v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2007-04-02 15:40:21    
সার্ক শীর্ষ সম্মেলন সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে

cri

    ১৪তম সার্ক শীর্ষ সম্মেলন ৩ ও ৪ এপ্রিল ভারতের নয়া দিল্লীতে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। আফগানিস্তান এবার সার্কের নতুন সদস্য হিসেবে অংশ গ্রহণ করবে। চীন, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন প্রথমবার পর্যবেক্ষক হিসেবে সম্মেলনে উপস্থিত থাকবে। ফলে এবারের সার্ক শীর্ষ সম্মেলন সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে।

 সার্ক অর্থাত্ দক্ষিণ এশিয় আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থা ১৯৮৫ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। এর প্রধান উদ্দেশ্য হচ্ছে বিভিন্ন সদস্য দেশগুলোর মধ্যকার অর্থনীতি, সমাজ, সংস্কৃতি , বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ক্ষেত্রের সহযোগিতা ত্বরান্বিত করা। আঞ্চলিক সহযোগিতা সংক্রান্ত সমস্যা সমাধানের সময় সার্ক আলোচনার মাধ্যমে মতৈক্য পৌঁছানোর ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকে। সার্কের সদস্য রাষ্ট্রগুলোর মধ্যকার বিদ্যমান দ্বিপক্ষীয় সমস্যা নিয়ে আলোচনা হয় না। সার্কের সাতটি প্রতিষ্ঠাতা সদস্য দেশ হচ্ছে ভারত, পাকিস্তান, বাংলাদেশ, শ্রীলংকা, নেপাল, ভূটান ও মালদ্বিপ। ২০০৫ সালে অনুষ্ঠিত ১৩তম সার্ক শীর্ষ সম্মেলনে আফগানিস্তানকে অষ্টম সদস্য দেশ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। ২০০৬ সালের আগস্ট মাসে অনুষ্ঠিত সার্কের মন্ত্রী পরিষদের অধিবেশনে চীন, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নকে সার্কের পর্যবেক্ষক হিসেবে নির্ধারণ করা হয়।

 গত ২২ বছরে সার্ক অনেক সাফল্য অর্জন করেছে। কিন্তু আসিয়ান, ই.ইউসহ অন্যান্য আঞ্চলিক সংস্থার তুলনায় সার্কের অগ্রগতির পদক্ষেপ এখনও কিছুটি মন্থর । অন্যান্য আঞ্চলিক আন্তর্জাতিক সংস্থা ধারাবাহিকভাবে পরিপক্ক হওয়ার পরিস্থিতি দেখে সার্কের বিভিন্ন সদস্য দেশ চাপ বোধ করছে। তাদের সহযোগিতা জোরদার করার আশা তীব্রতর হয়েছে। এটা এবারের সার্ক শীর্ষ সম্মেলনের জন্য আরো বেশি চালিকাশক্তি হয়ে দাঁড়িয়েছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সার্কের বিভিন্ন দেশের অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে উন্নতির লক্ষ্যে পারস্পরিক সহযোগিতার জন্য ভিত্তি স্থাপন করেছে। তা ছাড়াও সম্প্রতি ভারত ও পাকিস্তানের সম্পর্কের ক্ষেত্রে অনেকটা উন্নতি হয়েছে। দু'পক্ষের পারস্পরিক আস্থা লক্ষণীয় বেড়েছে। এটা এই অঞ্চলের সহযোগিতার জন্য অপেক্ষাকৃত উত্তম পরিবেশ সৃষ্টি করেছে।

 এবারের শীর্ষ সম্মেলনে বিভিন্ন সদস্য দেশের নেতৃবৃন্দগণ পরস্পরের যোগাযোগ জোরদার করা, অবাধ বাণিজ্য ত্বরান্বিত করা এবং যৌথভাবে সন্ত্রাস দমনসহ নানা বিষয় নিয়ে আলোচনা এবং বাস্তব সহযোগিতার পথ অন্বেষণ করবেন ।

