চীনের প্রধানমন্ত্রী ওয়েন চিয়া পাও ১১ থেকে ১৩ এপ্রিল পর্যন্ত জাপান সফর করবেন। এটি হচ্ছে চীন ও জাপানের উচ্চ পর্যায়ের পারস্পরিক সফর পাঁচ বছর বন্ধ থাকার পর প্রথম সফর। প্রধানমন্ত্রী ওয়েন চিয়ান বলেছেন, গত বছর অক্টোবরে শিনজো আবে চীনের সফর হচ্ছে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের অচলাবস্থান দূর হওয়ার সূচনা সফর। তিনি আশা করেন, তাঁর জাপানের সফর বরফ গলে যাওয়ার সফরে পরিণত হবে। চীনের সামাজিক বিজ্ঞান একাডেমির জাপান গবেষণা বিভাগের উপপরিচালক চিন সিডে আমাদের সংবাদদাতাকে বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী ওয়েন চিয়া পাওয়ের এবার সফর দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের উন্নয়ন ত্বরান্বিত করা হবে। যাতে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক নতুন উন্নয়নের যুগে প্রবেশ করা যায়।
চিন সিডে মনে করেন, চীন ও জাপানের সম্পর্কের সবচেয়ে কষ্টের সময় দূরে হয়ে গেছে। বর্তমানে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক সার্বিক পুনরুদ্ধারের পর্যায়ে রয়েছে।
চীন ও জাপানের সম্পর্কের সবচেয়ে কষ্টে সময় কেন দূর হয়ে গেছে? কারণ দু'পক্ষের বৃহত্তম রাজনৈতিক বাধা দূর হয়েছি। এই রাজনৈতিক বাধা হচ্ছে জাপানের নেতৃবৃন্দের ইয়াসুকুনি সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করা। দু'পক্ষ এই রাজনৈতিক বাধা দূর করার মাধ্যমে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।
চিন সিডে মনে করেন, মোটের উপর বর্তমানে চীন ও জাপানের সম্পর্ক উন্নয়নের সুযোগ পেয়েছে।
গত বছরের ৮ থেকে ৯ অক্টোবর জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের চীন সফরের পর চীনের প্রেসিডেন্ট হু চিন থাও এবং চীনের প্রধানমন্ত্রী ওয়েন চিয়া পাও আন্তর্জাতিক সম্মেলন ও অন্যান্য বিষয়ে আলোচনার ক্ষেত্রে শিনজো আবের সঙ্গে সাক্ষাত্ করেছেন। এটি জাপানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী কোইজুমি জুনিছিরোর ক্ষমতা প্রয়োগের সময় দু'দেশের নেতৃবৃন্দের পারস্পরিক সফর ও শীর্ষ সম্মেলন বন্ধ হয়ে যাবার তুলনায় খুবই পৃথক। দ্বিতীয়ত, বর্তমানে দু'দেশের রাজনীতি, নিরাপত্তা ক্ষেত্রের সংলাপ ভালোভাবে উন্নত হচ্ছে।পরবর্তী সময়ে কিছু বাস্তব বিনিময় চালু হবে। তাছাড়া অর্থনৈতিক সম্পর্কের রাজনৈতিক বাধা দূর করার কারণে আরো ভালো উন্নয়নের সম্ভাবনা রয়েছে।
সম্প্রতি চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র চিন কাং বলেছেন, শিগ্গীরই প্রধানমন্ত্রী ওয়েন চিয়া পাও জাপান সফর করবেন। এই সফর এক গুরুত্বপূর্ণ সফর। তা দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক অব্যাহত উন্নয়ন ত্বরান্বিত করার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। চীন আশা করে, এবারের সফরে দু'দেশের কৌশলগত পারস্পরিক উপকারিতামূলক সম্পর্কের বিষয়বস্তু সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে, আর্থ-বাণিজ্যিক সহযোগিতা ব্যবস্থা স্বয়ংসম্পর্ণ করা হবে, দু'দেশ শিক্ষা ও সংস্কৃতি ক্ষেত্রে এবং যুবকযুবতীদের দীর্ঘকালের বিনিময় ত্বরান্বিত করা হবে। এ জন্য চিন সি ডে মনে করেন, প্রধানমন্ত্রী ওয়েন চিয়া পাওয়ের এবারের সফর দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে আরো উন্নত করার বিষয়টিকে ত্বরান্বিত করতে পারবে।
প্রথমতঃ চীন ও জাপানের মধ্যে নেতৃবৃন্দের পারস্পরিক সফর বাস্তবায়িত হয়েছে। এবারের সফর প্রধানমন্ত্রী ওয়েন চিয়া পাও দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে আরো সুষ্ঠু উন্নয়নের দিকে ধাবিত করবে। দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের অভিজ্ঞতার পর্যালোচনা করার মাধ্যমে বিভিন্ন ক্ষেত্রের সার্বিক সহযোগিতা ত্বরান্বিত করা এবং দু'পক্ষের জনমতের পরিবেশ ও জনগণের সম্পর্ককে স্বয়ংসম্পর্ণ করা। সুতরাং আমরা আশা করি, এবারের সফর চীন ও জাপানের সম্পর্ক উন্নয়নের জন্য অবদান রাখবে।
এর পাশাপাশি চিন সিডে আরো বলেছেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দু'দেশের নেতৃবৃন্দের পারস্পরিক সফর বন্ধের কারণে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের মধ্যে এখনো কিছু সমস্যা রয়ে গেছে।
|