v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2007-03-28 14:33:35    
দরিদ্র্য গ্রামে বিদেশি শিক্ষকের সুখী জীবন

cri
    ১৯৯৪ সালে একজন মার্কিন যুবক চীনে এসেছেন । চীনে আসা অনেক বিদেশিদের মত তিনিও শিক্ষকের চাকরি বাছাই করেছেন । তবে সেসব বিদেশিদের সঙ্গে তার পার্থক্যও আছে । তা হল ২০০০ সাল থেকে তিনি চীনের শিক্ষাদানের পরিবেশ নিয়ে সবচেয়ে দরিদ্র্য অঞ্চলের অন্যতম --চীনের কানসু প্রদেশের তুং সিয়াং জেলায় শিক্ষাদান করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন । এ মার্কিন যুবক হলেন ডেভিড ।

    ইতোমধ্যেই তার এখানে সাত বছর হয়ে গেছে । অনেকেই মনে করে এত দরিদ্র্য পরিবেশে ডেভিড বেশি দিন চীনে থাকতে পারবেন না । তবে ডেভিড চীন ত্যাগ করেন নি । তা ছাড়া চীনেও একটি পরিবার গঠন করেছেন ।

    সংবাদদাতাকে ডেভিড বলেন , ২০০০ সাল থেকে ২০০৩ সাল পর্যন্ত তিনি স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে তুং সিয়াং জেলায় এসে শিক্ষাদান শুরু করেছেন । ২০০৩ সাল থেকে তিনি কানসু প্রদেশের তুং সিয়াং জেলার শিক্ষা ব্যুরোয় শিক্ষা উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করেন । তিনি স্থানীয় সরকার ও স্কুলের প্রাথমিক স্কুল নির্মাণ ও শিক্ষকের প্রশিক্ষণ কাজে সাহায্য করেন । বর্তমানে তাঁরা গ্রামাঞ্চলে মোট ৮টি প্রাথমিক স্কুল স্থাপন করেছেন । বর্তমানে তিনি আর তাঁর স্ত্রী শিক্ষকের জন্য গঠিত একটি প্রশিক্ষণ ক্লাসের শিক্ষক হিসেবে কাজ করছেন ।

    তুং সিয়াং খুব দরিদ্র্য একটি জায়গা । ডেভিড ৮টি প্রাথমিক স্কুল পরিচালনা করেন । তবে এ ৮টি স্কুল গ্রামে অবস্থিত । ডেভিড এখন তুং সিয়াং রাজ্যে কাজ করেন । তাই প্রত্যেক বার গ্রামে যাওয়া অনেক অসুবিধা এবং প্রতিদিন তিনি গ্রামে যেতে পারেন না । মাঝে মাঝে তুং সিয়ায় বিদ্যুত্ অথবা পানি বন্ধ যায় । তবে ডেভিড মনে করেন , তুং সিয়াং-এর লোকজন এখানে শান্তিপূর্ণভাবে জীবনজাপন করতে পারে , তিনিও এখানকার জীবনের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিয়েছেন । ডেভিড বলেন , খাবার ক্ষেত্রে সমস্যা হয় না । যে কোনো খাবার খেলে , খিদে না লাগলে , পুষ্টি থাকলে সবই চলে । মাঝে মাঝে আমার স্ত্রী পশ্চিমা দেশের খাবার রান্না করেন । তবে যখন আমরা যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে যাই , তখন আমরা ভাবি তুং সিয়াংয়ের খাবার খেতে পারলে কত ভালো হতো ।

    এখন ডেভিডের যুক্তরাষ্ট্রের আতীয়স্বজনের সঙ্গে যোগাযোগের প্রধান উপায় হল চিঠি । তুং সিয়াং থেকে একটি চিঠি পাঠিয়ে দিলে দু'সপ্তাহ পর যুক্তরাষ্ট্রের আতীয়স্বজন তা পাবেন । সংবাদদাতাদের সঙ্গে সাক্ষাত্কারের আগে ডেভিড সবেমাত্রই তার বড় ভাইকে এক চিঠি লিখেছেন । হয়তো অনেক লোক মনে করে এভাবে অনেক অসুবিধা । তবে এখন ডেভিড সত্যিই এ রকম যোগাযোগের উপায় পছন্দ করেন । যদি কেউ তাকে ই-মেইল পাঠায় , তাহলে ডেভিডকে নাট কেফিতে যেতে হবে , হয়তো অনেক দিন পর তা দেখতে পাবেন , যদি ডেভিড গ্রামে থাকেন , তাহলে তার মোবাইলফোনের সিগনালও ভালো না । মাঝে মাঝে টেলিফোনে পাওয়া যায় না । তাই এখন ডেভিড মনে করেন পোস্ট অফিস সবচেয়ে ভালো বাছাই ।

    ডেভিড কখনই চীন ত্যাগ করার কথা চিন্তা করেন নি । তিনি ইতোমধ্যেই চীনে ১৩ বছর পার করে দিয়েছেন । আগে কিছু স্কুলের প্রধানরা তাঁকে বড় শহরে গিয়ে কাজ করার আমন্ত্রণ ও সুযোগ দেন । তাঁরা ডেভিডকে বলেন , তোমার বয়স বাড়ছে । এখন ভবিষ্যতের জন্য কিছু পরিকল্পনা করতে হবে । আরো ভালো জীবনজাপন করতে হবে । তবে ডেভিড আর তাঁর স্ত্রী এভাবে মনে করেন না । তাঁরা তুং সিয়াং-এ থাকতে পছন্দ করেন । ডেভিড বলেন , আমার স্বাস্থ্য এখনো ভালো , আমার স্ত্রী আমার কাজ সমর্থন করেন , আমার এত বেশি ভালো ছাত্রছাত্রী আছে । এসব আমার এখানে কাজ করার প্রধান কারণ ।

    ডেভিড ও তাঁর স্ত্রী তুং সিয়াংয়ের জীবনযাপনে সন্তুষ্ট। তিনি বলেন , হয়তো ভবিষ্যতে আমাদের নিজের শিশু হবে । তবে আমরা এর জন্য তুং সিয়াং ত্যাগ করবো না । যদিও আমাদের শিশু তুং সিয়াংয়ে বড় হবে । আমরাও এর জন্য খুশি । আমরা বিশ্বাস করি আমাদের শিশু অন্যান্য শিশুদের মতই সুখী ও স্বাস্থ্যসম্মতভাবে বড় হবে ।

    সাক্ষাত্কার শেষে ডেভিড বলেন , যদিও প্রত্যেকেই ধনী জীবনজাপন করতে চায় , কেউ অন্যের জন্য অবদান রাখে না , তাহলে বিশ্বের অধিকাংশ লোক আরামদায়ক ও সুখী জীবন উপভোগ করতে পারবে না ।