v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2007-04-13 18:35:20    
চীনে বিদেশী কূটনীতিবিদদের স্ত্রীদের সুখী জীবন

cri
 এপ্রিল মাসের একদিন , বসন্তের মৃদু বাতাস ঝিরঝির করে বইছে ,সোনালি রোদে আকাশ ঝলমল করছে । আবহাওয়াটা বৃক্ষরোপনের বিশেষ উপযেগী , আনন্দমূখর পরিবেশে চীনে নিযুক্ত বিদেশী কূটনীতিবিদদের স্ত্রীরা পেইচিংয়ের বন বিভাগের কর্মীদের সাহচর্যে পেইচিংয়ের উপকন্ঠে গাছ লাগাতে যান ,সি আর আইয়ের সংবাদদাতা তাঁদের সংগে থেকে চীনে তাঁদের সুখী জীবনের পরিচয় পেয়েছেন ।

 চীনে নিযুক্ত রাসিয়ার মিনিস্টারের স্ত্রী মাদাম লিউডমিলা ভারী সুন্দরী , দিঘল চেহারা তাঁর , সোনালি চুল কাঁধ পর্যন্ত ছড়ানো , নীল চোখদুটো খুব বড় , হাসিখুশি তাঁর স্বভাব ,আমাদের সংবাদদাতার কাছে সগর্বে বর্ননা করেছেন তাঁর পরিবারের জীবন । তিনি বলেছেন : চার বছর কেটে গেল আমি পেইচিংয়ে এসেছি , পেইচিংয়ের বসন্তকাল আমার ভালোলাগে , রোদ্রোজ্জ্বল পরিস্কার শহরে রংবেরংয়ের ফুল ফুটে । আমার দুটো সন্তান পেইচিংয়ে পড়াশোনা করেছে , বড় মেয়ে লেখা পড়া শেষ করে দেশে ফিরে গেছে, ষোল বছর আগে পেইচিংয়েই আমরা ছেলের জন্ম ,ও এখন পেইচিংয়ে লেখাপড়া শিখছে ।

  লিউডমিলা যে কতবার চীনে এসিছেন তাঁর মনে নেই ,এবার তিনি চীনে চার বছর থাকবেন ,মাঝবয়সী লিউডমিলা পেইচিংয়ের সাংস্কৃতিক পরিবেশে বিমোহিত । গৃহস্থালীর কাজ শেষ করে তিনি রাস্তায় নেমে পেইচিংয়ের প্রাচীন প্রাচীরের লাল ইট বুলাতে বুলাতে হাঁটেন ,অথবা যাদুঘর ও প্রাচীন মন্দির দেখতে যান । তিনি বলেছেন : পেইচিং শহর , পেইচিংয়ের যাদুঘর আর পেইচিংয়ের মন্দির সবই আমার ভালোলাগে ,আমার স্বামীর অনেক বন্ধু আছেন , অবসরে তাঁদের সংগে আমরা পাহাড় চড়াতে যাই ,অথবা মন্দিরের শিল্পকর্ম উপভোগ করতে যাই ।

 গত বছরের শেষ নাগাদ লিউডমিলার পক্ষে যেটা নিয়ে ছোটোকাটো একটা পরিতারের বিষয় ছিলো সেটি হলো ,পেইচিংয়ের বাইরে তাঁর যাওয়ার সুযোগ হয় নি । তবে তিনি আনন্দের সংগে আমাদের সংবাদদাতাকে জানালেন যে ,এই বছরের নববর্ষ উপলক্ষে তাঁর অনেক বছরের আশা পূর্ণ হয়েছে , স্বামীর সংগে তিনি দক্ষিণ চীনের হাইনান প্রদেশ ভ্রমন করেছেন এবং শীতকালের উঞ্চ সুর্যালোক এ তীরের আর্দ্র বায়ু উপভোগ করেছেন ।

