কোরীয় উপদ্বীপের পরমাণু সমস্যা সংক্রান্ত ছ-পক্ষীয় বৈঠকের ষষ্ঠ দফা সম্মেলন ১৯ মার্চ পেইচিংয়ের তিয়াও ইয়ু থাই জাতীয় অভ্যর্থনা হটেলে শুরু হয়েছে। চীন ,উত্তর কোরিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান ও রাশিয়া ছয়টি দেশের প্রতিনিধিরা এবারের বৈঠকে অংশ নিয়েছেন।
১৩ ফেব্রুয়ারি আয়োজিত পঞ্চম দফা বৈঠকের তৃতীয় অধিবেশনে "যৌথ বিবৃতি বাস্তবায়নের পদক্ষেপ" গৃহীত হয়েছে। এরপর এক মাসের মধ্যে বিভিন্ন পক্ষ এই বিবৃতি বাস্তবায়নের জন্য অনেক ইতিবাচক পদক্ষেপ নিয়েছে এবং পাঁচটি কর্মগ্রুপের কাজও শুরু হয়েছে। এ সব পদক্ষেপ কি ছ-পক্ষীয় বৈঠকের জন্য ইতিবাচক প্রভাব আনতে পারবে? চীনের সামাজিক একাডেমির আন্তর্জাতিক বিষয়ক বিশেষজ্ঞ চিন শি ডে এই বিষয় নিয়ে তার মতামত প্রকাশ করেছেন। তিনি মনে করেন এবারের বৈঠকে সাফল্য পাওয়ার আশা রয়েছে।
পঞ্চম দফা বৈঠক শেষ হওয়ার এক মাসের মধ্যে বিভিন্ন পক্ষ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। মার্চ মাসের শুরু তে যুক্তরাষ্ট্র, উত্তর কোরিয়া এবং জাপান আলাদা আলাদাভাবে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেছে। অর্থনীতি ও জ্বালানি সম্পদ কর্মগ্রুপ সম্মেলনের প্রথম অধিবেশন এবং উত্তর-পূর্ব এশিয়া শান্তি ও নিরাপত্তা ব্যবস্থার প্রথম অধিবেশন আলাদাভাবে ১৫ ও ১৬ মার্চ অনুষ্ঠিত হয়। ১৭ মার্চ কোরীয় উপদ্বীপের পরমাণু অস্ত্রমুক্তকরণ সম্মেলন পেইচিংয়ে অনুষ্ঠিত হয়। চিন শি দে মনে করেন, বিভিন্ন পক্ষ যৌথ বিবৃতি বাস্তবায়নের জন্য চেষ্টা চালাচ্ছে। চিন শি দে বলেছেন:
"আমরা দেখেছি যে যৌথ বিবৃতি বাস্তবায়নের জন্য বিভিন্ন পক্ষ প্রচেস্টা চালাচ্ছে। যেমন উত্তর কোরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সম্পর্ক স্বাভাবিক হওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। তাছাড়া পাঁচটি কর্মগ্রুপের কাজ ৩০ দিনের মধ্যে সব শুরু হওয়ার পরিকল্পনা ছিল। এখন কর্মগ্রুপের কাজ পৃথক পৃথকভাবে শুরু হয়েছে। আমি মনে করি যৌথ বিবৃত বাস্তবায়নের জন্য সবাই চেষ্টা চালাচ্ছে।"
চিন শি দে'র মতে বিভিন্ন পক্ষ যৌথ বিবৃতি বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ায় ইতিবাচক সহযোগিতা করার প্রবণতা দেকাচ্ছে। উত্তর কোরিয়া সম্ভবত আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থার সঙ্গে সহযোগিতা চালিয়ে এই সংস্থার কাঠামোতে ফিরে আসবে এবং তাদের তত্ত্বাবধান গ্রহণ করতে রাজি হবে। আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থার মহাসচিব মোহমেদ এলবাড়াদেই উত্তর কোরিয়া সফর করেছেন।
১৭ মার্চ কোরীয় উপদ্বীপের পরমানু অস্ত্রমুক্তকরণ কর্মগ্রুপ সম্মেলনে উত্তর কোরিয়া বলেছে, তারা ইয়াংবিয়াংয়ের পারমাণবিক সংস্থা বন্ধ করতে প্রস্তুতি নিচ্ছে। যদি সম্ভব হয় উত্তর কোরিয়া তাদের পারমাণবিক সরঞ্জামগুলোর তালিকা ঘোষণা করবে এবং অস্ত্র তৈরীর সামর্থ্য দূরীকরণের ব্যবস্থা নেবে। এ মতামত ছ-পক্ষীয় বৈঠকের জন্য একটি ইতিবাচক সংকেত। এ নিয়ে চিন শি দে বলেছেন:
"আমরা জানি যে ছ-পক্ষীয় বৈঠকের প্রক্রিয়া জটিল হলেও কিন্তু সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। এখন উত্তর কোরিয়া তাদের পারমাণবিক সরঞ্জামগুলোকে শুধু বন্ধ করবে না এবং সামর্থ্য দূরীকরণও করবে। এটা সবার আশা।"
সঙ্গে সঙ্গে তিনি মনে করেন কর্মগ্রুপের আলোচনা সুষ্ঠুভাবে চালানোও এবারের বৈঠক সফল হওয়ার একটি লক্ষণ। তিনি বলেছেন:
"৫টি কর্মগ্রুপ থাকলে ছ-পক্ষীয় বৈঠক আগের চেয়ে আরো নমনীয় হয়ে উঠবে। আলোচনার কয়েক দিনের মধ্যে অনেক সমস্যা সমাধানের জন্য যথেষ্ঠ সময় নেই। এখন পাঁচটি কর্মগ্রুপ থাকলে কাজগুলো সমাধানের বিষয়টি আরও কার্যকর হতে পারে। বৈঠক আয়োজনের আগে যদি সমস্যাগুলো নিয়ে আলোচনা করা হয় তাহলে বৈঠককালে সহজেই একমত হওয়া যাবে।"
চিন শি দে'র মতে বিভিন্ন দিক থেকে অনুমান করা যায়, চলমান বৈঠকে সম্ভবত বিরাট অগ্রগতি অর্জিত হবে।
1 2 3 4
|