v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2007-04-03 21:05:50    
জাতীয় গণ কংগ্রেসের প্রতিনিধিরা ঐতিহ্যিক সংস্কৃতি রক্ষার তাগিদ দিয়েছেন

cri
    চীনের পাঁচ হাজার বছরের সভ্যতায় নানা ধরনের ঐতিহ্যিক সংস্কৃতি রয়েছে । বিশ্বের অন্যান্য দেশের লোকসংস্কৃতির মতো সমাজের আধুনিকায়নের সঙ্গে সঙ্গে এ সব ঐতিহ্যিক সংস্কৃতি আধুনিক সমাজের প্রবল প্রভাবের সম্মুখীন হচ্ছে । পেইচিংয়ে সদ্য সমাপ্ত চীনের জাতীয় গণ কংগ্রেসের অধিবেশনে প্রতিনিধিরাও এই বিষয় নিয়ে নিজ নিজ মত প্রকাশ করেছেন ।

    কুয়াংতুং ও ফুচিয়েনের ঐতিহ্যিক আঞ্চলিক অপেরার ইতিহাস আট শ' বছরের বেশি । এই ধরনের অপেরা নাটকের জীবাশ্ম বলে পরিচিত । চীনের হংকং ও ম্যাকাও অঞ্চলের নাগরিকরা এবং প্রবাসীচীনারা এ সব আঞ্চলিক অপেরা খুব পছন্দ করেন । কিন্তু এখন এ সব ঐতিহ্যিক অপেরা বিলুপ্তপ্রায় অবস্থায় রয়েছে । ফুচিয়েন প্রদেশের ঐতিহ্যিক অপেরা দলের প্রধান চেন চিং পিং একজন নামকরা অভিনেত্রী ছিলেন । তিনি বেশ কয়েকবার অপেরা দল নিয়ে বিদেশ সফর করেন । জাতীয় গণ কংগ্রেসের প্রতিনিধি হিসেবে তিনি জাতীয় কংগ্রেসের অধিবেশনে একাধিকবার ঐতিহ্যিক অপেরা প্রসারের উপর সরকারী সমর্থন বাড়ানোর দাবী জানিয়েছেন । তিনি বলেছেন , জাতীয় গণ কংগ্রেসের প্রতিনিধি নির্বাচিত হওয়ার পর পাঁচ বছরে আমি ঐতিহ্যিক সংস্কৃতি রক্ষা সম্পর্কে বেশ কয়েকটি প্রস্তাব পেশ করেছি । আমি পিকিং অপেরার প্রসার বাড়ানো ও অবস্তুগত সাংস্কৃতিক উত্তরাধিকার রক্ষার প্রস্তাব পেশ করেছি । এই সব প্রস্তাব সংশ্লিষ্ট বিভাগ গ্রহণ করে কার্যকরীকরণ শুরু করেছে ।

    ২০০৬ সালে ঐতিহ্যিক আঞ্চলিক অপেরাগুলো চীনের প্রথম কিস্তির অবস্তুগত সংস্কৃতির তালিকাভুক্ত হয় । এর জন্য চেন চিন পিং আনন্দবোধ করেন । এ বছরের জাতীয় গণ কংগ্রেসের অধিবেশনে তিনি ঐতিহ্যিক অপেরা শিল্পীদের বেতন বাড়ানো ও ঐতিহ্যিক অপেরার উত্তরাধিকারী গড়ে তোলা সম্পর্কে প্রস্তাব পেশ করেছেন ।

