v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2007-04-19 13:38:57    
হোহাই পাব এলাকা

cri
     পেইচিংয়ের বিখ্যাত পেইহাই পার্কের পিছনে একটি বড় হ্রদ রয়েছে । এর নাম হোহাই । গ্রীষ্মকালে হ্রদ শান্ত ও স্থির। এর চারপাশে সবুজ গাছের পাতাগুলো বাতাসের সঙ্গে নাড়ায়, হ্রদে শাপলা ফুল ফুটে । শীতকালে ঠাণ্ডা হওয়ার জন্য হ্রদ একটি স্কেটিং রিংকে পরিণত হয় । হ্রদের দুই তীরে সুসম্পূর্ণভাবে রয়েছে ছিং রাজবংশের রাজাদের বাসভবন । তা ছাড়া হ্রদের দুই তীরে অনেক কফি হাউস এবং রেস্টরেন্টও রয়েছে । প্রত্যেকটি রেস্টরেন্টেরই নিজস্ব বৈশিষ্ট্য রয়েছে । আপনি যে কোনো একটি সদৃশ্য রেস্টরেন্টে খেতে পারেন । এখানকার পাব এলাকা হচ্ছে পেইচিংয়ের সানলিথুনের পর অন্য একটি বিখ্যাত পাব এলাকা ।

    হোহাই হ্রদের কাছাকাছি লুওকুসিয়াং অলিতে অনেক পাব রয়েছে । সেখানে খেলেই দেখবেন শান্ত পথ দেখতে ঠিক যেন ছবির মতো । প্রাচীরবেষ্টিত ছাদবিহীন অঙ্গন, সরু পথ, অলির ভিতরে ১০০ মিটার সামনে গেলে একটি কালো রঙের দরজা দেখবেন । দরজায় লাল রঙয়ের প্রাচীরপত্র রয়েছে । লাল রঙয়ের লন্ঠন দরজার দুই পাশে ঝালড় হয়ে ঝুলছে । স্থানটি ৮ বছর ধরে খোলা অবস্থায় চীনা ও বিদেশী পর্যটকদের কাছে জনপ্রিয় বার পাসপাই বার ।

   পাসপাই বারের অঙ্গনে কয়েকটি বড় গাছ রয়েছে । গাছের নীচে পুরনো কাঠ দিয়ে তৈরী টেবিল ও চেয়ার রয়েছে । পাবের ভিতরে দোয়ালের কাছে অনেক বই রাখা । এর মধ্যে অধিকাংশ বই সংস্কৃতি ও পর্যটন বিষয় সংক্রান্ত । ঘরের কোণে মালিকের ডিজাইন করা কাপড় টাংগানো রয়েছে । কাপড়ের কালো ও লাল রঙ পুরনো টেবিল ও চেয়ারের সঙ্গে সুষমভাবে মিশে আছে ।

    বারের  মালিক সিয়াওপিয়ান হলেন একজন সাইকেল পর্যটক। তাঁর মাথায় একটি বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন ছোট বেণী থাকার জন্য সবাই তাঁকে সিয়াওপিয়ান বলে ডাকে । সিয়াওপিয়ান চীনা ভাষার অর্থ হল ছোট বেণী । তিনিও নিজের নাম পছন্দ করেন । পাবের দোয়ালে রাখা হয় সিয়াওপিয়ানের ভ্রমণের সময় তোলা অনেক ছবি । কেন বারের  নাম পাসপাই বলে ডাকা হয়, এ সম্পর্কে তিনি বলেছেন,  বারের অতিথীরা সুযোগ পেলেই আসেন এবং শীঘ্রই চলে যান । আমি জানি না তাঁরা কোথা থেকে আসে এবং কোথায় চলে যায় । তখন আমার মনে তাঁদের সঙ্গে পাসপাই'র অনুভব থাকে । আসলে তাঁরা আমার জীবনে প্রবেশ করতে পারেন না এবং আমিও তাঁদের জীবনে প্রবেশ করতে পারি না । আমি মনে করি, এ ধরনের সম্পর্ক খুবই মজা । অতিথীরা মদ খাওয়া বা পাসপাই করার জন্য এখানে আসেন, আমার জন্য তাঁরা সবই পাসপাইকারী ।

