v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2007-04-13 18:27:17    
ভারত সাফল্যের সঙ্গে নতুন ধরনের মাঝারি দূরপাল্লার ব্যালিষ্টিক ক্ষেপণাস্ত্র উতক্ষেপণ করেছে

cri

 ভারত ১২ এপ্রিল সাফল্যের সঙ্গে "অগ্নি--৩" নামক ওয়ারহেড বহনযোগ্য একটি মাঝারি পাল্লার ব্যালিষ্টিক ক্ষেপণাস্ত্র উতক্ষেপণ করেছে। এর পাল্লা ৩০০০ কিলোমিটারেরও বেশি। এবারের সফল উতক্ষেপণ থেকে প্রমাণিত হয়েছে যে, ভারত ক্ষেপণাস্ত্র নির্মাণের ক্ষেত্রে এক নতুন পর্যায়ে প্রবেশ করেছে। এটা ভারতের সামরিক শক্তি বাড়ানোর ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ তাত্পর্য বহণ করছে।

 ১২ এপ্রিল সকালে ভারতের পূর্বাংশের ওড়িষ্যা প্রদেশের হুইলার দ্বীপ থেকে "অগ্নি-৩" নামক এই ক্ষেপণাস্ত্রটি উতক্ষেপণ করা হয়। ক্ষেপণাস্ত্রটি আকাশে উড্ডয়নের প্রায় ১৫ মিনিট পর তার পূর্বনির্ধারিত অঞ্চলে পৌঁছা যায়। উড্ডয়নের সময় ক্ষেপণাস্ত্রটি পুরোপুরি নিজের কম্পিউটার ব্যবস্থার ওপর নির্ভর করে লক্ষ্যবস্তুকে খুঁজেছে, তখন ক্ষেপণাস্ত্রটির মাটিতে অবস্থিত নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার সঙ্গে কোন যোগাযোগ ছিল না। ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় একটি বিবৃতিতে বলেছে, পরীক্ষামূলকভাবে উতক্ষেপিত ক্ষেপণাস্ত্রটির পূর্বনির্ধারিত সকল ব্যবস্থা সচল ছিল।

 ভারত দ্বিতীয়বার এই "অগ্নি--৩" নামক ক্ষেপণাস্ত্রটি নিক্ষেপ করেছে। গত বছরের জুলাই মাসে ভারত প্রথম বার "অগ্নি--৩" ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে। কিন্তু সে বার ব্যর্থ হয়ে ক্ষেপণাস্ত্রটি সাগরে ডুবে যায়।

 "অগ্নি--৩" ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র হচ্ছে ভারতের নিজের তৈরি ক্ষেপণাস্ত্র। এর দৈর্ঘ্য ১৬ মিটার, ওজন ৪৮ টন, তা দিয়ে দেড় টন ওজনের ওয়ারহেড বহন করা যায়। এই ক্ষেপণাস্ত্রে দুটি রকেট ইঞ্জিন ও জ্বালানি সম্পদ রয়েছে। এর পাল্লা ৩০০০ কিলোমিটারেরও বেশি। তা দিয়ে পূর্ব এশিয়া ও পশ্চিম এশিয়ার অধিকাংশ স্থানেই আঘাত হানা যাবে। এটা হচ্ছে বর্তমানে ভারতের তৈরি সবচেয়ে দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র। "অগ্নি--৩" ধরনের ক্ষেপণাস্ত্রটি সড়ক বা রেলপথে বসানো যন্ত্রের দ্বারাও উতক্ষেপণ করা যায়। এবারের পরীক্ষায় ক্ষেপণাস্ত্র নির্মাণ ক্ষেত্রে ভারতের কিছু নতুন প্রযুক্তির সফলতাই প্রমাণিত হয়েছে।

 "অগ্নি--৩" ক্ষেপণাস্ত্র সাফল্যের সঙ্গে উতক্ষেপণের পর ভারতের তথ্য মাধ্যম মনে করে, এটা হচ্ছে ভারতের ক্ষেপণাস্ত্র উন্নয়নের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী এই কে এনটোনি ঘোষণা করেছেন, ভারতের ক্ষেপণাস্ত্র প্রযুক্তি পরিপক্ক হয়েছে। এবারের পরীক্ষা ভারতের কৌশলগত হুঁশিয়ারীর সামর্থ্যকে নিশ্চিত করেছে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং মনে করেন, এবারের পরীক্ষার মাধ্যমে প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে ভারতীয় প্রযুক্তিবিদদের হাই-টেক প্রযুক্তি থাকার সুপ্ত শক্তির কথাই প্রকাশিত হয়েছে।

 ১৯৮৩ সালে ভারত একটি বিশাল ক্ষেপণাস্ত্র উন্নয়ন পরিকল্পনা হাতে নেয়। এর মধ্যে অন্তভুর্ক্ত রয়েছে, প্রধানতঃ মাঝারি ও দুরপাল্লা ক্ষেপণাস্ত্র, স্বল্প পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র, স্থল থেকে আকাশে নিক্ষেপযোগ্য মাঝারি ও স্বল্প পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র এবং ট্যাংক-বিরোধী ক্ষেপণাস্ত্র । এর মধ্যে "অগ্নি" নামক মাঝারি ও দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র হচ্ছে গোটা পরিকল্পনার উচ্চতর পর্যায়ের ক্ষেপণাস্ত্র। কয়েক বছর আগে ৮০০ কিলোমিটার পাল্লার অগ্নি-১ এবং ২৫০০ কিলোমিটার পাল্লার "অগ্নি--২" ক্ষেপণাস্ত্র নির্মিত হয়েছে যা ইতোমধ্যেই ভারতীয় বাহিনীর কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এখন "অগ্নি--৩" ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপের মধ্য দিয়ে প্রমাণিত হয়েছে যে, ভারতের সার্বিক ক্ষেপণাস্ত্র উন্নয়ন পরিকল্পনা মোটামুটি সফলতার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। ভারতীয় বাহিনীর প্রয়োজনীয় ক্ষেপণাস্ত্র এখন বলতে গেলে স্বয়ংসম্পূর্ণের পথে। এটা ভবিষ্যতে দূরপাল্লার আন্তঃমহাদেশীয় প্লাসিক ক্ষেপণাস্ত্র গবেষণার ক্ষেত্রে মজবুত ভিত্তি স্থাপন করেছে।

 জনমত মনে করে, ভারত জোর করে মাঝারী ও দূর পাল্লার ব্যালিষ্টিক ক্ষেপণাস্ত্র উন্নয়নের উদ্দেশ্য হচ্ছে ভারতের নিরাপত্তা কৌশলের পাশাপাশি তার শক্তিকেই জোরদার করছে। অন্য দিকে বড় দেশগুলোর মর্যাদার সঙ্গে তার মর্যাদাও জড়িত। "অগ্নি-ত" ক্ষেপণাস্ত্রের পাল্লা দক্ষিণ এশিয়ার আওতার বাইরে ছাড়িয়ে গেছে। সংশ্লিষ্ট খবরে বলা হয়েছে যে, ভারতের আন্তঃমহাদেশীয় প্লাসিক ক্ষেপণাস্ত্রের বিশ্বজুড়ে আঘাত হানার ক্ষমতা থাকবে।