v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2007-04-10 21:35:05    
বাংলাদের চাঁপাই নবাবগন্ঞ্জ জেলার শ্রোতা সুমান সাহা শান্ত তাঁর চিঠিতে চীনের জাতীয় পতাকা ও প্রতীক সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন

cri
    বাংলাদের চাঁপাই নবাবগন্ঞ্জ জেলার শ্রোতা সুমান সাহা শান্ত তাঁর চিঠিতে চীনের জাতীয় পতাকা ও প্রতীক সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন। এখন এ সম্বন্ধে কিছু বলবো। ১৯৪৯ সালের সেপ্টেম্বর মাসে অথার্ত নয়া চীন প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পূবমূর্হূতে চীনা জনগণের রাজনৈতিক পরামর্শ পরিষদের প্রথম পূণার্ঙ্গ অধিবেশনে চীনের জাতীয় পতাকা ও জাতীয় প্রতীক নির্ধারিত হয়। গণপ্রজাতন্ত্রী চীনের জাতীয় পতাকা লাল ও সমচতুর্ভুজ। লাল রং বিপ্লবের প্রতীক। পঞ্চ হলূদ তারকা চীনের কমিউনিষ্ট পাটির নেতৃত্বে জনগণের মহা ঐক্যের প্রতীক। হলুদ রং চীনের বিশাল ভূখন্ডের উজ্জ্বলতার প্রতীক। সবর্প্রথম পঞ্চ তারকা খচিত লাল পতাকা উত্তোলিত হয় ১৯৪৯ সালের ১ অক্টোবর নয়া চীন প্রতিষ্ঠা উপলক্ষ্যে থিয়ান আন মেন মহা চত্বে।

    গণপ্রজাতন্ত্রী চীনের জাতীয় প্রতীক হল শস্যমঞ্জরী ও খাঁজকাটা চাকা বেষ্টিত পঞ্চ তারকা উদ্ভাসিত থিয়ান আন মেন। থিয়ান আন মেন ময়দান ছিল ১৯১৯ সালের ৪ঠা মে আন্দোলনের উত্পত্তি স্থান। এই আন্দোলন থেকেই শুরু হয় চীনের নয়া গণতান্ত্রিক বিপ্লব এবং সেই বিপ্লবে বিজয় অজির্ত হওয়ার পর এই ময়দানেই নয়া চীন প্রতিষ্ঠার উদ্বোধন অনুষ্ঠান পালিত হয়। তাই থিয়ান আন মেনকে চীনের জাতীয় মানসের প্রতীক রুপে গণ্য করা হয়। খাঁজকাটা চাকা ও শস্যমঞ্জরী শ্রমিকশ্রেণী ও কৃষকশ্রেণীর প্রতীক। এই সব প্রতীক থেকে সুষ্পষ্টভাবে বোঝা যায় যে গণপ্রজাতন্ত্রী চীন হল শ্রমিক শ্রেণীর নেতৃত্বে পরিচালিত এবং শ্রমিক-কৃষক মৈত্রীর ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত জন-গণতান্ত্রিক একনায়কত্বের একটি সমাজতান্ত্রিক দেশ।