    কুইচৌ প্রদেশের তোন জাতির লুন ইয়াও হোন কুইচৌ সংখ্যালঘু জাতি ইনস্টিটিউটের একজন প্রফেসর এবং কুই চৌ প্রদেশের লোকশিল্পী সমিতির ভাইস চেয়ারম্যান । তিনি মনে করেন ,কুই চৌ প্রদেশে সংখ্যালঘু জাতিগুলোর ঐতিহ্যিক সংস্কৃতি ও শিল্প রক্ষা করতে হবে । ঐতিহ্যিক সংস্কৃতি রক্ষার ব্যবস্থা না নিয়ে মুনাফার জন্য ঐতিহ্যিক সংস্কৃতি অতিরিক্ত কাজে লাগানো উচিত নয়। তিনি জাতীয় গণ কংগ্রেসের অধিবেশনে লোকসংস্কৃতি ও শিল্প রক্ষার আইনবিধি প্রণয়নের প্রস্তাব পেশ করেছেন । তিনি বলেছেন , এ আইনের কার্যকরীকরন অবস্তুগত সংস্কৃতি রক্ষা ক্ষেত্রে ব্যাপক জনসাধারণের চেতনা উন্নত এবং লোকসংস্কৃতির প্রসারকে তরান্বিত করতে পারবে ।

    জাতীয় কংগ্রেসের প্রতিনিধিদের পেশ করা প্রস্তাবগুলো চীন সরকার যথেষ্ট গুরুত্ব দেয় । ২০০৫ সাল থেকে সমগ্র দেশে অবস্তুগত সাংস্কৃতিক উত্তরাধিকার জরীপের কাজ শুরু হয় । জনসাধারণের সাংস্কৃতিক উত্তরাধিকার রক্ষার চেতনা উন্নত করার জন্য সরকার ২০০৬ সালে প্রতি বছরের জুন মাসের দ্বিতীয় শনিবারকে জাতীয় সাংস্কৃতিক উত্তরাধিকার দিবস হিসেবে নির্ধারন করেছে । কিছু দিন আগে চীনের সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় সমগ্র দেশে ১৯১২ সালের আগের পুথিপত্র জরীপের সিদ্ধান্ত নিয়েছে । চীনের সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের কমর্কর্তা লিউ সিয়ও ছিন বলেছেন , গত কয়েক বছরে কেন্দ্রীয় সরকার পুঁথিপত্রের পুনরানয়ন খাতে বিশেষ অথর্বরাদ্দ করেছে । এ বিশেষ অথর্বরাদ্দের কল্যানে পুঁথিপত্র মেরামত কর্মীদের প্রশিক্ষণ শুরু হয়েছে এবং পুঁথিপত্র রাখার গুদামের অবস্থা আগের চেয়ে অনেক উন্নত হয়েছে । চীনের জাতীয় গ্রন্থাগার ও কিছু প্রাদেশিক পর্যায়ের গ্রন্থাগার এ ক্ষেত্রে অনেক কাজ করেছে ।

    জাতীয় গণ কংগ্রেসের অধিবেশনে প্রতিনিধিরা এ সব অগ্রগতিতে জন্য সন্তোষ প্রকাশ করেছেন । তারা বলেছেন , আঞ্চলিক সংস্কৃতি রক্ষা ক্ষেত্রে ভালো ভালো অভিজ্ঞতা সমগ্র দেশে প্রচার করা উচিত । দক্ষিণ চীনে ফুচিয়েন প্রদেশের ছুয়েন চৌ শহরের নান সুরের সংরক্ষনই এর একটি উদাহরণ ।

    নান সুর হলো দক্ষিণ চীনের এক ধরনের লোকসংগীত । গত বছর নানসুরকে চীনের প্রথম কিস্তির অবস্তুগত সাংস্কৃতিক উত্তরাধিকারের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। জানা গেছে , নান সুর চীনের অন্যতম প্রাচীনতম সুর । এর ইতিহাস এক হাজার বছরেও বেশি । গত শতাব্দীর আশির দশকে ছুয়েন চৌ পৌর সরকার নানসুর রক্ষার জন্য তিন কোটি ইউয়ান বরাদ্দ করে এবং নান সুর গবেষণা সংস্থা প্রতিষ্ঠা করে । এ সংস্থার আমন্ত্রনে দশজন প্রবীন লোকশিল্পী নান সুর সংগ্রহ ও নানসুর সম্পর্কিত বই লেখার কাজ করছেন । সরকারের আর্থিক সাহায্যে এ দশজন লোকশিল্পী যুবকযুবতীদের মধ্যে নানসুরের উত্তরাধিকারী গড়ে তোলার কাজও করছেন ।