আফগানিস্তানের জাতীয় পতাকা
প্রকৃতি ও ভূগোলঃ আয়তন ৬৫২৩০০ বর্গকিলোমিটার। পশ্চিম এশিয়া, দক্ষিণ এশিয়া ও মধ্য এশিয়ার সংযোগস্থলে অবস্থিত, ভৌগলিক অবস্থান গুরুত্বপূর্ণ। উত্তরে তুর্কমেনিস্তান, উজবেকিস্তান ও তাজিকস্তানের সঙ্গে সংলগ্ন, উত্তর-পূর্বের প্রসারিত দীর্ঘ সরু অঞ্চল চীনের সঙ্গে সংলগ্ন, পূর্বে ও দক্ষিণ-পূর্বে পাকিস্তানের সঙ্গে সংলগ্ন, পশ্চিমে ইরানের সঙ্গে সংলগ্ন। আফগানিস্তানের ভূখন্ডে পাহাড় বেশি, মালভূমি ও পাহাড়ী অঞ্চলের আয়তন দেশের আয়তনের ৮০ শতাংশ। সমুদ্র-সমতল থেকে গড়পড়তা উচ্চতা ১০০০ মিটার। দেশের বৃহত্তম হিন্দুকুশ পর্বত মালা উত্তর-পূর্ব দিক থেকে দক্ষিণ-পশ্চিম দিক পর্যন্ত প্রসারিত। মহাদেশীয় আবহাওয়ার দরুন দেশের আবহাওয়া শুষ্ক এবং বৃষ্টিকম, বার্ষিক ও দৈনিক তাপমাত্রা পার্থক্য স্পষ্ট। ঋতুর তাপমাত্রার পার্থক্য ও দিনের বিভিন্ন সময়ের তাপমাত্রার পার্থক্য বেশী, শীতকালে প্রচন্ড ঠান্ডা, গ্রীষ্মকালে অত্যন্ত গরম।
প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাই
লোকসংখ্যাঃ ২ কোটি৭৭ লক্ষ৫ হাজার (২০০২ সালের জুলাই মাসে)। পাশতো জাতি ৪০ শতাংশ, তাজিকি ২৫ শতাংশ, তাছাড়া আরো আছে উজবেক, হাজারা, তুর্কমেন, বেলুচি ও নুরিস্তান ইত্যাদি বিশটিরও বেশী সংখ্যালঘু জাতি। রাষ্ট্রীয় ভাষা হচ্ছে পাশতো ও পার্সী। অন্যান্য আঞ্চলিক ভাষা হচ্ছে উজবেক, বেলুচি ও তুর্কী ইত্যাদি। ৯৮ শতাংশেরও বেশী অধিবাসী ইসলাম ধর্মে বিশ্বাসী, এর মধ্যে ৯০ শতাংশ সুন্নি সম্প্রদায়ী, বাকিরা শিয়া সম্প্রদায়ী।
রাজধানীঃ কাবুল, লোকসংখ্যা প্রায় ২৩ লক্ষ ৫০ হাজার (২০০৩ সাল)। আবহাওয়া নাতিশীতোষ্ণ, চারটি ঋতু স্পষ্ট, সারা বছরের গড়পড়তা তাপমাত্রা ১৩ ডিগ্রী সেন্টিগ্রেডের মতো।
রাজনীতিঃ ২০০৪ সালের জানুয়ারী মাসে, আফগানিস্তানের লোয়া জির্গা সম্মেলনে নতুন সংবিধান গৃহীত হয়। নতুন সংবিধান অনুযায়ী, আফগানিস্তানে প্রেসিডেন্ট প্রজাতন্ত্র ব্যবস্থা প্রবর্তিত হয়। ইসলাম ধর্ম আফগানিস্তানের রাষ্ট্রীয় ধর্ম, সৈন্যবাহিবীর রাষ্ট্রায়ন, নারী-পুরুষ সমতা, বিভিন্ন জাতির সমতা, রাষ্ট্রীয় ঐক্য ইত্যাদি দেশের রাজনৈতিক ও সামাজিক জীবনের মৌলিক নীতি হিসেবে নতুন সংবিধানে লিপিবদ্ধ করা হয়।
