v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2007-03-29 19:05:40    
আরব লীগের শীর্ষ সম্মেলনের প্রতিশ্রুতিঃ পররাষ্ট্র প্রচেষ্টার মাধ্যমে আঞ্চলিক সংঘর্ষ সমাধান হবে

cri

 দু'দিন ব্যাপী ১৯তম আরব লীগের শীর্ষ সম্মেলন ২৮ মার্চ সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে শুরু হয়েছে। অংশগ্রহণকারী আরব দেশগুলোর নেতৃবৃন্দগণ কূটনৈতিক প্রচেষ্টার মাধ্যমে মধ্যপ্রাচ্য অঞ্চলের সংঘর্ষ সমাধানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

 আরব লীগের ২২টি সদস্য দেশের রাষ্ট্র প্রধান , সরকার প্রধান বা তাঁদের প্রতিনিধি, জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি-মুন , ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্র ও নিরাপত্তা নীতি বিষয়ক উর্ধ্বতন প্রতিনিধি জাভিয়ের সোলানাসহ বিশ্বের অনেক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি এ অধিবেশনে উপস্থিত ছিলেন। এবারের শীর্ষ সম্মেলনের প্রধান আলোচ্য বিষয়ের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে মধ্য প্রাচ্যের শান্তি প্রক্রিয়া , ফিলিস্তিন ও ইস্রাইলের সংঘর্ষ, ইরাক পরিস্থিতি, লেবাননের রাজনৈতিক সংকট এবং সুদানের দারফুর সমস্যা। অংশগ্রহণকারীরা আশা করেন, তারা মতভেদকে অতিক্রম করে মতৈক্য অন্বেষণ করবে এবং অভিন্ন অবস্থান পৌঁছাবে, যৌথভাবে মধ্য প্রাচ্য অঞ্চলের নিরাপত্তার হুমকি ও চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করবে।

 মধ্য প্রাচ্যের শান্তি প্রক্রিয়া সম্পর্কে আরব দেশগুলোর নেতৃবৃন্দগণ সে দিন একটি সিদ্ধান্ত অনুমোদন করেছেন। সিদ্ধান্তে ২০০২ সালে লেবাননের রাজধানী বৈরুতে অনুষ্ঠিত আরব লীগের শীর্ষ সম্মেলনে গৃহীত "আরব শান্তি প্রস্তাবের" সংশ্লিষ্ট প্রতিশ্রুতিগুলো আরেকবার স্বীকার করে নেয়া হয়েছে। সিদ্ধান্তে ইস্রাইল সরকার ও জনগণের উদ্দেশ্যে এই প্রস্তাব গ্রহণ করা, সুযোগকে কাজে লাগানো, সার্বিক ও আন্তরিকভাবে প্রত্যক্ষ আলোচনা আবার শুরু করার আহ্বান জানানো হয়েছে। সম্মেলনে বেশ কয়েকটি কর্ম গ্রুপ প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। যাতে পৃথক পৃথকভাবে জাতিসংঘের মহাসচিব , জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ, যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, রাশিয়া ও জাতিসংঘকে নিয়ে গঠিত "মধ্যপ্রাচ্য সমস্যার সংশ্লিষ্ট চার পক্ষ" এবং মধ্যপ্রাচ্য সমস্যা সম্পর্কিত বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ বজায় রাখা যায় এবং শান্তি আলোচনা পুনর্বার শুরু করা যায়।

