১২ এপ্রিল সন্ধ্যায়চীন-জাপান ক্রীড়া সাংস্কৃতিক বিনিময় বর্ষের চীন পক্ষের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান মহা আড়ম্বরে জাপানের রাজধানী টোকিওর জাতীয় থিয়েটারে অনুষ্ঠিত হয়েছে । সফররত চীনের প্রধানমন্ত্রী ওয়েন চিয়াপাও ও জাপানের প্রধানমন্ত্রী আবে সিনজো উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন । তারা এক হাজারেরও বেশি চীনা ও জাপানী দর্শকের সঙ্গে চীনা লোক শিল্পীদের নৈপুন্য অভিনয় উপভোগ করেছেন ।
১২ এপ্রিল সন্ধ্যায় চীনের ফুচিয়েন প্রদেশের ছুয়েনচৌ শহরের পুতুল নাচ সকল দর্শক ও দুদেশের প্রধানমন্ত্রীরসমাদর পেয়েছে । এ দিন প্রধানমন্ত্রী ওয়েন চিয়াপাও জাপানের জাতীয় সংসদে বক্তৃতা দিয়েছেন । তিনি আবে সিনজোর সঙ্গে যৌথভাবে দুদেশের উচ্চ পর্যায়ের সংলাপ ব্যবস্থাচালু সম্পর্কিত সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেছেন এবং জাপানের মৈত্রী সংগঠনের অভ্যর্থনানুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ।
উদ্বোধনী অনুস্ঠানে প্রধানমন্ত্রী ওয়েন চিয়াপাও বলেছেন , চীন- জাপান মৈত্রী সম্পর্কের ইতিহাস দুহাজার বছর পুরানো । এই দু'হাজারেরও বেশি বছরে দুটি উজ্জ্বলফিতা যেন আমাদেরকে নিবিড়ভাবে বেধে রেখেছে নতুন ভবিষ্যতের আশায় । এর একটি হল অর্থনীতি আরএকটি হল সংস্কৃতি । অর্থনৈতিকসহযোগিতায় দুদেশের জনগণ সত্যিকারভাবেই নিজেদের স্বার্থকেপেয়েছেন আর সাংস্কৃতিক বিনিময়ের মাধ্যমে দুদেশের জনগণ নিবিড়ভাবে অপেক্ষার প্রহর শেষে হৃদয়ের অব্যক্ত কথাগুলো বিনিময় করতে পেরেছেন । বলা যায়, ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক বিনিময় হচ্ছে দুদেশের জনগণের মৈত্রীর সংযোগসেতু ।
জাপানের প্রধানমন্ত্রী আবে সিনজো তাঁর ভাষণে বলেছেন , এ বছর জাপান ও চীনের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণের ৩৫তম বার্ষিকী । এই গুরুত্বপূর্ণদিবস উপলক্ষে আমরা এ বছরকে ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক বিনিময় বর্ষ হিসেবে নির্ধারণ করেছি । আমি প্রায়ইবলি, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সহযোগিতার উন্নয়নের উপর নির্ভর করে দুদেশের সম্পর্ক উন্নয়ন হতে পারে । কিন্তু সংস্কৃতি সত্যিকারভাবেই দুদেশকে নিবিড়ভাবে সংযোজন করেছে । অপরপক্ষের সংস্কৃতিকে জানলেই কেবল অপরপক্ষকে বুঝতে পারা যাবে ।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে চীনের লোক শিল্পীরা " দেশ রক্ষা" শিরোনামে একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করেছেন । দক্ষিণ পশ্চিম চীনের কুইচৌ প্রদেশের একটি পাহাড়ী গ্রামের কয়েকজন ছোটো মেয়ে জাপানের দর্শকদের তুং জাতির গান শুনিয়েছে । মেয়েদের সহজ ও সুন্দর গান উপস্থিত দর্শকদেরসমাদর পেয়েছে । অনুষ্ঠান শেষে টোকিও শহরের ফুজিকা বলেছেন , আমি পুতুল নাচ পছন্দ করি । আমি এই প্রথমবার এধরণের পুতুল নাচ দেখেছি । জাপানের পুতুল নাচের চেয়ে এই পুতুল নাচ একেবারে ভিন্ন । এতে আমি চীনের সংস্কৃতির সৌন্দর্যকে উপলব্ধি করেছি । ভবিষ্যতেও এমন সুন্দর পুতুল নাচ দেখার সুযোগ পাব বলে আমি আশা করি ।
চলচ্চিত্রশিল্পীরিয়োকো নাকানো চীনা দর্শকদের কাছে অত্যন্ত পরিচিত । তিনি বলেছেন, প্রতিটি নাচ গান এবং পুতুল নাচ আমার ভাল লাগে । গান শুনে এবং নাচ দেখে আবার আমার চীনে যেতে ইচ্ছে করছে । এধরণের ঐতিহ্যিক সংস্কৃতির বিনিময় বর্তমান প্রজন্মের জন্যে অত্যন্ত প্রয়োজনীয় ।
চীন-জাপান ক্রীড়া সাংস্কৃতিক বিনিময় বর্ষের প্রতীক ও শ্লোগান প্রকাশ্যভাবে দুদেশে সংগ্রহ করা হয়েছে । প্রতীকটি নক্সা করেছেন একজন জাপানী নারী । চায়না ও জাপান এদুটি ইংরেজী শব্দের প্রথম বর্ণ"সি ও জে" দিয়ে প্রতীকটি তৈরী ।এর অর্থ হল দুদেশের বিনিময় হৃদয়ের বিনিময় । "হৃদয়ের অপেক্ষা, নতুন ভবিষ্যত" বিনিময় বর্ষের শ্লোগান। এটি চীনের একটি অতি সাধারণ ছেলে তৈরী করেছেন । শ্লোগানটির অর্থ হল , দুদেশের জনগণ চীন-জাপান সম্পর্কের অকৃত্রিমউন্নয়নেরআশা রাখেন ।
|