v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2007-04-03 18:47:27    
নৌ-সৈনিকদের আটকের কারণে সৃষ্ট বৃটেন এবং ইরানের সংকট প্রশমনের লক্ষণ দেখা দিয়েছে

cri
    নৌ-সৈনিকদের আটক করার কারণে বৃটেন এবং ইরানের মধ্যে সৃষ্ট সংকট কয়েক দিন ধরে অব্যাহত রয়েছে। ২ এপ্রিল ইরানের একটি সূত্রে জানা গেছে, ইরান এবং বৃটেনের সংশ্লিষ্ট আলোচনায় ইতিবাচক লক্ষণ দেখা দিয়েছে বলে ইরান তাদের হাতে আটককৃত বৃটিশ নৌ-সৈনিকদের ভিডিও আর প্রচার করবে না। এরপর পরই বৃটেনের সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ইরানের মতো বৃটেনও কূটনৈতিক উপায়ে এই সংকট সমাধানে ইচ্ছুক। বিশ্লেষকরা মনে করেন, এ থেকে দেখা যাচ্ছে যে, দু'পক্ষের দৃঢ় অবস্থানএখন কিছুটা পরিবর্তন হয়েছে। মূল সংকট কয়েক দিনের মধ্যেই সমাধান হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

    আসলে এই ঘটনা স্থগিত হওয়ার কারণ হলো দশ দিনেরও বেশী সময় ধরে বৃটেন ও ইরানের দৃঢ় অবস্থান নেয়া।

    প্রথমত: আটককৃত ১৫ জন বৃটিশ নৌ-সৈনিকের সীমান্ত লঙ্ঘন সমস্যার বিষয়টি সম্পর্কে দু'পক্ষের বক্তব্য ভিন্নতর। ইরান অভিযোগ করেছে যে, এসব বৃটিশ   নৌ-সৈনিককে অবৈধভাবে ইরানের জলসীমায় অনুপ্রবেশের কারণে আটক করা হয়েছে। পক্ষান্তরে বৃটেন বলেছে, বৃটিশ সৈনিকরা ইরাকের জলসীমায় পাহারা দিচ্ছিল। দু'পক্ষই তাদের বক্তব্যের স্বপক্ষে বৈধতা প্রমাণের জন্যে তথাকথিত প্রমাণ পত্র উপস্থাপন করেছে। কিন্তু এই ঘটনাটি পারস্য উপসাগরের উত্তরাঞ্চলে এবং আরব নদীর মোহানার কাছাকাছি এলাকায় ঘটেছে। সবাই জানেন, স্থানটি হচ্ছে দীর্ঘকাল ধরে ইরাক এবং ইরানের মধ্যে বিতর্কিত জলসীমা। ইরান এবং ইরাক দু'পক্ষের উভয়ই নিজেদের স্বীকৃত সীমা-রেখা সম্পর্কে ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারছে না। তাই বৃটিশ নৌ-সৈনিকরা তখন সীমা-রেখার ভিতরে না বাইরে ছিল তা বিচার করা সম্ভব নয়। কিন্তু এই সংকট দু'দেশের সর্বোচ্চ নেতৃবৃন্দের পর্যায়ে পৌঁছেছে এবং দু'দেশের সম্পর্ক গুরুতরভাবে অবনতিশীল হচ্ছে।

    দ্বিতীয়ত: এই সংকট সমাধানের প্রক্রিয়ায় দু'পক্ষের আপোস করার মনোভাবের অভাব রয়েছে। ঘটনার পর ইরান তার অনেক টিভি চ্যানেলের মাধ্যমে বলেছে, বৃটিশ সরকার ক্ষমা প্রার্থনা করলেই কেবল আটককৃত ব্যক্তিরা মুক্তি পাবেন। কিন্তু বৃটিশ সরকার এতে রাজী হয়নি। ২৮ মার্চ আটককৃত ব্যক্তিদের মধ্যে একমাত্র নারী সৈনিক স্বীকার করেছেন যে, তিনি তার সহকর্মীদের সঙ্গে ইরাকের জলসীমায় অনুপ্রবেশ করেছিলেন। ইরান এই নারী সৈন্যকে মুক্তি দেয়ার কথা ঘোষণা করেছিল। কিন্তু বৃটেন ইরানের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় পর্যায়ে এই সংকট সমাধানের পথ অবলম্বন না করে জাতিসংঘ এবং ই ইউ'র কাছে সাহায্য চেয়েছে। ইরান অভিযোগ করেছে, বৃটেন আন্তর্জাতিক চাপের মাধ্যমে ইরানকে বাধ্য করার প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। ইরান শীঘ্রই নারী সৈন্যকে মুক্তি দেয়ার পরিকল্পনা স্থগিত করে দেয় এবং এরপর পরই ইরান টিভিতে আটককৃত সৈনিকদের ভিডিও চিত্র বারবার প্রচার করতে থাকে। ইরান বলেছে, ২ এপ্রিল পর্যন্ত আটককৃত ১৫ জন বৃটিশ নৌ-সৈনিক অবৈধভাবে ইরানের জলসীমায় প্রবেশ করার কথা স্বীকার করেছে। বৃটেন এরপর তার নিজের অবস্থান পরিবর্তন করেছে। বৃটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্গারেট বেকেট বলেছেন, বৃটেন আশা করে, শীঘ্রই এবং শান্তিভাবে এইং সংকটের সমাধান হবে। আরেক খবরে জানা গেছে, বৃটেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ইরানের সঙ্গে পারস্পরিক আস্থা পুনপ্রতিষ্ঠার বিষয়ে আলোচনা করছে। বৃটেন এই প্রতিশ্রুতি দিয়েছে যে, কোন প্রকার পূর্বঅনুমোদন না নিয়ে তার সৈন্যরা ইরানের জলসীমায় প্রবেশ করবে না।

    এ পর্যন্ত বৃটেন এবং ইরানের আলোচনায় নির্দিষ্ট কোন ইতিবাচক অগ্রগতি হয়নি। কিন্তু দু'পক্ষ কিছু কিছু বিষয়ে আপোস মনোভাব পোষণ করেছে মাত্র। এটি সমস্যা সমাধানের জন্য সত্যিকারভাবেই একটি বাস্তব দিক।

    বৃটেন এবং ইরানের সরকার অবশেষে অনুভব করতে পেয়েছে যে, তাদের দৃঢ় অবস্থান বজায় থাকলে সংকটের সমাধান করা সম্ভব হবে না। তারা আপোসের মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের উপায় খুঁজে বের করার চেষ্টা করছে।