আগামী ১১ এপ্রিল চীনের প্রধানমন্ত্রী ওয়েন চিয়া পাও তাঁর আনুষ্ঠানিক জাপান সফর শুরু করবেন। সাত বছর পর এটা হল চীনের প্রধানমন্ত্রীর প্রথম সফর। সফরের প্রক্কালে পেইচিংএ জাপানের সাংবাদিকদের দেয়া সাক্ষাত্কারে ওয়েন চিয়া পাও বলেছেন, তিনি আশা করেন তাঁর এবারের জাপান সাফ্যজনক হবে। এখন শুনুন চীন আন্তর্জাতিক বেতারের নিজস্ব সংবাদদাতার লেখা একটি রিপোট।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে জাপানের সাবেক নেতৃবৃন্দ বারবার ইয়াসুকুনি মন্দিরে শ্রদ্ধায় অপর্ন করেছেন। সুতরাং তাদের এই আচরন চীনা জনগণের সহানুভূতিতে সাংঘাতিকভাবে আঘাত করেছে। যার ফলে চীন-জাপান সম্পর্কে সাতের সৃষ্টিহয়েছে। চীন আর জাপান দু'দেশের সরকারের মিলিত উদ্যাগে গত বছরের অক্টোবরেজাপানের নব নিযুক্ত প্রধানমন্ত্রী আবে সিনজো চীন সফর করেছেন। চীনের প্রধানমন্ত্রী ওয়েন চিয়া পাও প্রকাশ্যে সেই সফরকে ' বরফ গলানোর সফর হিসেবে আখ্যয়িত করেছেন। ৪ এপ্রিল জাপান ইকনমিক নিউজ , আসাহি সিমবুন সহ জাপানের ১৬টি তথ্য মাধ্যমের সংবাদদাতাদের সাক্ষাত্কারে প্রধান মন্ত্রী ওয়েন চিয়া পাও এভাবে বলেছেন,
আমার এবারের জাপান সফর সফল হবে বলে আশা করছি। আমি আশা করি আমার এই সফরকে ' বরফ গলানোর সফর হবে। আমি আশা করি, দু'দেশের নেতাদের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে মতৈক্য অর্জিত হবে। দু'দেশের সম্পর্কের বিকাশ তরান্বিত হবে। আমি জাপানের জনগণের সঙ্গে যোগাযোগ করতে প্রস্তুত। আমি আশা করি, পারস্পরিক সমঝোতা বাড়ার মাধ্যমে দু'দেশের পারস্পরিক আস্থা ও মৈত্রী বাড়ানো বাড়বে।
১৫ বছর আগে ওয়েন চিয়া পাও জাপান সফর করেছিলেন। জাপানের সমৃদ্ধি ও উন্নতি . জাপানের জনগণের পরিশ্রম আর মেধা তাঁর মনে গভীব ছাপ ফেলে। তিনি জাপানের সংবাদদাতাদের বলেছেন, চীন আর জাপানের মধ্যে সৌহার্দ্যপূর্ণ যোগাযোগদু'হাজারেরও বেশি সময়ের। এ বছর হল চীন আর জাপানের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার ৩৫তম বার্ষিকী। কিন্তু ইতোমধ্যে চীনের উপর জাপানের সমরবাদীদের সার্বিক আক্রমনের ৭০তম বার্ষিকী পূর্ণ হয়েছে। নি:সন্দেহে এ বছর একটি বিশেষ বছর। জাপানের সংবাদদাতারা প্রশ্ন করেছেন, যদি ইতিহাস সমস্যার অবনিত ঘটে তাহলে জাপান-চীন সম্পর্কের উপর তা কি ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে। এই প্রশ্নের উত্তরে ওয়েন চিয়া পাও বলেছেন,
সবাই জানেন যে, সাম্প্রতিক বছরগুলোত জাপানের এক নেতা বেশ কয়েক বার ইয়াসুকুনি মন্দিরে শ্রদ্ধয় অপর্ন করেছেন বলে চীনের জনগণের সহানুভূতি সাংঘাতিভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তা ছাড়াও এই আচরণ দু'দেশের সম্পর্কের উপর নতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। আমি আশা করি, প্রধান মন্ত্রী আবে সিনজো দু'দেশের সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে দু'দেশের সম্পর্কের উপর গুরুত্ব আরোপ করবেন। যাতে দু'দেশের সম্পর্ক আরও বিকশিত হয়।
আর্থ-বাণিজ্যিক সহযোগিতা সবর্দাই চীন-জাপান সম্পর্কবিকাশের একটি ইজ্জ্বল বিন্দু। পরিসংখ্যাণ অনুযায়ী, দু'পক্ষের দ্বিপক্ষীয়বাণিজ্যের পরিমাণ ১৯৭২ সালের ১১০ কোটি মার্কিন ডলার থেকে ২০০৬ সালের ২০ হাজার ৭৪০ লাখ মার্কিন ডলার বেড়েছে। প্রধান মন্ত্রী ওয়েন চিয়া পাও বলেছেন, সফরকালে তিনি জাপানের উচ্চ পদস্থ নেতাদের সঙ্গে দু'দেশের সহযোগিতা আরও বাড়ানোর ব্যাপার নিয়ে আলোচনা করবেন। তিনি বলেছেন,
বিশ্বায়নের চ্যালেঞ্জের মুখে দু'দেশের সহযোগিতা জোরদার করা অত্যন্তদরকার । সহযোগিতার ক্ষেত্রে আমি বিশেষভাবে জ্বালানি সাশ্রয়, পরিবেশ সংরক্ষণ, হাইটেক, মাঝারি-ছোট শিল্প-প্রতিষ্ঠান, ব্যাংকিং আর তথ্য উল্লেখ করতে চাই। চীন বৈদেশিক উন্মুক্তকরণ নীতি অনুসরণ করে। সমতা আর পারস্পরিক উপকারিতার ভিত্তিতে আমরা জাপানের সঙ্গে সহযোগিতা জোরদার করতে ইচ্ছুক।
চীনের দ্রুত উন্নতি বিশ্বের দৃষ্টি আকর্ষন করেছে। ওয়েন চিয়া পাও জাপানের সংবাদদাতাদের বলেছেন,
আমাদের উন্নতি কোনো দেশের উপর প্রভাব ফেলবে না। চীন কোন দেশের প্রতি হুঁকুম করবে না। চীন এখন একটি উন্নয়নশীল দেশ। উন্নত দেশ হতে চাইলে চীনকে অনেক পথ যেতে হবে। একদিন চীন উন্নত হলেও কখন আধিপত্যবাদীহবে না। এতক্ষণ শুনলেন আজকের প্রধান প্রতিবেদন।
|