 লিউডমিলার চেয়ে চীনের নিযুক্ত কিউবার রাষ্ট্রদূতের স্ত্রী হিরাইদারের চীনে থাকার সময় আনেক কম । তবে চীনে অবস্থানের দু বছরে তিনি পেইচিংয়ের বাইরের অনেক স্থানে ভ্রমন করেছেন । তিনি বলেছেন: সি আন , হাংচৌ ,হারপিন, সাংহাই ,হংকং সহ অনেক শহরে আমি ভ্রমন করেছি , চীনের মাত্র ছটি প্রদেশ বা কেন্দ্র শাসিত মহানগরে আমি যাই নি । হাংচৌ ও হংকং দেখতে কিউবার শহরের মত । চীনের প্রতিটি স্থান আমার ভীষন ভালোলাগে । পেইচিংয়ের থিয়ান আন মেনের মত চীনের পুরাকীর্তি আমার মনে গভীর দাগ কেটেছে ।

 পর্যটন অনুরাগী হিরাইদার চীনা পোশাকও খুবই পছন্দ করেন । গলায় যে রেশমী স্কার্ফ পরেন তিনি তা একজন চীনা বন্ধু তাঁকে উপহার দিয়েছেন । হিরাইদার বলেছেন ,তাঁর অনেক চীনা বন্ধু আছেন , তিনি মাঝে মাঝে তাঁদের সংগে চীনা ভাষায় কথা বলার চেষ্টা করেন এবং রেস্তোরাঁয় গিয়ে চীনা খাবার খান । তাঁর জীবন আনন্দে পরিপুর্ণ ।

 বিদেশী কূটনীতিবিদদের স্ত্রীদের জীবনে তাঁদের চীনা বন্ধু বান্ধবীদের ভুমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপুর্ণ । চীনা বন্ধু বান্ধবীদের সাহায্যে তাঁরা চীনা ভাষায় কথা বলতে শিখেছেন , চীনাদের সংগে মেলামেশা করতে শিখেছেন এবং চীনের বিভিন্ন স্থানের রন্ধনশৈলীর পার্থক্য বুঝতে পেরেছেন ,চীনা বন্ধু বান্ধবীদের সান্নিধ্য পেয়ে তাঁরা সহজে চীনা সমাজে প্রবেশ করে খাঁটি চীনা জীবনের স্বাদ পেয়েছেন ।

 চীনে নিযুক্ত লিবিয়ার রাষ্ট্রদূতের স্ত্রী ফায়েজিয়া পেইচিংয়ে বাস করেছেন পাঁচ বছর । তাঁকে আধা পেইচিংবাসী বলা যায়। এখন চীনা দোকানে জিনিষপত্র কিনতে আর দর্শনীয় স্থানে বেড়াতে তাঁর কোনো অসুবিধা নেই । তাঁর তিনটি মেয়ে পেইচিংয়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করছে,তাঁর আশা:তাঁর তিনটি মেয়ে হবে চীন বিশেষজ্ঞ । তিনি বলেছেন:আমার বড় মেয়ে চীনে আন্তর্জাতিক আইন শিখছে ,ও ইতিমধ্যে মাস্টার্স ডিগ্রি পেয়েছে । আমার মেজো মেয়ে পেইচিং বিদেশী ভাষা ইন্সটিটিউটে ইংরাজী শিখছে। আমার ছোটো মেয়ে একজন লিবিয়ানের প্রাইভারি স্কুলে পড়াশোনা করছে । পেইচিং একটি মনোরম রাজধানী ,আমি পেইচিংকে ভালোবাসি ।

 ভ্রমন , জিনিসপত্র কেনাকাটা, সুস্বাদু চীনা খাবার উপভোগ করা এবং বন্ধুবান্ধবীদরে সংগে মেলামেশা নিয়ে গঠিত হয়েছে বিদেশী কূটনীতিবিদদের স্ত্রীদের বৈচিত্র্যবহুল জীবন ।