অর্থনীতিঃ আফগানিস্তান হচ্ছে একটি পশ্চাত্পদ কৃষি ও পশুপালন শিল্প-প্রধান দেশ। ১৯৭১ সালে জাতিসংঘ আফগানিস্তানকে বিশ্বের স্বল্পোন্নত দেশগুলোর অন্যতম বলে ধর্য করে। আফগানিস্তান খনিজ সম্পদে বেশ সমৃদ্ধ, কিন্তু এসব খনিজ-সম্পদ পুরোপুরি উত্তোলন করা হয় নি।আফগানিস্তানে সম্ভবতঃ পৃথিবীর সবচেয়ে সমৃদ্ধ তাম্রসম্পদ মজুদ আছে, ৫ম মজুদ আছে পৃথিবীর বৃহত্তম লৌহ আকরিক খনি এবং ৭.৩কোটি টন কয়লা। বহু বছরের যুদ্ধের কারণে আফগানিস্তানের শিল্পের ভিত্তি প্রায় বিধ্বস্ত হয়েছে। তার শিল্প প্রধানত হালকা শিল্প ও হস্তশিল্প। কৃষি ও পশুপালন শিল্প হচ্ছে আফগানিস্তানের অর্থনীতির মেরুদন্ড। প্রধান ফসল হচ্ছে গম, তুলা, বিট এবং বিভিন্ন ফল।বিশ বছরেরও বেশী সময়ের যুদ্ধের কারণে আফগানিস্তানের অর্থনীতি গুরুতর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, এককালে ৬০ লক্ষেরও বেশী আফগানিস্তানী বিদেশে নির্বাসিত হন। আফগানিস্তানের অন্তবর্তীকালীন সরকার গঠিত হওয়ার পর অনেক ব্যবস্থা নিয়ে দেশের অর্থনৈতিক পুনর্গঠনে অনুপ্রেরণা যুগিয়েছে। আফগানিস্তানের অর্থনীতি ক্রমাগত পুনরুদ্ধার হচ্ছে।
পররাষ্ট্রনীতিঃ আফগানিস্তান সরকার বরাবরই স্বাধীন, নিরপেক্ষ ও জোট নিরপেক্ষ নীতি অনুসরণ করে এসেছে, জোট-নিরপেক্ষ আদোলনের প্রতিষ্ঠাতা দেশগুলোর অন্যতম। আফগানিস্তানের অন্তবর্তীকালীন সরকার গঠিত হওয়ার পর, সক্রিয় পররাষ্ট্রনীতি অনুসরণ করে এসেছে, বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক স্থাপনের নীতিতে অবিচল আছে এবং আন্তর্জাতিক সমাজের সঙ্গে মিশে যাওয়ার প্রয়াস চালাচ্ছে।
আফগানিস্তানে চীনা দূতাবাস
চীনের সঙ্গে সম্পর্কঃ আফগানিস্তান ১৯৫৫ সালের ২০শে জানুয়ারী চীনের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করে। ১৯৭৯ সালের আগে দু'দেশ বরাবরই বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখেছে, দু'দেশের নেতারা অনেকবার সফর বিনিময় করেছেন। সোভিয়েত ইউনিয়ন আফগানিস্তান আক্রমনকালে চীন সরকার আফগানিস্তান সরকারকে স্বীকৃতি দেয় নি। ১৯৯২ সালে দু'দেশের সম্পর্ক স্বাভাবিক হয়। ২০০৫ সালের এপ্রিল মাসে আফগানিস্তানের ভাইস-প্রেসিডেন্ট হারিরি চীন সফর করেন।
|