২৫ মার্চ ই ইউ প্রতিষ্ঠার নিদর্শন হিসেবে " রোম চুক্তি" স্বাক্ষরিত হওয়ার ৫০তম বার্ষিকী । এ দিন ই ইউর সকল সদস্য দেশগুলোর শীর্ষ নেতৃবৃন্দরা ই ইউর বর্তমান পালাক্রমিক চেয়ারম্যান দেশ জার্মানির রাজধানী বার্লিনে মিলিত হয়ে " বার্লিন ঘোষণা" প্রকাশ করেছেন । তাঁরা ব্যক্ত করেছেন যে , ২০০৯ সালে ইউরোপ সংসদ নির্বাচনের আগে ই ইউর সাংবিধানিক সংকট নিরসন করবে । এ দিন বার্লিনে খোলামাঠে সঙ্গীতানুষ্ঠান ও আতশবাজি পোড়ানো সহ ধারাবাহিক উদযাপনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে ।
৫০ বছর আগের ২৫ মার্চফ্রান্স, ফেডারেল জার্মানি ও ইতালিসহ ৬টি ইউরোপীয়দেশ রোমে " ই ইউ অর্থনৈতিক গোষ্ঠীর চুক্তিএবং ইউরোপীয়আণবিক চুক্তি" স্বাক্ষর করায় এ চুক্তিকে রোম চুক্তি বলা হয় । চুক্তিটি ই ইউর উন্নয়নের জন্য মজবুত ভিত্তি স্থাপন করেছে । ৫০ বছর পর ই ইউ বাড়তে বাড়তে সে সময়কালের ৬টি সদস্য দেশ থেকে আজকের ২৭টিতে সম্প্রসারিত হয়েছে এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের এক গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক অর্থনৈতিক শক্তিতে পরিণত হয়েছে । ২৫মার্চ ই ইউর ২৭টি সদস্য দেশের রাষ্ট্রপ্রধানরা বার্লিন শহরে ই ইউর ৫০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীউদযাপনী অনুষ্ঠান ও " বার্লিন ঘোষণা"র স্বাক্ষরঅনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন । মহত ও গম্ভীর " ওদে টু জোই" সঙ্গীতের তালেতালে ই ইউর পালাক্রমিক চেয়ারম্যান দেশ জার্মানির প্রধানমন্ত্রী এঞ্জেলামার্কেল, ই ইউ কমিটির চেয়ারম্যান জোসে বারোসো, ইউরোপীয় সংসদের স্পীকার হান্স পোটারিং " বার্লিন ঘোষণায়" স্বাক্ষর করেছেন । বারোসো স্বাক্ষরঅনুষ্ঠানে ভাষণ দিয়েছেন । তিনি বলেছেন , বার্লিনের একীকরণ হচ্ছেনতুন ইউরোপের একটি নিদর্শন । আমরা ২৭টি সদস্য দেশ আজ বার্লিনে যে মিলিত হয়েছে এবং এক সঙ্গে উদযাপনী অনুষ্ঠান পালন করেছি তার বাস্তব ঘটনা একটি ঘোষণার মতো বিশ্বের কাছে একটি ঐক্য ও স্বাধীন ইউরোপকেই দেখানো হচ্ছে। ২০ বছর আগে এটা সম্ভব হত না ।
জার্মানীর প্রধানমন্ত্রী মার্কেলউদযাপনী অনুষ্ঠানে ভাষণ দিয়েছেন । তিনি ই ইউর সদস্য দেশগুলোকে জার্মানিরউত্থাপিতব্য ই ইউর রোড ম্যাপ পরিকল্পনা সমর্থন করার আহবান জানিয়েছেন ।
তিনি বলেছেন , আমি আশা করি , আজ আমরা পুনরায় অনুভব করতে পারছি যে , ইউরোপীয়ান হিসেবে আমরা পরস্পরের সঙ্গেসম্পর্কি ত ।আমরা ইউরোপের ইতিহাস থেকে এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক শিক্ষা পেয়েছি যে, ইউরোপ একটি পূর্ণাঙ্গ গোষ্ঠী হিসেবে তত্পরতা চালালেই এবং একটি কন্ঠে কথা বললেই কেবল ইউরোপ শক্তিশালী হতে পারবে । বিশেষ করে দিন দিন ছোট হয়ে যাওয়ার আজকের এই দুনিয়া-তে । ২৬ মার্চ জার্মানী সরকার ব্রান্ডেনবার্গের দ্বারের সামনে এক বিরাটাকারের সঙ্গীতানুষ্ঠান ও আতশবাজি পোড়ানোর আয়োজন করেছে । দুজন দর্শক ই ইউ সম্পর্কে তাদের মতামত ব্যক্ত করে বলেছেন , ই ইউ প্রতিষ্ঠার পর আমি গাড়ি চালিয়ে সুইডেন থেকে ক্রোয়েশিয়ায় যেতে কোনো সীমান্তেযাতায়াত সংক্রান্ত পরীক্ষা লাগবে না । আমি ই ইউর যে কোনো একটি জায়গায় ভ্রমণ করতে পারি । আমাদের অভিন্ন মুদ্রা ব্যবস্থা রয়েছে । এখন আমাদের শুধু একটি অভিন্ন ভাষার অভাব ।
জার্মানীর সঙ্গীত শিল্পীলুতভিস ভ্যান বেথোভেনের নবম সিনফোনি থেকে বেছে নেয়া " ওদে টু জোই"তে মানবজাতির মৈত্রীরপ্রশংসা রয়েছে বলে তা ই ইউর লীগ সঙ্গীত হিসেবে নির্বাচিত হয়েছে । জার্মানির প্রধানমন্ত্রী মার্কেলতার ভাষণে বলেছেন , ইতিহাসের দিক থেকে দেখতে গেলে ইউরোপের বিভিন্ন জাতি পরস্পরের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কিত । তাই ভাবিষ্যতে ইউরোপকে একটি সংযুক্ত গোষ্ঠী হিসেবে মিলিতভাবে তত্পরতা চালানোর প্রচেষ্টা চালাতে হবে ।
|