v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2007-03-19 17:13:05    
দক্ষিণ পশ্চিম চীন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়

cri
    চীন হচ্ছে একটি বহু জাতিক দেশ। হান জাতি ছাড়া, আরো ৫৫টি সংখ্যালঘু জাতি আছে। দীর্ঘদিন ধরে সামাজিক,ইতিহাস ও প্রাকৃতিক অবস্থাসহ বিভিন্ন কারণে কিছু সংখ্যালঘু জাতি অধ্যুষিত এলাকার শিক্ষার মান ও স্থানীয় আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের চাহিদার মধ্যে কিছু পার্থক্য রয়েছে। এর জন্য গত কয়েক বছর চীন সরকার সংখ্যালঘু জাতির বাস্তব অবস্থা বিবেচনা করে বহু রকমের সংখ্যালঘু জাতির স্কুল গড়ে তুলেছে। বিশেষ করে প্রতিষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ব্যাপক প্রতিভা তৈরী করছে। আজকের অনুষ্ঠানে একটি বিখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয়---দক্ষিণ পশ্চিম চীন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচিতি আপনাদের কাছে ব্যাখ্যা করবো।

    দক্ষিণ পশ্চিম চীন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় দক্ষিণপশ্চিম চীনের সিছুয়ান প্রদেশের রাজধানী ছেংতু শহরে অবস্থিত। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপউপাচার্য জেংমিং আমাদের সংবাদদাতাকে বলেছেন, এই বিশ্ববিদ্যালয় ১৯৫১ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। এটি হচ্ছে নয়া চীন প্রতিষ্ঠার পর গড়ে তোলা প্রথম জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়। বর্তমানে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যায়নরত ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে ৫৬টি জাতির লোক আছে।

    যে সংখ্যালঘু জাতির লোকসংখ্যা খুবই নগণ্য, কোনো কোনো ছাত্রছাত্রী সেই জাতি থেকে এসেছে। একটি জাতির লোক সংখ্যা মাত্র কয়েক হাজার। শুধু একজন ছাত্র সাধারণ উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ভর্তি পরীক্ষায় যোগ দিয়েছে। সে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছে। তাছাড়া এখানে এক তাজিক জাতির ছাত্রী আছে। তাঁর বাড়ি থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে যেতে এক মাসেরও বেশি সময় লেগেছে।

    তিনি বলেছেন, দক্ষিণ পশ্চিম চীন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তোলার ৫০ বছরে বিভিন্ন ক্ষেত্রে তৈরী প্রতিভার সংখ্যা ৯০ হাজার। তাদের মধ্যে রয়েছেন নয়া চীনের তিব্বতী জাতির প্রথম ডক্টর ও ছিয়াং জাতির প্রথম ডক্টর । তাছাড়া ব্যাপক বিখ্যাত বিশেষজ্ঞ এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রের পন্ডিত এ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বেরিয়ে এসেছেন। তাঁরা চীনের সংখ্যালঘু জাতি অধ্যুষিত এলাকার নির্মাণ ও উন্নয়নের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন।

    চীনের সংখ্যালঘু জাতির ভাষা অনেক রকম। চাল-চলনও একই রকম নয়। ৫৬টি জাতির ছাত্রছাত্রীরা কিভাবে এক ক্যাম্পাসে মিলে থাকেন? তাঁরা কিভাবে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান করতে পারছে?

    ই জাতির বিদ্যা বিভাগের অধ্যক্ষ অধ্যাপক উনিতোছে বলেছেন, ই জাতির বিদ্যা শিক্ষাদানের প্রক্রিয়ায় "ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার জন্য ছোটখাটো মতপার্থক্য উপেক্ষা করার" মতাদর্শের ওপর গুরুত্ব দেয়। বর্তমানে এই বিভাগ চীনের ই জাতি ও হান জাতির দোভাষীদের তৈরী করা এবং ই জাতির বিদ্যা গবেষণার গুরুত্বপূর্ণ ঘাঁটিতে পরিণত হয়েছে।তিনি আরো বলেন,

    বিভিন্ন জাতির নিজেদের জাতীয় প্রথা ও নিজেদের সাংস্কৃতিক পটভূমি আছে। এখানে বিভিন্ন জাতির সংস্কৃতি,প্রথা ও ধর্মবিশ্বাস পুরোপুরি সম্মান পায়। এই পটভূমিতে বিভিন্ন সংখ্যালঘু জাতির বিদ্যার উন্নয়ন এবং সংখ্যালঘু জাতির প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণে বিশেষ প্রাধান্য রয়েছে।

    বিভিন্ন জাতির ছাত্রছাত্রীদের ক্যাম্পাসের জীবনের সঙ্গে খাপ খাওয়ানোর জন্য দক্ষিণ পশ্চিম চীন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় মনস্তত্ত্ব-সন্বন্ধীয় শিক্ষা কেন্দ্র গড়ে তুলেছে, যাতে নতুন ছাত্রছাত্রীদের মনস্তত্ত্ব-সন্বন্ধীয় পরামর্শ দেয়া যায়। এই কেন্দ্রের দায়িত্বশীল শিক্ষক বলেছেন, ছাত্রছাত্রীদের মনস্তত্ত্ব বিষয়ক কোন সমস্যা হলে এ কেন্দ্র তাদেরকে সময়োচিত সাহায্য দিতে পারে, যাতে ছাত্রছাত্রীরা নিজেদের মধ্যে সমঝোতা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের জীবনে প্রবেশ করার ক্ষেত্রে সাহায্য পায়।

    উত্তর পশ্চিম চীনের কানসু প্রদেশ থেকে আসা হো চিয়েন হচ্ছে তৃতীয় বর্ষে অধ্যায়রত তিব্বতী জাতির একজন তরুণ। তিনি দক্ষিণ পশ্চিম চীন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিদেশী ভাষা বিভাগে লেখাপড়া করেন। তিনি আমাদের সংবাদদাতাকে বলেছেন, তিনি এই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতি গভীর ভাবানুভূতি পোষণ করেন। তিনি বলেছন,

    এই বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির পর আমি অনুভব করেছি যে, বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক পরিবেশ খুব ভালো। আমি বিভিন্ন জাতির ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে মেলামেশা করেছি। তারা আমার জ্ঞান উন্নয়নের ক্ষেত্রে ব্যাপক সাহায্য দিয়েছে। আমি মনিটার নির্বাচনে অংশ নিয়েছি এবং কয়েকটি কার্যক্রম সংগঠন করেছি। অনেক ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে আমার মত বিনিময় আমাকে আস্থাবান করেছে।

    দক্ষিণ পশ্চিম চীন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপউপাচার্য চেং মিং বলেছেন, দক্ষিণ পশ্চিম চীন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় বিভিন্ন জাতির ব্যাপক ছাত্রছাত্রীদের শিক্ষাদান করেছে। পরবর্তীতে এই বিশ্ববিদ্যালয়কে এক নতুন আধুনিক জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে প্রতিষ্ঠা করবে।