এ বছর চীন ও জাপানের কূটনৈতিক সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণের ৩৫তম বার্ষিকী এবং চীন-জাপান সাংস্কৃতিক ও ক্রীড়া বিনিময় বর্ষ । চীনের প্রধানমন্ত্রী ওয়েন চিয়া পাও ১১ থেকে ১৩ এপ্রিল পর্যন্ত জাপান সফর করবেন । ২০০০ সালের পর এটাই চীনের কোন প্রধানমন্ত্রী প্রথম জাপান সফর করছেন । এ থেকে বোঝা যায় , গত পাঁচ বছরেরও বেশি সময় ধরে স্থগিত দু'দেশের উচ্চ পর্যায়ের সফর বিনিময় আবার শুরু হয়েছে । জাপানের বিভিন্ন ক্ষেত্র ওয়েন চিয়া পাও'র সফর এবং দু'দেশের সাংস্কৃতিক ও ক্রীড়া বিনিময় বর্ষ উপলক্ষে উদযাপনী কর্মসূচীর ওপর মনোযোগ দিচ্ছে ।
এর আগে প্রধানমন্ত্রী ওয়েন চিয়া পাও এই মত প্রকাশ করেছেন যে , তার এবারকার সফর দু'দেশের সম্পর্কের অচলাবস্থা ভেঙ্গে দেবে বলে তিনি আশা করেন । জাপানের কমিউনিস্ট পার্টির একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা ওগাতা ইয়াসুও মনে করেন যে , প্রধানমন্ত্রী ওয়েন চিয়া পাও'র এবারের জাপান সফরের ফলে সুগভীর তাত্পর্য সৃষ্টি হবে । তা দু'দেশের সম্পর্কের বিকাশকে আরো ত্বরান্বিত করবে ।
দু'দেশের নেতৃবৃন্দের মধ্যে বিনিময় যে ব্যাহত রয়েছে , তা একটি অপ্রীতিকর ব্যাপার । এখন এই পরিস্থিতির পরিবর্তন হচ্ছে । গত বছর প্রধান মন্ত্রী আবে সিন্জোর চীন সফরের ফলে দু'দেশের নেতৃবৃন্দের মধ্যে বিনিময় ব্যবস্থা পুনরায় চালু হয়েছে । সুতরাং প্রধানমন্ত্রী ওয়েন চিয়া পাও'র এবারকার জাপান সফর অবশ্যই দু'দেশের সম্পর্কের উন্নয়নে সহায়তা করবে ।
জাপান-চীন বিনিময় ক্লাবের ভাইস চেয়ারম্যান সুগিমোতো শিজুও মনে করেন যে , বহু বছর ধরে জাপান যুক্তরাষ্ট্রকে মর্যাদা প্রদর্শন ও এশিয়াকে উদাসীনতা দেখানোর পররাষ্ট্র নীতি পালন করে আসছে । এই ধরনের অবস্থা অত্যন্ত অস্বাভাবিক । সুতরাং তিনি প্রধান মন্ত্রী ওয়েন চিয়া পাও'র এবারকার সফরের ওপর ব্যাপক আশাবাদী এবং জাপানের বর্তমান প্রজন্মের সঙ্গে তার বেশি বিনিময়ের অপেক্ষায় রয়েছেন ।
দু'দেশের মধ্যেকার পারস্পরিক আস্থা বাড়ানোর জন্য জাপান সফরকালে প্রধানমন্ত্রী ওয়েন চিয়া পাও জাপানের যত বেশি বর্তমান প্রজন্মের সঙ্গে বিনিময় করবেন , তত ভাল । দু'দেশের নেতৃবৃন্দের মধ্যে নিয়মিত বিনিময় বজায় থাকবে বলেও তিনি আশা করেন । তিনি ওয়েন চিয়া পাও'র জাপান সফরের ওপর ব্যাপক আশাবাদী ।
ওই নাওইউকি সিআরআই'র জাপানী ভাষা অনুষ্ঠানের একজন বিশ্বস্ত শ্রোতা । সিআরআই'র অনুষ্ঠান শুনা ও চীন ভ্রমণে যাওয়া তার দুটো বড় সখ । যখন তিনি চীনে যান , তখন তিনি চীনের রেডক্রস সোসাইটিকে রক্ত দান করেন । এ পর্যন্ত তিনি চীনে শর্তহীনভাবে ৩ হাজার সিসি রক্ত দান করেছেন । তিনি বলেন , তিনি বহু দিন ধরে প্রধানমন্ত্রী ্ ওয়েন চিয়া পাও'র জাপান সফরের জন্য অপেক্ষা করছেন ।
ওয়েন চিয়া পাও'র জাপান সফরের মাধ্যমে দু'দেশের সম্পর্ক আরো ঘনিষ্ঠ হয়ে উঠবে । পূর্ব এশিয়াসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ প্রধানমন্ত্রী ওয়েন চিয়া পাও'র এবারকার সফরের ওপর বিশেষভাবে দৃষ্টি দিচ্ছে । এটা দু'দেশের বিনিময়ের ব্যাপারে একটি সুগভীর প্রভাব ফেলবে ।
ওনো ইউ কানাগায়া জেলার একটি উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলের একজন ছাত্রী । সে কখনো চীনে যায় নি । সুতরাং সে চীনাদের জীবনধারা বেশি জানতে চায় । দু'দেশের উচ্চ পর্যায়ের মধ্যে বিনিময় জোরদার হবে বলেও সে আশা করে ।
জাপান ও চীন দুটো প্রতিবেশী রাষ্ট্র । দু'দেশকে সহাবস্থানে বসবাস করতে হবে । আগে দু'দেশের সরকার প্রধানদের মধ্যে বিনিময় বেশি ছিল না । এটা খুব অস্বাভাবিক । দু'দেশের নেতৃবৃন্দের মধ্যে বিনিময় জোরদার হবে বলে তিনি আশা করেন ।
টোকিও প্রবাসী চীনা সমিতির চেয়ারম্যান ফু ই হেং বলেছেন , জাপানে বসবাসকারী প্রবাসী চীনারা আন্তরিকভাবে প্রধানমন্ত্রী ওয়েন চিয়া পাও'র সফরকে স্বাগত জানাচ্ছেন ।
|