v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2007-04-03 21:07:52    
থিয়েন ছাং চিয়ে ও তার থুচিয়া জাতি সম্পর্কিত যাদুঘর

cri
    ৫০ বছর বয়স্ক থিয়েন চাং চিয়ে হলেন চীনের হুপেই প্রদেশের থুচিয়া সংখ্যালঘু জাতি'র একজন কৃষক। বিংশ শতাব্দীর আশির দশক থেকে তিনি থুচিয়া জাতি সম্পর্কিত পুরার্কীতি সংগ্রহ করতে শুরু করেন। কয়েক বছর আগে তিনি নিজেই লোকজ যাদুঘর স্থাপন করেছেন।

    হু পেই প্রদেশের ই ছাং শহর থেকে তিন ঘন্টার গাড়ি চালিয়ে ছাং ইয়াং থুচিয়া সংখ্যালঘু জাতি স্বায়ত্তশাসিত জেলায় পৌঁছাই। পাহাড়ের অর্ধেক উচু থেকেই একটি তিন তলার ভবন দেখা যায়। ভবনের সামনের মাটিতে একটি পাথরের স্তম্ভ দাঁড়িয়ে আছে। স্তম্ভের উপরে সিমেন্ট দিয়ে তৈরী একটি সাপ বসে আছে। এই ভবন হলো থিয়েন ছাং চিয়ের থুচিয়া জাতির যাদুঘর।

    থিয়েন ছাং চিয়ের ছাং ইয়াং জেলার জি ছিও থালার জি লিং ইয়ুন গ্রামে জন্ম হয়। তিনি কৃষক ছিলেন, রেলপথের কর্মী ছিলেন এবং ফটোগ্রেফার ছিলেন। তিনি বেটে কিন্তু কাজে খুবই মনযোগী ছিলেন। বিংশ শতাব্দীর আশির দশকে চীনে তৃতীয় বার দেশব্যাপী লোকসংখ্যা জরীপে ধরা পরে যে থিয়েন ছাং চিয়ে এবং তার প্রতিবেশীরা আসলে থুচিয়া জাতি'র মানুষ। এই নিয়ে থিয়েন ছাং চিয়ে বলেছেন:

    "১৯৮৩ সালের আগে আমি জানি না যে আমি থুচিয়া জাতি'র মানুষ। জন্ম থেকে আমি নিজেকে হান জাতি'র মানুষ মনে করি। জানার পর থেকে আমি নিজের জাতির ইতিহাস জানতে খুবই আগ্রহী হয়ে উঠি। তাই সংগ্রহের কাজ শুরু করেছি।"

    প্রথম কয়েক বছর ছবি তোলা ছিলো তার প্রধান কাজ। তিনি একটি সস্তা কামেরা ও খাবার নিয়ে পাহাড়ের পর পাহাড়ে পুরার্কীতি ও রূপকথার বস্তু খোঁজার চেষ্টা করেন। তিনি দুটি মূল্যবান পাথর?? মুর্তী খুঁজেছেন। এই দু'টি মূর্তী হলো থুচিয়া জাতি'র রূপকথায় শিয়াং ওয়াং রাজা ও ইয়েন সুই দেবী'র মূর্তী।

    বছরের পর থিয়েন ছাং চিয়ে তার সংগ্রহের কাজ বিশ্রামহীনভাবে করেছেন। মাঝে মাঝে তিনি ছবি'র বিনিময় বা পত্রের বিনিময়ের মাধ্যমে কিছু পুরার্কীতি সংগ্রহ করেন। এবং তার সংগ্রহের মধ্যে পুরনো বই, পরিবারের ইতিহাস, পোশাক, যন্ত্রপাতি ইত্যাদি অনেক বিছুই রয়েছে। ১৯৯৩ সালের আগস্ট মাসে থিয়েন ছাং চিয়ে জেলার যাদুঘরে তার সংগৃহীত পুরার্কীতিগুলোর ওপর একটি প্রদর্শনীর আয়োজন করেন। মোট ৬০০টি সংগ্রহ এই প্রদর্শীতে স্থান পায়। পরিদর্শনের পর তিনি এসব জিনিসগুলো জেলার যাদুঘরকে দান করেছেন। তিনি বলেছেন:

    "আমার সংগ্রহের লক্ষ্য হলো নিজের ইতিহাস খুঁজে নেয়া। তা বিক্রির জন্য নয়। এসব জিনিস আমাদের জাতি'র স্মৃতি যা বিক্রি করা যায় না। তা আমাদের জাতি'র আওতায় থাকতে হবে।"

    এসব পুরার্কীতি দানের পর থিয়েন ছাং চিয়ের মন যেন উদাস হয়ে গেছে। তার স্ত্রী এই অবস্থা দেখে তাকে পুনরায় সংগ্রহ করার কাজে উত্সাহ দিয়েছেন। দশ বছর প্রায় হয়ে গেছে, থিয়েন ছাং চিয়ে এবার ১০০০টিরও বেশি পুরার্কীতি সংগ্রহ করেছেন। তিনি তার সংগ্রহের কথা লিবিবদ্ধ করে থুচিয়া জাতি'র সংস্কৃতি সংক্রান্ত "বা শি হুয়া" নামক বইতে অন্তর্ভূক্ত করেছেন।

    ২০০০ সালের জুন মাসে থিয়েন ছাং চিয়ে তার সংগ্রহ থুচিয়া জাতি'র জাতীয় পোশাক নিয়ে ইয়ুন নান প্রদেশের খুন মিং শহরে অনুষ্ঠিত চীনের প্রথম জাতীয় পোশাক মেলায় অংশ নিয়েছেন। ২০০১ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর স্থানীয় সরকারের সাহায্যে তার "থুচিয়া জাতি'র লোকজ পুরার্কীতি যাদুঘর" স্থাপন করা হয়। এই দিন থিয়েন ছাং চিয়ের জন্য সবচেয়ে খুশির দিন। তার আশা হলো এই যাদুঘর দীর্ঘ কাল ধরে থেকে যাবে তার জাতির পুরাকীর্তির ইতিহাস নিয়ে।