 জানা গেছে, বিভিন্ন সদস্য দেশের রেলপথ, সড়কপথ ও বিমান চলাচলসহ যোগাযোগ ব্যবস্থা জোরদার করা সংক্রান্ত একটি রিপোর্ট শীর্ষ সম্মেলনে আলোচনার জন্য দাখিল করা হবে। রিপোর্টের বিষয়বস্তুর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত থাকবে এশিয়ার রেলপথের দক্ষিণ এশিয় অংশের নির্মাণ, বাংলাদেশ থেকে আফগানিস্তানগামী সড়কপথের নির্মাণ, বিমানের ফ্লাইটের সংখ্যা বাড়ানোসহ বিবিধ বিষয় । গত বারের শীর্ষ সম্মেলনে দক্ষিণ এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব উত্থাপিত হয়েছে। এ বিষয়টি এবারের শীর্ষ সম্মেলনে সুনির্দিষ্টভাবে বাস্তবায়িত হবে। বিভিন্ন সদস্য দেশ দক্ষিণ এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়কে ভারতে প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে একমত হয়েছে। তাছাড়াও আঞ্চলিক চিকিত্সা নেট পরিকল্পনাও এবারের শীর্ষ সম্মেলনে পর্যালোচনা করা হবে।

 "দক্ষিণ এশিয়ার অবাধ বাণিজ্য চুক্তি" ২০০৬ সালের জুলাই মাসে কার্যকর পর্যায়ে প্রবেশ করেছে। সক্রিয়ভাবে এই চুক্তির বাস্তবায়ন ত্বরান্বিত করা হচ্ছে এবারের শীর্ষ সম্মেলনের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ আলোচ্য বিষয়। বাণিজ্য বাধা কমানো, শুল্কের হার হ্রাস এবং বাণিজ্যিক ব্যবস্থা সহজ করা সার্কের সদস্য দেশগুলোর বাণিজ্য ত্বরান্বিত করার লক্ষ্য।

 সন্ত্রাসবাদ হচ্ছে সার্কের অধিকাংশ সদস্য দেশের সম্মুখীন কঠোর চ্যালেঞ্জ। সন্ত্রাসবাদ দক্ষিণ এশিয়ার স্থিতিশীলতা ও উন্নয়নের ওপর গুরুতর হুমকি সৃষ্টি করেছে। ভারত, পাকিস্তান, বাংলাদেশ, শ্রীলংকা, আফগানিস্তান বলতে গেলে প্রায় সবাই সন্ত্রাস কবলিত। কিভাবে আরো ফলপ্রসূভাবে সন্ত্রাস দমন করা যায়, এটি হচ্ছে এবারের শীর্ষ সম্মেলনের আরেকটি গুরুত্বপুর্ণ আলোচ্য বিষয়। ভারতের পররাষ্ট্র সচিব শিভশংকর মেনন বলেছেন, সার্কের বিভিন্ন সদস্য দেশের নেতৃবৃন্দগণ শীর্ষ সম্মেলনে আইন ক্ষেত্রের সহযোগিতা জোরদার করা এবং সন্ত্রাসীকে বহিঃদেশের কাছে সমর্পণসহ নানা বিষয় নিয়ে আলোচনা করবেন। যাতে বর্তমান সন্ত্রাস দমন ব্যবস্থাকে আরো উন্নত করা সম্ভব হয়।

 তা ছাড়া, এবার চীন, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, যুক্তরাষ্ট্র ও ই.ইউ পর্যবেক্ষক হিসেবে শীর্ষ সম্মেলনে অংশ নিলে সার্ক ও বহিঃবিশ্বের যোগাযোগ ও বিনিময় ব্যবস্থা জোরদার হবে। এ থেকে প্রমাণিত হয়েছে যে, দক্ষিণ এশিয় অঞ্চল আন্তর্জাতিক মঞ্চে দিনে দিনে আরো উন্মুক্ত, আত্মপ্রত্যয় এবং গুরুত্ব নিয়ে আবির্ভূত হচ্ছে।