চীনের উন্মুক্তকরণ মানের উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে চীনে বিদেশি মানব সম্পদের চাহিদাও বেড়ে যাচ্ছে । বর্তমানে চীনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে নিয়োজিত বিদেশি বিশেষজ্ঞের সংখ্যা ২ লাখেরও বেশি । তারা চীনের নির্মাণ ও উন্নয়নের জন্য অবদান রাখছেন । চীনের সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলোও তাদেরকে সার্বিক পরিসেবার ব্যবস্থা করেছে , যাতে তাদের জন্য আরো সন্তোষজনক জীবন ও কর্মের পরিবেশ সৃষ্টি করা যায় ।
আমার পরিবারের সঙ্গে পেইচিংয়ে আমার সুখ ও আনন্দের মধ্য দিয়ে সময় কাটে । আমার ছেলেমেয়েরা এখানকার স্কুলে লেখাপড়া করে । আমি আর আমার সহকর্মীদের সম্পর্কও অনেক ভালো । আমি চীনকে , পেইচিংকে ইতোমধ্যেই আমার দ্বিতীয় জন্মস্থান হিসেবে মনে করতে শুরু করেছি ।
আব্বাস জায়াদ দাইমী নামে একজন বিশেষজ্ঞ এ কথা বলেছেন । তিনি ইরাক থেকে পেইচিংয়ে এসে একটি তথ্য মাধ্যমে কাজ করছেন । তিনি তার চীনা সহকর্মীদের আরবী ভাষা অনুবাদ সংশোধনের কাজ করেন । আট বছরের চীনা জীবনের মাধ্যমে তিনি পেইচিংকে ভালোবেসে ফেলেছেন । তিনি সংবাদদাতাকে বলেন , তিনি চীন ও পেইচিংকে সমানভাবে পছন্দ করেন , তাই নিজের পরিবারের সবাইকে তিনি চীনে নিয়ে এসেছেন ।
আব্বাসের মত এমন বিদেশি বিশেষজ্ঞ চীনে ২ লাখেরও বেশি । তারা কৃষি , শিল্প , অর্থ , শিক্ষা ও তথ্য মাধ্যমে কাজ করেন । কিছু কিছু কাজের জন্য , কিছু চীনা ভাষা শেখার জন্য এবং কিছু চীনা সংস্কৃতি উপলব্ধির জন্য চীনে এসেছেন । তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কারণ হল তাদের চোখে চীনে উন্নয়নের সুযোগ অনেক বেশি । গত বছরের গ্রীষ্মকালে ব্রিটেন থেকে চীনে আসা পল ডিক্সন বলেন ,
চীনের গুরুত্ব প্রতিদিনই বৃদ্ধি পাচ্ছে । ব্রিটেনে থাকার সময় চীনের গুরুত্ব উপলব্ধি করার বিষয়ে সবসময় আমাদেরকে বলা হয়েছে । একবিংশ শতাব্দী চীনের শতাব্দী । চীনে এত বেশি সুযোগ রয়েছে যে , প্রত্যেক বছরেই বহু সংখ্যকবিদেশিরা চীনে এসে ব্যবসা , পর্যটন অথবা লেখাপড়া করেন । চীন সম্পর্কে তাদের তীব্র ভালোবাসাও আছে ।
ডিক্সন এখন চীনের একটি পি আর কোম্পানীতে কাজ করেন । তিনি বলেছেন , চীনের চাকরি ও জীবনের সঙ্গে ভালোভাবে খাপ খাওয়ানোর জন্য চীনে আসার পর পরই তিনি একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে চীনা ভাষা শিখতে শুরু করেছেন । তিনি খুব অবাহ হয়েছে যে চীনের বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রায় প্রত্যেকেই ইংরেজী বলতে পারে । ডিক্সন মনে করেন , একটি অপরিচিত জায়গায় এসে প্রত্যেককে খাপ খাওয়ানোর জন্য কিছু সময় লাগে । তবে চীনে তিনি অল্প সময়ের মধ্যেই চীনাদের জীবনের সঙ্গে মিশে গেছেন । তিনি মনে করেন ভাষা যোগাযোগের বাধা হয় নি ।
বিদেশি বিশেষজ্ঞদের জন্য চীনের দেয়া পরিসেবার মান অব্যাহতভাবে উন্নত হচ্ছে , এটিও তাদেরকে চীনে আকর্ষণ করার একটি কারণ । চীনের জাতীয় বিদেশি বিশেষজ্ঞ ব্যুরো প্রতি বছর আন্তর্জাতিক মানব সম্পদ বিনিময় সম্মেলনের আয়োজন করে বিদেশি বিশেষজ্ঞদের চীনে চাকরি খোঁজার জন্য সুবিধা দেয় । চীনের বিদেশি বিশেষজ্ঞ ব্যুরোর বিশেষ ওয়াইবসাইটে নিয়মিতভাবে সারা বিশ্বে চীনের প্রধান প্রধান শহরের নিযুক্ত তথ্য প্রকাশিত হয় । এ ব্যুরো তাদেরকে চিকিত্সা বীমাও দিয়ে থাকে । তারা নিজের পছন্দের হাসপাতাল বাছাই করতে পারেন । এসব হাসপাতালের ডাক্তার ও নার্সরা বিদেশি ভাষায় রোগীদের সঙ্গে যোগাযোগও করতে পারে ।
চীনের আন্তর্জাতিক মানব সম্পদ বিনিময় সমিতির চীনা কর্মী সিয়া পিং বলেন , অনেক বিদেশি বিশেষজ্ঞ মনে করেন , চীনে চাকরির সুযোগ বেশি , সমাজিক পরিবেশ সুষ্ঠু , পরিসেবা ব্যবস্থা সম্পন্ন এবং লোকজন খুব বন্ধুত্বপ্রতীম । তাই তারা চীনে কাজ করতে খুব পছন্দ করে । সিয়া পিং বলেন
বিদেশে থাকা বিদেশি বিশেষজ্ঞরা যদি জীবনযাপনের পরিবেশ পরিবর্তন করতে চান , তাহলে চীন প্রথম বাছাই দেশগুলোর অন্যতম ।
এখন বিদেশি বিশেষজ্ঞদের জন্য চীনের পরিসেবার মান অব্যাহতভাবে উন্নত হচ্ছে । চীন তাদেরকে চীনে চাকরি ও জীবনযাপনের সুষ্ঠু পরিবেশ সৃষ্টি করার লক্ষ্যে অব্যাহতভাবে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে ।
|