 এর আগে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভাষণদানকালে জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি-মুন "আরব শান্তি প্রস্তাবের" গভীর মূল্যায়ন করেছেন। তিনি বলেছেন, এই প্রস্তাব হচ্ছে মধ্য প্রাচ্য শান্তি প্রক্রিয়া স্তম্ভের অন্যতম। এ থেকে বুঝা যায় যে, আরব দেশগুলো মধ্যপ্রাচ্য অঞ্চলের শান্তি ও স্থিতিশীলতা অন্বেষণ করছে। আরব লীগের মহাসচিব আমর মুসা বলেছেন, "আরব শান্তি প্রস্তাবের" উদ্দেশ্য হচ্ছে মধ্যপ্রাচ্য শান্তি প্রক্রিয়া পুনরায় শুরু করা। এই প্রস্তাবটি আর কোন সংশোধনের প্রয়োজন নেই। ইস্রাইলের সার্বিকভাবে তা গ্রহণ করা উচিত।

 ফিলিস্তিন ও ইস্রাইল সমস্যা প্রসঙ্গে আরব দেশগুলোর নেতৃবৃন্দগণ যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ফিলিস্তিনী জনগণের ওপর আরোপ করা অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক শাস্তি অবসানের আহ্বান জানিয়েছেন। সম্মেলনের স্বাগতিক দেশ সৌদি আরবের রাজা আব্দুল্লাহ সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বলেছেন, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ফিলিস্তিনী জনগণের ওপর চাপিয়ে দেয়া অন্যায় অবরোধ তুলে নেয়া উচিত। কারণ কেবল মাত্র দমন ও বাধ্যবাধকতাহীন মুক্ত পরিবেশেই মধ্যপ্রাচ্য শান্তি প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করা যায়। ফিলিস্তিনের প্রধানমন্ত্রী ইসমাইল হানিয়া আরব লীগের শীর্ষ সম্মেলনের সবার প্রতি ফিলিস্তিনের শরণার্থীদের প্রত্যাগমন অধিকার সমস্যার ব্যাপারে ইস্রাইলের সঙ্গে আপোষ না করার অনুরোধ জানিয়েছেন।

 ইরাক পরিস্থিতি সম্পর্কে আরব দেশগুলোর নেতৃবৃন্দগণ বর্তমান ইরাকের সংহিস সংঘর্ষ দিনে দিনে তীব্রতর অবস্থা সৃষ্টি হওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তাঁরা মনে করেন, ইরাকের সুন্নি ও শিয়া সম্প্রদায়ের মধ্যকার সংহিস তত্পরতা উপসাগরীয় অঞ্চলের শান্তি ও স্থিতিশীলতার ওপর গুরুতর হুমকি সৃষ্টি করেছে। সৌদি আরবের রাজা আব্দুল্লাহ উল্লেখ করেছেন, বিদেশীদের বেআইনী দখল এবং ধর্মীয় ঘৃণা তীব্রতর হওয়ায় এখন ইরাকে রক্তের নদী বয়ে যাচ্ছে, সেখানকার পরিস্থিতি গৃহযুদ্ধের দিকে যাচ্ছে। সম্মেলনে আরব দেশগুলোর নেতৃবৃন্দ ইরাকের সংবিধান সংশোধন করা এবং সুন্নি সম্প্রদায়কে আরো বেশি রাজনৈতিক ক্ষমতা দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

 আরব লীগের শীর্ষ সম্মেলনের প্রথম দিনের অধিবেশন দেখে বুঝা যায় যে, মধ্যপ্রাচ্যের বর্তমান পরিস্থিতি অত্যন্ত জটিল অবস্থায় থাকায় আরব দেশগুলোর নেতৃবৃন্দ সংহতি জোরদার করা, মতভেদ অতিক্রম করা, "আরব শান্তি প্রস্তাবের" ভিত্তিতে মধ্যপ্রাচ্যের শান্তি প্রক্রিয়া আবার শুরু করা, কূটনৈতিক প্রচেষ্টার মাধ্যমে আরব দেশগুলোর সঙ্গে ইস্রাইলের সংঘর্ষ নিষ্পত্তি করার দৃঢ়প্রতিজ্ঞা ব্যক্ত করেছেন। যাতে মধ্যপ্রাচ্য অঞ্চলে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব শান্তি ও স্থিতিশীলতা বাস্তবায়ন করা যায়।