v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2007-04-12 21:28:45    
বেইবু উপসাগর চীন ও আসিয়ানের বাণিজ্যিক বিনিময়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ সংযোগ

cri
    বেইবু উপসাগরের বিছনে চীনের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল এবং সামনে দক্ষিণ এশীয় দেশগুলো। বেইবু উপসাগর হল চীনের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল ও আসিয়ানের সদস্য দেশগুলোর সাগরীয় পরিবহনের গুরুত্বপূর্ন সংযোগ। চীন-আসিয়ান অবাধ বাণিজ্যিক অঞ্চলের প্রতিষ্ঠার প্রক্রিয়ায় তোকিন উপসাগর তার সুবিধা নিয়ে ক্রমান্বয়ে চীন ও আসিয়ানের বাণিজ্যিক বিনিময়ের গুরুত্বপূর্ণ সংযোগ পরিণত হয়েছে। এবারের অনুষ্ঠানে আমি আপনাদের কাছে এ সম্বন্ধে কিছু বলবো।

    বেইবু উপসাগর চীনের নান সাগরের উত্তরাঞ্চলে অবস্থিত। তার তিনদিক হল চীন এবং ভিয়েতনামের ভূমি ও চীনের হাইনান দ্বিপ। ২০০২ সালে চীন আসিয়ানের ১০টি সদস্য দেশের সঙ্গে ২০১০ সালে চীন-আসিয়ান অবাধ বাণিজ্যিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা সম্পন্নের চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। এরপর, উত্তর বেইবু উপসাগরে চীনের কুয়াংসি চুয়াং জাতির স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল কুয়াংতুং, হাইনান প্রদেশ ও ভিয়েতনামের কোনো কিছু প্রদেশের সঙ্গে 'বেইবু উপসাগর অর্থনৈতিক অঞ্চল' প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব করে। গত বছরে চীনের কমিউনিস্ট পার্টির কুয়াংসি চুয়াং জাতির স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের সম্পাদক লিউ ছিপাও 'ফান বেইবু উপসাগর অর্থনৈতিক সহযোগিতা' চালানোর প্রস্তাব করেন। এটি হল আগের 'বেইবু উপসাগর অর্থনৈতিক অঞ্চলের' আয়তন মায়লেশিয়া, সিঙ্গাপুর, ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপান ও ব্রুনেইতে সম্প্রসারিত হয়।

    এ প্রস্তাব অনুযায়ী, কুয়াংসি সরকার প্রথমে বেইবু উপসাগর অঞ্চলে নিজের স্বনিয়ন্ত্রিত অঞ্চলে ও রাজধানী নাননিং শহরে বেইবু উপসাগরের কুয়াংসি অর্থনৈতিক অঞ্চল নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেয়। লিউ ছিপাও সংবাদদাতাদের কাছে বলেছেন, কুয়াংসি অর্থনৈতিক অঞ্চলের নির্মাণের লক্ষ্য হল চীন-আসিয়ান অবাধ বাণিজ্যিক অঞ্চলের কাঠামোয় কুয়াংসি ভিয়েতনাম ও মায়লেশিয়াসহ বিভিন্ন ফান বেইবু উপসাগরীয় দেশগুলোর সঙ্গে অর্থনৈতিক সহযোগিতা উন্নয়ন করা। তিনি বলেছেন,  

    'আমদের উচিত বর্তমানে পরিস্থিতি অনুযায়ী সূদূরপ্রসারী দৃষ্টিতে দেখতে গেলে বেইবু উপসাগরের কুয়াংসি অর্থনৈতিক অঞ্চলের উন্মুক্ত হওয়ার জোরদার করা। চীন-আসিয়ান অবাধ বাণিজ্যিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার কাঠামোয় বেইবু উপসাগরের কুয়াংসি অর্থনৈতিক অঞ্চল খোলা এবং উন্নয়ন করা হবে।

    বেইবু উপসাগরের বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী, বেইবু উপসাগরের কুয়াংসি অর্থনৈতিক অঞ্চলের পরিকল্পনার প্রধান লক্ষ্য হল চীন ও আসিয়ানের বাণিজ্যিক বিনিময়ের গুরুত্বপূর্ণ সংযোগ পরিবর্তন করা।