    রাজশাহি জেলার শ্রোতা রেজাউর রহমান তাঁর চিঠিতে জিজ্ঞেস করেছেন, চীনে কয়েকটি ঋতু আছে? শীতকালে কি খুব ঠান্ডা? উত্তরে বলছি, চীনে মোট চাঁরটি ঋতু আছে। বসন্তকাল, গ্রীষ্মকাল, শরত্কাল এবং শীতকাল। আপনি জানেন যে, চীন একটি বিশাল দেশ। সুতারাং, একই ঋতুতে দক্ষিণ ও উত্তর চীনের মধ্যে তাপমাত্রায় বেশ পাথর্ক্য আছে। শীতকালে উত্তর চীনে শীত বেশী পড়ে। তবে বিশ্বজুড়ে তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ার ফলে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে উত্তর চীনে অতীতের চাইতে কম শীত পড়ে। যেমন ধুরন. গত বিশ ত্রিশ বছর আগে চীনের হেইলোংচিয়াং অঞ্চলের তাপমাত্রা ছিল মাইনাস ৪০ ডিগ্রি। কিন্তু সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সেখানে তাপমাত্রা মাত্র মাইনাস বিশের কাছাকাছি। কিন্তু এখানে উল্লেখ করতে হবে। উত্তর চীনে শীতকালে ঠান্ডা হলেও ঘর গরম থাকে, কারণ ঘরে হিটার ব্যবস্থা আছে। আবার দক্ষিণ চীনে শীতকালে বেশী শীত না পড়লেও ঘরে খুব ঠান্ডা লাগে, কারণ ঘরে হিটার ব্যবস্থা নেই।উত্তর চীনের অধিবাসিরা যদি শীতকালে ঘরে থাকে তাহলে খুব আরাম পান। বাংলা বিভাগের বতর্মান দু'জন বিশেষজ্ঞ সালাউদ্দিন এবং ইলিয়াসখান সাহেবের কথা ধরা যাক। তারা দুজনই প্রথম বার পেইচিংএ শীতের দিন কাটান। গত বছর যখন শীত আসেনি তখন তাঁদের মনে মনে ভয় পান। মাঝে মাঝে তাঁরা এভাবে বলতেন, ' শীতের দিনে পেইচিংএ এত ঠান্ডা, কি বাঁচবো?' শীত আসার পর তাঁরা টের পেলেন চীনের শীতকাল খুব ভয়ংকর নয়। প্রথম কয়েক দিন মনে হয় একটু তাঁদের পক্ষে কিছু অসুবিধায় হয়। কিন্তু আস্তে আস্তে তাঁরা এখানকার আবহাওয়ার সঙ্গে খাপ খাইয়েছেন। সালাউদ্দিন সাহেব মাঝে মাঝে বলেন, পেইচিংএর শীতকাল তাঁর খুব ভাল লাগে। তিনি শীতের দিনে বাইরে হাঁটতে পছন্দ করেন। তিনি বলেন, যখন তিনি বরফের উপর দিয়ে হাঁটেন তখন খুব মজা লাগে। দক্ষিণ চীনের কয়েকটি জায়গায় শীতকালে তাপমাত্রা প্রায় বাংলাদেশের মত। যেমন গুয়াংডোং ও গুয়াংসী অঞ্চল। বাংলাদেশে যে সব ফুলমুল পাওয়া যায় সে সব ফুলমুল এ দু'টো অঞ্চলেও পাওয়া যায়।

    নরসিংদি জেলার শ্রোতা আসাদ হোসেইন তাঁর চিঠিতে জিজ্ঞেস করেছেন, চীনে মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীদের সংখ্যা কত? মাধ্যমিক স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীরা কি মোবাইল ফোন ব্যবহার করেন? আসাদ হোসেইন বন্ধু, আপনার প্রথম প্রশ্নের উত্তর দেওয়া সত্যই একটু কঠিন । কারণ যদিও গত বছরে সংশ্লিষ্ট এক সূত্রে চীনের মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীদের সংখ্যা প্রকাশিত হয়েছে তবুও চীনের মোবাইন ফোন ব্যবহারকারীদের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে বলে এখন সঠিক কত মোবাইন ফোন ব্যবহারকারী তা বলা সত্যিই খুব কঠিন। তবু সম্প্রতি চীনের তথ্য মন্ত্রণালয় প্রকাশিত এক জরিপে জানা গেছে, বতর্মানে চীনে মোবাইল ফোন ব্যবহারকারিদের সংখ্যা প্রায় ২৪ কোটি।অন্য কথায় ছ'জন চীনা মানুষের মধ্যে এক জন হল মোবাইল ফোন অধিকারি।এখন চীন সারা বিশ্বে সবচেয়ে বেশী মোবাইল ফোনের অধিকারি দেশে পরিণত হয়েছে। কিন্তু সম্প্রতি সুইল্যান্ড ব্যাংকের একটি রিপোটে বলা হয়েছে, চীনে মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীদের সংখ্যা আরও বেশী । এই ব্যাংকের একটি বিশ্লেষণের মতে, বতর্মানে চীনে শতকরা ৩০ ভাগ মানুষ মোবাইলফোন ব্যবহার করে। এই বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, চীনে অনেক লোক একাধিক মোবাইল ফোন নম্বর ব্যবহার করে। অন্যথায় চীনের নাগরিকদের মধ্যে অনেকের কাছে একাধিক মোবাইল ফোন আছে। এ কথাও বলা যায় চীনে প্রত্যেক দিন মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীদের সংখ্যা বিপুল পরিমাণে বাড়ছে। আসলে চীনে মোবাইল ব্যবহারীদের সংখ্যা সঠিকভাবে বলা খুব কঠিন। এখন দ্বিতীয় প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছি। বতর্মানে মাধ্যমিক স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে অনেকের মোবাইল ফোন আছে। কিন্তু স্কুলের শৃংখলা অনুযায়ী, স্কুলে মোবাইল ফোন আনা নিষিদ্ধ। কিন্তু স্কুলের শৃংখলা মানে না এমন ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যাও কম নয়। ভবিষ্যতে স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীদের সংখ্যা আরও বাড়বে।

