v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2007-04-10 18:52:19    
ই জাতির গায়িকা ছুবিয়াউ ও তাঁর গান

cri

    চীনের ই জাতির নামকরা গায়িকা ছুবিয়াউ এর গাওয়া গান এবং তাঁর জীবন কথা আপনাদের জানিয়ে দিচ্ছি।

    ই জাতি চীনের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে বসবাসকারী একটি সংখ্যালঘু জাতি। ই জাতির ইতিহাস ও সংস্কৃতি সুদীর্ঘ ও প্রাচীন। ইয়ুছিন হচ্ছে ই জাতির একটি ঐতিহ্যিক বাদ্যযন্ত্র। ই জাতির জনগণের জীবনযাত্রায় ইয়ুছিনের ব্যবহার অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত। "ইয়ুছিন বাজানো" এই গানটিতে স্বদেশের প্রতি ই জাতির ছেলেমেয়েদের ভালোবাসা ও তাদের গ্রামের প্রতি তাঁদের আত্মত্যাগের কথা বর্ণনা করা হয়েছে খুবই সুন্দরভাবে।

    "ইয়ুছিন বাজানো" গানের কথাগুলো এমনঃ "লিয়াং পাহাড়ের মাটিতে যেন ফলের সমাহার, গাছগুলো ঘীরে সুগন্ধ ছড়িয়ে যাচ্ছে। লিয়াং পাহাড়ের মাটিতে জীবনেরা খেলা করে। লিয়াং পাহাড়ের রয়েছে সুদীর্ঘ ইতিহাস । লিয়াং পাহাড়ে সুখের পাখিরা উড়ে বেড়ায়। ই জাতির লোকেরা তো আপনারই অপেক্ষায় আছে।"

    ছুবিয়াউ দক্ষিণ-পশ্চিম চীনের সিছুয়ান প্রদেশের একটি ই জাতির পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। পাঁচ ছ'বছর বয়স থেকেই তিনি বাবার কাছে বাদ্যযন্ত্র বাজানো ও পাহাড়ী গান গাওয়া শিখতে শুরু করেন। ১৩ বছর বয়সে তিনি স্থানীয় একটি নৃত্যগীত দলে ভর্তি হন। তাঁর শিল্পী জীবন তখন থেকেই শুরু । কয়েক বছরের মধ্যেই তিনি বেশ কয়েকবার সিছুয়ান প্রদেশের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশ নেন এবং সেখানে তাঁর নাম ছড়িয়ে পড়ে। ১৯৮০ সালে ছুবিয়াউ "সংখ্যালঘু জাতির প্রথম জাতীয় সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতায়" শ্রেষ্ঠ সম্পাদনা পুরস্কার পান। ১৯৮২ সালে থিয়েনচিন সংগীত ইনস্টিটিউট থেকে স্নাতক হওয়ার পর তিনি কেন্দ্রীয় জাতীয় নৃত্যগীত দলের একজন গায়িকা নিযুক্ত হন।

    চীনের সংখ্যালঘু জাতির বিখ্যাত গীতিকার ছুবিহাবু "মানবজাতির স্বর্গ" এই গানে সুর দিয়েছেন এবং এর কথাও তিনি লিখেছেন। ছুবিয়াউ এর কণ্ঠ যেন স্বচ্ছ পানির মতো , যেন ই জাতির পাহাড় থেকে নেমে আসা রূপালী ঝর্ণা, যার শব্দ শুনলেই পাহাড়ী সংগীতের নরম অনুভূতি যেন নিরবেই স্পর্ষ করে যায় হৃদয়-মনকে ।

    এই গানের কথাগুলো এমনঃ " নিরবচ্ছিন্ন সবুজ পাহাড়ে ছোট্ট পাখিরা গান গাইছে। পাহাড়ের ঝর্ণার পানি নীরবেই বয়ে যাচ্ছে। রান্নার ধোঁয়ার মতই যেন মদের সুগন্ধ আকাশে ভাসছে। অতিথিরা একবার এখানে আসলে আর যেতে চান না। সুখী লোকেরা তো মানবজাতির স্বর্গেই বাস করে।"

    ছুবিয়াউ'র গাওয়া আরেকটি গান "প্রীতিপূর্ণ মৈত্রী" গত শতাব্দীর ৫০'র দশকে চীনে খুব জনপ্রিয় ছিল। গানটিতে ই জাতি ও হান জাতির জনগণের মধ্যকার গভীর মৈত্রী প্রতিফলিত হয়েছে নিখুঁতভাবে।

    বহু বছরের অনুশীলনের মাধ্যমে ছুবিয়াউ নিজের স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্যকে সৃষ্টি করতে সক্ষম হয়েছেন। তাঁর গাওয়া "সুদূর থেকে আসা অতিথিরা এখানেই থেকে যাক " গানের কথা হচ্ছে, " রাস্তার দু'পাশেই ফুল ফুটেছে। গাছের ওপর সতেজ ফলগুলোও যেন আপনার স্পর্ষের আকাঙ্খায় অপেক্ষমান। জোয়ারের জল যেন বাতাসের সঙ্গে দোলনার মত দুলছে। সুদূর থেকে আসা অতিথিরা এখানেই থেকে যান।" ই জাতির লোকসংগীতের ধারাকে আধুনিক রূপায়নের মধ্য দিয়ে সুর বৈচিত্রের সমাহারে তিনি এই গানটি সৃষ্টি করেছেন। গানের কথার মধ্য দিয়ে ই জাতির জনগণের আতিথেয়তা ও তাদের সুন্দর জীবনের প্রতি প্রশংসার কথাই ফুটে উঠেছে সাবলীলভাবে।

    ছুবিয়াউ প্রায়শঃই চীনের কেন্দ্রীয় টেলিভিশন কেন্দ্রের নানা অনুষ্ঠানসহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠানে অংশ নেন। তিনি চীনের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে এশিয়া, ইউরোপ, আমেরিকাসহ অনেক দেশ ও অঞ্চল সফর করেছেন। তাঁর কণ্ঠের সুললিত গানগুলো শ্রোতাদের প্রাণঢালা প্রশংসা পেয়েছে।