    ফাংছেংকাং হল বেইবু উপসাগরের কুয়াংসি অর্থনৈতিক অঞ্চলে বৃহত্তম বন্দরীয় শহর। এ বন্দরে ২.১ লাখ টনেরও বেশি পর্যায়ের জাহাজ রাখার জায়গা রয়েছে। প্রতি বছরে ৩কোটি টন জাহাজ রাখার সামর্থ্য আছে। এ বন্দর হল চীন ও আসিয়ান বাণিজ্যিক বিনিময়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ বন্দর।

    ফাংছেংকাং বন্দর বিষয়ক গোষ্ঠীর উপপরিচালক সিয়ে ই বলেছেন, বেইবু উপসাগরের কুয়াংসি অর্থনৈতিক অঞ্চলের পরিকল্পনা অনুযায়ী, এ বন্দরে নতুন জাহাজ রাখার জায়গা নির্মাইত এবং কোন্টেনার ঘাটার নির্মাণ জোরদার করা হচ্ছে। এ বছরের প্রথম দিকে বন্দর ও সাগরে তীরের অঞ্চলে শিল্প অঞ্চল নির্মাণের জন্য স্থানীয় সরকারের সংস্থাগুলো ও ৫০হাজারেরও বেশি নাগরিক পুরনো শহর থেকে প্রত্যাহর করবেন। তিনি বলেছেন, ফাংছেংকাং কয়েক বছরের পর একটি আঞ্চলিক পরিবহন কেন্দ্র হবে। তিনি বলেছেন,

    ''ফান বেইবু উপসাগরের অর্থনৈতিক সহযোগিতায়' আমাদের ফাংছেংকাংয়ের নির্মিত লক্ষ্য আরো উচ্চ পর্যায়ে উন্নীত হয়েছে। আমরা বেইবু উপসাগরী একটি আন্তর্জাতিক পরিবহন কেন্দ্রে নির্মাণ পরিবর্তন করবো।'

    কুয়াংসি চুয়াং জাতি স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল সরকার বর্তমানে ফাংছেংকাং, ছিনচৌ ও বেইহাই তিনটি বন্দরের নির্মাণ উন্নয়ন করছে। যাতে এ তিনটি বন্দরের বহুমূখী প্রতিদ্বন্দ্বিতার উন্নয়ন করা যায়। পরিকল্পনা অনুযায়ী, ২০১০ সাল পর্যন্ত বেইবু উপসাগরীয় অর্থনৈতিক অঞ্চলে ১০কোটি টন পর্যায়ের একটি আধুনিক বহুমূখী বন্দর নির্মিত হবে।

    সাগরীয় পরিবহন ছাড়াও, বেইবু উপসাগরের কুয়াংসি অর্থনৈতিক অঞ্চলের স্থাল পরিবহনও চীন ও আসিয়ানের বাণিজ্যিক বিনিময়ের বাড়ানোর পাশাপাশি দিনে দিনে সমৃদ্ধ হচ্ছে। ২০০৫ সালে কুয়াংসি চুয়াং জাতি স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের রাজধানী নাননিং থেকে চীন-ভিয়েতনাম সীমান্তে মৈত্রী শুল্ক পর্যন্ত হাইওয়ে চালু হয়। দু'বছরে চীনের প্রচুর ভেরী যন্ত্র ও ইলেকটোনিক পণ্যদ্রব্য এ হাইওয়ের মাধ্যমে ভিয়েতনাম ও দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় দেশগুলোয় রফতানি হয়। ভিয়েতনাম ও থাইল্যান্ডসহ বিভিন্ন দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় দেশগুলোর কৃষি পণ্যদ্রব্যও এ হাইওয়ের মাধ্যমে চীনে রফতানি হয়।

    জানা গেছে, পণ্যদ্রব্য আরো সুবিধাভাবে রফতানির জন্য মৈত্রী শুল্কে নতুন আমদানি-রফতানি পণদ্রব্য তদন্তের ভবন, আন্তর্জাতিক পণ্যদ্রব্য বিনিময়ের উদ্যান ও ইলেকটোমিক বন্দর নির্মিত হয়।