   বৃটেনের জনসন ব্রুস হলেন এ বারের নিয়মিত অতিথী । তিনি পেইচিংয়ের অলিগলি খুবই পছন্দ করেন । বিশেষ করে পাসপাই পাবে প্রাচীনকালের পেইচিংয়ের ভাব উপভোগ করতে পারেন । এখানে প্রবেশ করার পর আমার মনে ঐতিহাসিক অনুভূতি কাজ করে । এখানে পান করি জানালার বাইরে আকাশ দেখি, আমার জীবন অলিগলিতে চলেছে, আমি পেইচিংয়ের ঐতিহ্যিক অলিগলির জীবনযাত্রা দেখতে পারি । আমি সবসময় এখানে কাজ করি, অঙ্গনে বসি, কবিতা বা প্রবন্ধ লেখি, অনেক আরাম লাগে ।

    পাসপাই বা ছাড়া বাফেলো বাও বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন বায়ের অন্যতম । বাফেলো বার  দুই তলা বিশিষ্ট । প্রথম তলা সঙ্গীত দলের প্ল্যাটফর্ম, দ্বিতীয় তলা দুই ভাগে  বিভক্ত । পশ্চিম হলে মোমবাতি জ্বালানো । পূর্ব হলে পিঙ্ক রঙয়ের পর্দা প্রতি টেবিলের মাঝখানে অবস্থিত। অতিথিরা গ্লাসের জানালা দিয়ে বাইরের হ্রদের সুন্দর দৃশ্য দেখতে পারেন ।

    বাফেলো বারের সাজসজ্জা খুবই রোম্যানটিক। এর বালির দোয়াল নেপাল থেকে আমদানী করা , দোয়াল চিত্র থাইল্যান্ড থেকে আনা । বারের চৌ কাঠ দিয়ে তৈরী । সন্ধ্যায় বারে চেল্লা ও কোমল সঙ্গীত বাজানো হয় । রাত ৯টার পর বিদেশী সঙ্গীত দলের অনুষ্ঠান রয়েছে, তখন খুবই আনন্দময় সময় । বারের পরিচারিকা চিন লু বলেছেন, ২০০৩ সালে দক্ষিণ কোরিয়ার একজন ছাত্র এখানে তাঁর বান্ধবীর জন্য জন্মদিন পার্টির আয়োজন করেন । আমরা তাঁদের জন্য বায়ের সকল আলো বন্ধ করি, সঙ্গীত দল দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গীত বাজায়, পরিবেশকরা জন্মদিনের কেক মেয়েটির সামনে নিয়ে আসে । ছেলেটি গান গাওয়ার পাশাপাশি হাতের গোলাপফুল মেয়েটিকে দেন । বায়ের সব অতিথিই করতালি দেন । মেয়েটিড আনন্দে কেঁদে উঠেন ।

    দ্বিতীয় বছর একই সময় তাঁরা পুনরায় আমাদের বারে এসেছেন । তারা পৃথক পৃথকভাবে নিজের কথা বলেছেন । ছেলেটি আশা করেন ,ভবিষ্যতে ১০ বা ২০ বছর পর ,তিনি তাঁর স্ত্রীর সঙ্গে পুনরায় এখানে আসবেন এবং আমাদের সঙ্গে সম্পর্ক অব্যাহত থাকবে । মেয়েটি বলেছেন, আমাদের বা হচ্ছে তাঁর জীবনের এক গুরুত্বপূর্ণ জায়গা ,তিনি এখানকার আমেজ খুব পছন্দ করেন ।

     মেক্সিকোর জীন হাউসুরও বাফেলো বাকে খুবই পছন্দ করেন । তিনি বলেছেন, এখানকার পরিবেশ রূপকথার মতো সুন্দর , ফ্যাশনসম্মত আধুনিক এবং আনন্দদায়ক । এখানে থাকার সময় আমার দারুণ ভালো লাগে ।

    সানলিথুন বার এলাকার চেয়ে হোহাই বার এলাকা আরো শান্ত এবং সহজভাবে আমাদেরকে পুরনোকালের কথা স্মরণ করিয়ে দেয় । সুযোগ পেলে আপনারা অবশ্যই এখানে বেড়িয়ে আসবেন ।