরসিংদি জেলার শ্রোতা হুমায়ুন কবীর তাঁর চিঠিতে জানতে চেয়েছেন করেছেন, চীনের দীর্ঘতম নদীর নাম কি? উত্তরে বলছি, চীনের দীর্ঘতম নদীর নাম ছাংজিয়াং অথবা ইয়াংসি নদী। ইয়াংসি নদী পৃথিবীর তৃতীয় দীর্ঘতম নদী। ইয়াংসি নদীর উত্পত্তি হয়েছে থাংগুলা পবর্তমালার প্রধান শৃঙ্গ তুষারঢাকা গেলাডানডোং-এর দক্ষিণ-পশ্চিম দিক থেকে থুয়োথুয়ো নদী হিসেব। এর পর ইয়াংসি নদী ছিংহাই, তিব্বত, সিছুয়ান, ইয়ুন্নান, হুবেই, হুনান, জিংয়াসী, হানহুই এবং জিয়াংসুর মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে শাংহাইতে পূবর্চীন সাগরে গিয়ে মিশেছে। ইয়াংসি নদীর মোট দৈর্ঘ্য ৬৩০০ কিলোমিটার। শাংহাই, সানজিং, উহান এবং ছোংছি-এর মতো গুরুত্বপূর্ণ শহরগুলোকে সংযুক্ত করে একটি প্রধান শিরাপথের মতো ইয়াংসি নদী প্রবাহিত।
দিনাজপুর জেলার শ্রোতা আতাহার আলী তাঁর চিঠিতে জিজ্ঞেস করেছেন, সি আর আইএর বাংলা বিভাগে কর্মরতসাংবাদিকরা কোথায় বাংলা ভাষা শিখেছেন? উত্তরে বলছি, এখন বাংলা বিভাগে ১৩ জন সাংবাদিক আছেন। এদের মধ্যে ৯জন ২০০৪ সাল থেকে বাংলা বিভাগে কাজ করছেন। তাঁরা চীনের তথ্য মাধ্যম বিশ্ববিদ্যায়ের স্নাতক। কিন্তু তাঁরা ২০০২ সালে বাংলাদেশে দশ মাস পড়াশুনা করেছেন। ২ জন বাংলাদেশে পড়াশুনা করেছেন। বাকী ২ জন বতর্মানে বাংলা বিভাগে শিখছেন। বাংলা বিভাগের দু'জন বিশেষজ্ঞ এবং বাংলা বিভাগের প্রবীন কর্মচারী বাই কেই ইয়ান তাদেরকে পড়াচ্ছেন। এ দু'জন ছাত্র বাংলা বিভাগে ভর্তি হওয়ার আগে অন্য বিষে শিখেছেন। এখানে উল্লেক করতে হবে যে, চীনে যত জন বাংলা ভাষা জানেন তারা সবাই কমপক্ষে একবার বাংলাদেশে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। বতর্মানে চীনের তথ্য মাধ্যম বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৫জন ছাত্র-ছাত্রী বাংলা ভাষা শিখছেন। ভবিষ্যতে তাদের মধ্যে কয়েকজন সম্ভাবত বাংলা বিভাগে যোগ দিতে পারেন।
ভারতের বধর্মান জেলার শ্রোতা আবু নাসের মনিরুজ্জামাল তাঁর চিঠিতে জিজ্ঞেস করেছেন, কোন সালে ভারত আর চীনের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠিত হয়? উত্তরে বলছি, ১৯৫০ ৪ এপ্রিলে দু'দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠিত করে। ভারত হল প্রথম অ-সমাজতান্ত্রিক দেশ হিসেবে চীনের সঙ্গে কূটনেতিক সম্পর্কের প্রতিষ্ঠা হয়। চীন ও ভারতের মধ্যে মৈত্রী সুদীর্ঘকালের । ১৯৫৪ সালে দু'দেশের প্রধানমন্ত্রীদের মধ্যে সফর বিনিময় হয়। দু'দেশের শীর্ষ নেতাদের যৌথ প্রস্তাবে বিশ্ববিখ্যাত শান্তিপূর্ণ পঞ্চশীলনীতি প্রণীত হয়। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বিভিন্ন ক্ষেত্রে চীন আর ভারতের মধ্যে সহযোগিতা সম্প্রসারিত হয়েছে। গত বছর ছিল 'চীন-ভারত মৈত্রী বর্ষ' । এ উপলক্ষ্যে দু'দেশে নানা ধরনের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। গত বছরের শেষ দিকে চীনের প্রেসিডেন্ট হু চিন থাও ভারত সফর করেছেন। এতে প্রতিপন্ন হয়েছে যে, চীন আর ভারতের মধ্যে ঐতিহ্যবাহী সম্পর্ক একটি নতুন পযার্য়ে উন্নীত হয়েছে। আমা বিশ্বাস করি, ভবিষ্যতে দু'দেশের মধ্যে সম্পর্ক আরও নিবিড় হবে । বিভিন্ন ক্ষেত্রে দু'দেশের সহযোগিতা আরও সম্প্রসারিত হবে। চীন আর ভারত দু'টো প্রতিবেশী দেশ। সুতরাং দু'দেশের মধ্যে আদান-প্রদান আরও জোরদার হওয়া উচিত।
শ্রোতা বন্ধুরা, এতক্ষণ শুনলেন আমাদের প্রত্যেক বুধবারের বিশেষ অনুষ্ঠান মুখোমুখি। অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার আগে আপনাদের জন্য একটি প্রশ্ন। প্রশ্নটি হল : চীনে কয়েটি জাতি আছে? আবার বলছি, চীনে কয়টি জাতি আছে। আপনার উত্তর চিঠিতে লিখে আমাদের পাঠাবেন। আজকের মুখোমু্খি এখানে শেষ হল, ভাল থাকুন , সুস্থ্য থাকুন , আগামী সপ্তাহে আবার কথা হবে।
|