চীনের সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা সংস্থা -- চীনের জাতীয় গণ কংগ্রেসের বার্ষিক অধিবেশন ১৬ মার্চ পেইচিংয়ে শেষ হয়েছে । অধিবেশন শেষে ওয়েন চিয়াপাও সংবাদ সম্মেলনে দেশীবিদেশী সাংবাদিকদের সাক্ষাত্ দিয়েছেন এবং গণ জীবন , দুর্নীতি দমন , সামরিক ব্যয়সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রেতাদের প্রশ্নগুলোর উত্তর দিয়েছেন । প্রধানমন্ত্রী ওযেন চিয়াপাও জোরদিয়ে বলেছেন , শান্তিপূর্ণ উন্নয়ন, বৈজ্ঞানিক উন্নয়ন এব সুষম উন্নয়নে অটল থাকলে আমরা অবশ্যই চীনকে একটি সমৃদ্ধশালী , গণতান্ত্রিক, সভ্য ও সুষম আধুনিক দেশে পরিণত করতে পারব ।
সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে প্রধানমন্ত্রী সরাসরি বর্তমান সরকারের গত ৪ বছরের কর্মকান্ডের সারসংকলন করেছেন । তিনি জোর দিয়ে বলেছেন, সরকারের কাজকর্ম গণ সেবকের মনোভাব নিয়ে সম্পন্ন করতে হবে । ভালভাবে গণ সেবক হওয়া ছাড়া সরকারী কর্মচারীদের কোনো ক্ষমতা নেই । তিনি বলেছেন , আমাদের যে সত্যতা বুঝতে হবে তা হল সরকারকে সব ক্ষমতা জনগণ দিয়েছেন । তাই সেই ক্ষমতা জনগণেরই ক্ষমতা । আমরা জনগণের জন্যইসব কাজ করছি। জনগণের উপর আমাদের নির্ভর করতে হয় । সব কিছু জনগণকে দান করতে হয় ।
প্রধানমন্ত্রী ওয়েন চিয়াপাও বলেছেন, গত ৪ বছরে বর্তমান সরকারের এক গুরুত্বপূর্ণ কাজ হল গণ জীবনকে গুরুত্ব দেয়া এবং এর সমস্যার সামধান করা । তিনি বলেছেন , গণ জীবনের সমস্যারসমাধান করার জন্য বিভিন্নব্যবস্থার নিশ্চয়তাবিধান দরকার । আমরা কৃষি কর মওকুফ করার আইন এবং বিনাখরচে ৯ বছরের বার্ধ্যতামূলক শিক্ষা দানের আইন প্রণয়ন করেছি । আমরা শহরাঞ্চল ও গ্রামাঞ্চলে নূন্যতম বীমার ব্যবস্থারব্যাপারে আইন প্রণয়ন করব । আমরা গ্রামাঞ্চল ও শহরাঞ্চলের চিকিত্সা সংস্কারের পরিকল্পনা তৈরী করছি এবং অবশেষে আইনও প্রণয়ন করা হবে । আইন থাকলে সরকারের রদবদল বা নেতৃবৃন্দের রদবদলের কারণে এর সহজ পরিবর্তন হবে না ।
দুর্নীতি দমন বর্তমান চীনের সমাজের বিভিন্ন স্তরের একটি সবচেয়ে লক্ষনীয় সমস্যা । সংশ্লিষ্ট সমস্যা সম্পর্কে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে প্রধানমন্ত্রী ওয়েন চিয়াপাও জোর দিয়ে বলেছেন , দুর্নীতির সঙ্গেজড়িত ব্যক্তি , তিনি যে কোনো ক্ষেত্রের লোক বা তার পদবি যত উচু হোক না কেন আইন অনুসারে তাকে বিচার করে শাস্তি দেয়া হবে ।
ওয়েন চিয়াপাও বলেছেন , দুর্নীতির উত্স নানা ধরণের । এর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণকারণ হল , ক্ষমতা অতি বেশী কেন্দ্রীভূত হওয়া এবং কোনো কার্যকর তত্ত্বাবধানব্যবস্থা না থাকা । সুতরাং সরকারের অবকাঠামোর সংস্কার ত্বরান্বিত করতে হবে , ক্ষমতার অতিরিক্ত কেন্দ্রিকতা কমিয়ে দিতে হবে এবং সরকারের ওপর জনগণের তত্ত্বাবধান জোরদার করতে হবে ।
চীনের উন্নয়ন ও শক্তিশালীহওয়ার পাশাপাশি চীনের সামরিক ব্যয় বরাবরই বিদেশের একটি মনোযোগের বিষয় ছিল । এ সম্পর্কে ওয়েন চিয়াপাও বলেছেন , বিশ্বে শুধু শিল্পোন্নত দেশ নয় এমনকি কিছু উন্নয়নশীল দেশগুলোর সামরিক ব্যয়ও চীনকে ছাড়িয়েছে । তিনি জোর দিয়ে বলেছেন , আমরা আন্তরিকভাবে শান্তিপূর্ণ উন্নয়নের পথে অটল থাকব । আমরা আত্মরক্ষার প্রতিরক্ষা নীতি অনুসরণ করছি । আমাদের সীমিত সামরিক শক্তি একেবারে মাতৃভূমির নিরাপত্তা , স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বেরজন্যই প্রণিত হয়েছে । এ ব্যাপারে আমাদের নীতি অতীব স্বচ্ছ।
১৩০ কোটি লোকসংখ্যাসম্পন্নএকটি উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে চীনের উন্নয়ন পরিবেশ সমস্যা আনতে পারবে কিনা সমস্যাটিও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের একটি মনোযোগী সমস্যা । এ সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী ওয়েন চিয়াপাও বলেছেন , ২০০৬ সাল থেকে ২০১০ সাল পর্যন্তআমাদের জ্বালানী সম্পদের ব্যয় ২০ শতাংশ কমবে । যদিও "কিয়োটো প্রটোকোলে" চীনের জন্য কোনো মানদন্ড নির্ধারিত করা হয়নি । তবুও চীন সরকার দায়িত্বশীল মনোভাব নিয়ে নিষ্ঠার সঙ্গে নিজের করণীয় আন্তর্জাতিক দায়িত্ব পালন করবে ।
|