চীনের রাজধানী লৌহ-ইস্পাত গোষ্ঠীর নতুন কারখানা পেইচিং থেকে দু শ' কিলোমিটার দূরে স্থানান্তরিত হবে । কারখানার নির্মান প্রকল্প সম্প্রতি আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়েছে । নতুন কারখানাটি ২০০৮ সালে চালু হবে । চীনের উন্নয়ন ও সংস্কার কমিটির একজন দায়িত্বশীল ব্যক্তি বলেছেন , নতুন রাজধানী লৌহ- ইসপাত কারখানার নির্মান চীনের লৌহ-ইসপাত শিল্পের কাঠামোর পুনর্বিন্যস তরান্বিত করবে এবং চীনের লৌহ-ইসপাত শিল্পের প্রতিদ্বন্দ্বিতার সামর্থ্য বাড়াবে ।
রাজধানী লৌহ-ইসপাত গোষ্ঠী চীনের বৃহত্তম ইসপাত কারখানাগুলোর অন্যতম । পুরনো রাজধানী লৌহ-ইসপাত কারখানা পেইচিংয়ের পশ্চিম উপকন্ঠে অবস্থিত । চীনের শিল্পের কাঠামোর পুনর্বিন্যাস ও পরিবহনের সুবিধার জন্য চীন সরকার এই ইসপাত কারখানাকে হোপেই প্রদেশের ছাওপেইতিয়েন দ্বীপে স্থানান্তরিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে । হোপেই প্রদেশের ছাওফেইতিয়েন দ্বীপ সমুদ্র তীরে অবস্থিত বলে কারখানাটির কাঁচা মাল ও পন্য পরিবহনে সুবিধা হবে । চীনের জাতীয় উন্নয়ন ও সংস্কার কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান চান কো পাও বলেছেন , রাজধানী ইসপাত কারখানার স্থানান্তর চীনের ইসপাত শিল্পের কাঠামোর পুনবিন্যাসের এক গুরুত্বপূর্ণ ব্যবস্থা । তিনি বলেছেন , রাজধানী ইসপাত কারখানার স্থানান্তর পেইচিংয়ের পরিবেশ উন্নত করা , পশ্চাদপদ ইসপাত উত্পাদন সরঞ্জাম বাদ দেওয়া এবং চীনের ইসপাত শিল্পের প্রতিদ্বন্দ্বিতার সামর্থ্য বাড়ানোর জন্য তাত্পর্যপূর্ণ।
চান কো পাও আরো বলেছেন , চীনের লৌহ-ইসপাত শিল্পের অযৌক্তিক বিন্যাসের সমস্যা দীর্ঘ দিন থাকে । চীনে বেশ কয়েকটি বৃহত্ ও মাঝারী আকারের ইসপাত কারখানা বড় বা মাঝারী আকারের শহরে থাকে । রাজধানী ইসপাত কারখানার স্থানান্তর চীনের শহরাঞ্চলের ইসপাত কারখানার স্থানান্তর ও পুনর্বিন্যাসেঅভিজ্ঞতা সঞ্চয় করবে । এর পাশাপাশি হোপেই প্রদেশের ছাওফেইতিয়েনে নতুন ইসপাত ঘাঁটি স্থাপন পেইচিং ও হোপেই প্রদেশের অর্থনৈতিক কাঠামোর পুনর্বিন্যাস এবং পেইচিং ও থিয়েনচিং শহর এবং হোপেই প্রদেশসহ পো উপসাগরীয় অঞ্চলের অর্থনীতির উন্নয়ন তরান্বিত করবে ।
রাজধানী ইসপাত গোষ্ঠী ও হোপেই প্রদেশের থানশান লৌহ-ইসপাত গোষ্ঠীর যৌথ বিনিয়োগে রাজধানী ইসপাত গোষ্ঠীর নতুন ইসপাত কারখানা নির্মিত হবে । এ প্রকল্পে মোট ৬৭ বিলিয়ন ইউয়ান বিনিয়োজিত হবে । কারখানাটি চালু হওয়ার পর বার্ষিক ইসপাত , লোহা ও রোল্ড ইসপাতের উত্পাদন পরিমান হবে ২.৭ কোটি টন । রাজধানী লৌহ-ইসপাত গোষ্ঠীর পরিচালক মন্ডলির চেয়ারম্যান চু চি মিং বলেছেন , ছাও ফেই তিয়েনে নির্মিয়মান নতুন ইসপাত কারখানা একবিংশ শতাব্দীর বিশ্ব লৌহ-ইসপাত শিল্পের উন্নয়ন মানে পৌছবে । নতুন ইসপাত কারখানার পরিবেশ সংক্রান্ত মূল্যায়ন রির্পোর্টইতোমধ্যে চীনের জাতীয় পরিবেশ সংরক্ষণ ব্যুরোর অনুমোদন পেয়েছে । জানা গেছে , নতুন ইসপাত কারখানার বাজে আবর্জনার পুনর্ব্যবহারের হার ৯৯.৫ শতাংশে পৌঁছবে । পানির পুনর্ব্যবহারের হার ৯৭.৫ শতাংশ হবে এবং জ্বালানী শক্তির ক্ষয় ও উত্পাদন পরিবেশ উন্নত আন্তর্জাতিক মানে পৌছবে ।
চু চি মিং বলেছেন , নতুন রাজধানী ইসপাত কারখানার প্রযুক্তি , সরঞ্জাম ও উত্পাদন পন্যের গুনগত মান উন্নত, পরিচালনা ব্যবস্থা বিজ্ঞানসম্মত এবং উত্পাদন পরিবেশ পরিষ্কার পরিছন্ন । এই কারখানা একবিংশ শতাব্দীর লৌহ-ইসপাত শিল্পের উন্নত মানের প্রতিনিধিত্ব করতে পারে ।
ছাওফেইতিয়েন চীনের পো উপসাগরীয় অঞ্চলে অবস্থিত । সেখানের গভীর সমুদ্র বন্দরে ২.৫ লাখ টনী ও আরো বড় জাহাজ আসা-যাওয়া করতে পারে । কাজেই নতুন ইসপাত কারখানার কাঁচা মাল ও উত্পাদন পন্যের পরিবহন খরচ অনেক কম হবে ।
২০০৮ সালে পেইচিং ওলিম্পিক গেমস অনুষ্ঠানের আগে পেইচিংয়ের পুরনো ইসপাত কারখানার উত্পাদন পরিমান ৪০ লাখ টনে কমানো হবে । ২০১০ সালে পেইচিংয়ের পুরনো কারখানার উত্পাদন পুরোপুরি বন্ধ করা হবে । পুরনো কারখানা রাজধানী থেকে স্থানান্তরিত হওয়ার পর পুরনো কারখানা রাজধানী ইসপাত গোষ্ঠীর সদর দপ্তর ও বৈজ্ঞানিক গবেষণার ঘাঁটি হবে ।
|