    স্থানীয় আন্তর্জাতিক পণ্যদ্রব্য বিনিময়ের উদ্যানে শুল্ক বিভাগের অনুষ্ঠানত্ব দায়িত্ব পালনকারী চিহুয়া বাণিজ্যিক কোম্পানির মহাপরিচালক ওয়াংওয়ে সংবাদদাতাদের কাছে বলেছেন, তাঁর কোম্পানি প্রধানত চীনের পক্ষ থেকে ভিয়েতনামে কাগজ তৈরীর যন্ত্র রফতানি করেন। তিনি বলেছেন, মৈত্রী শুল্ক বিভাগের অনুষ্ঠানত্ব আগের চেয়ে অনেক পরিণত হয়। তিনি বলেছেন,

    'নতুন ইলেকটোমিক ব্যবস্থা খুবই সুবিধা। এ ব্যবস্থা নির্মাণের আগে শুল্ক বিভাগের অনুষ্ঠানত্ব শেষ করা দীর্ঘকাল প্রয়োজনীয়। কিন্তু এখন শুধু প্রায়১০ মিনিট দরকার।'

    কুয়াংসি সরকার বর্তমানে পরিবহনের অবকাঠামো নির্মাণ জোরদার করছে। যাতে বেইবু উপসাগরের তীরবর্তী অঞ্চলে বন্দর ও স্থাল বন্দর আরো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করা যায়। পরিকল্পনা অনুযায়ী, বর্তমানে নাননিং থেকে তীরবর্তী অঞ্চলের তিনটি বন্দর পর্যন্ত হাইওয়ের ভিত্তিতে কুয়াংসি আরো নতুন তিনটি হাইওয়ে ও স্থানীয় রেলওয়ে নির্মাণ করবে। যাতে কুয়াংসির রেলওয়ে দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় দেশগুলোর রেলওয়ের সঙ্গে সংহত করা যায়।

কুয়াংসি চুয়াং জাতি স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের বাণিজ্য বিষয়ক ব্যুরোর মহাপরিচালক লি ওয়েনচিয়ে বলেছেন, সীমান্তে স্থাল পরিবহন চালু হওয়া এবং তীরবর্তী বন্দরের ব্যবস্থা পুর্ণাংগের সঙ্গে সঙ্গে কুয়াংসি দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় দেশগুলোর অর্থনৈতিক সহযোগিতার আরো বেশি সুযোগ সৃষ্ট হবে। তিনি বলেছেন, কুয়াংসি এক ধারাবাহিক বাস্তব ব্যবস্থা নিয়ে পুঁজিবিনিয়োগের পরিবেশ পুর্ণাংগ করছে। যাতে দু'পক্ষের পুঁজিবিনিয়োগ ও বাণিজ্য আরো সুবিধা হওয়া যায়। তিনি বলেছেন,

    'আমরা বাণিজ্য ও পুঁজিবিনিয়োগের সুবিধায়ন ক্ষেত্রে বাস্তব ব্যবস্থা নিচ্ছি। যেমন পুঁজিবিনিয়োগের পরিবেশ পুর্ণাংগ, বন্দরের নির্মাণ জোরদার, বন্দরের পরিচালনা উন্নয়ন, আসিয়ানের সঙ্গে কোয়াটারটাইমের ক্ষেত্রের সহযোগিতা এবং পরিচালনা ও বাণিজ্য বিষয়ক ব্যক্তিদের সেবা ত্বরান্বিত করছে।'

    লি ওয়েনচিয়ে বলেছেন, কুয়াংসি অবকাঠামো নির্মাণ জোরদার, বিভিন্ন জটিল পরীক্ষার প্রক্রিয়া সংক্ষিপ্ত, বাণিজ্যনীতির স্বচ্ছতা উন্নয়ন, ব্যাপকভাবে উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার, কুয়াংসি বাণিজ্যিক পুঁজিবিনিয়োগের পরিবেশ পুর্ণাংগ করবে। তিনি বিশ্ব করেন, এসব বাণিজ্যিক ও পুঁজিবিনিয়োগের ব্যবস্থার বাস্তবায়নের মাধ্যমে বেইবু উপসাগরের কুয়াংসির অর্থনৈতিক অঞ্চল চীন-আসিয়ান আর্থ-বাণিজ্যিক সহযোগিতায় আরো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।