    কুষ্টিয়া জেলার শ্রোতা ইসরাফিল হোসেন তাঁর চিঠিতে জিজ্ঞেস করেছেন, পেইচিং অলিম্পিক গেমস ২০০৮ সালের কোন মাসে অনুষ্ঠিত হবে? বতর্মানে প্রস্তুতিমূলক কাজ কেমন চলছে? উত্তরে বলছি, পেইচিং অলিম্পিক গেমস ২০০৮ সালের ৮ অ্যাগস্ট মাসে শুরু হয়।চীনের ঐতিহ্য অনুযায়ী ৮ নম্বর শুভ নম্বর। সুতরাং পেইচিং অলিম্পিক গেমসে এই মাসের এই তারিখে অনুষ্ঠিত হয়। বতর্মানে পেইচিং অলিম্পিক গেমস ২০০৮-এর বিভিন্ন প্রস্তুতমূলক কাজ পুরোদ্যমে চলছে। অনেক জ্যামনেজিয়ামের নির্মান কাজ চলতি বছরের শেষ দিকে শেষ হয়ে যাবে। তা ছাড়া পেইচিংএর বেশ কয়েকটি পুরাতন স্ট্যাডিয়াম ও জ্যামনেজিয়ামের সংস্কার কাজও পুরোদ্যমে চলছে। গত বছরের শেষ দিকে আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিশনের উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তারা পেইচিং পরিদর্শন করেছেন। তারা পেইচিংএর প্রস্তুতিমূলক কাজে সন্তুষ্ট। পেইচিং অলিম্পিক গেমসকে স্বাগত জানানোর জন্যে পেইচিং পৌর সরকার বিভিন্ন তাত্পযর্সম্পন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। পেইচিং বাসীদের মধ্যে অলিম্পিক্ম সম্পর্কে জ্ঞানও প্রচারিত হচ্ছে। এক কথায়, পেইচিং অলিম্পিক গেমস ২০০৮ যাতে অলিম্পিক ইতিহাসে আড়ম্বরপূর্ণ একটি অলিম্পিক গেমসে পরিণত হয়, সে জন্য চীন সরকার এবং পেইচিং পৌ সরকার যথাসাধ্য প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। পেইচিং অলিম্পিক গেমস ২০০৮-এর উদ্বোধন থেকে মাত্র পাঁচ শোরের কম দিন বাকী আছে।বিশ্বের দৃষ্টি আগামি বছর অগ্যাষ্ট মাসের ৮ তারিখের উপর নিবিষ্ট হয়ে পড়বে। তখন মহা চীনের তার সুষ্ঠু ভাবমূর্তি বিশ্ব সম্প্রদায়ের সামনে প্রকাশ পাবে।

    শ্রোতা বন্ধুরা, এতক্ষণ শুনলেন আমাদের প্রত্যেক বুধবারের বিশেষ অনুষ্ঠান ----মুখোমুখি। আমাদের এই অনুষ্ঠান সম্পর্কে যদি আপনাদের কোন মতামত ও পরামর্শ থাকে তাহলে আমাদের চিঠি লিখে জানাবেন। এই অনুষ্ঠান আরও উন্নত করার জন্য আপনাদের ভাল প্রস্তাব দরকার। সুতরাং আমরা আশা করি, আপনারা সক্রিয়ভাবে আপনাদের গঠনমূলক প্রস্তাব উত্থাপন করবেন। কারন এই অনুষ্ঠান আপনাদের অনুষ্ঠান। আপনাদের অংশ গ্রহণ বা সহযোগিতা না পেলে এই অনুষ্ঠানের উন্নতি প্রায় অসম্ভব। এখন আপনাদের জন্য একটি প্রশ্ন করি। চীনে মোট কয়টি প্রদেশ আছে? আবার বলছি চীনে মোট কয়টি প্রদেশ আছে? এই প্রশ্ন আমাদের গত বারের আসরে উত্তর দেওয়া হয়েছে। প্রত্যেক মাসে আপনাদের মধ্যে একজন শ্রোতা পুরস্কার পাবেন। শ্রোতা বন্ধুরা আজকের এই আসর এখানে শেষ হল। ভাল থাকুন, সুস্থ্য থাকুন। আগামি সপ্তাহে আবার কথা হবে।